রাজধানী ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনের (এইচআরসি) মিশন চালুর সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রাজপথে সরব হেফাজতে ইসলামসহ বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠন ও রাজনৈতিক দল। তবে জাতিসংঘের এই অফিস স্থাপন নিয়ে অনেকটা নিশ্চুপ দেশের অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি এবং তাদের দীর্ঘদিনের জোটসঙ্গী জামায়াতে ইসলামী। সব ইস্যুতে সরব থাকা এবি পার্টি এবং গণঅধিকার পরিষদও বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে তেমন প্রতিক্রিয়া দেখায়নি।
গত ২৯ জুন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এক সংবাদ সম্মেলনে প্রথম এইচআরসি মিশন চালুর বিষয়টি জানান। পরে ১০ জুলাই ঢাকায় মিশন স্থাপনসংক্রান্ত সমঝোতা স্মারকের খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় উপদেষ্টা পরিষদ। সরকারের প্রেস উইং থেকে বলা হয়, মানবাধিকারের সুরক্ষা ও বিকাশে সহায়তা করার লক্ষ্যে একটি মিশন খোলার জন্য জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের অফিস এবং বাংলাদেশ সরকার তিন বছর মেয়াদি সমঝোতা স্মারক সই করেছে।
গত বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন জানান, বাংলাদেশের স্বার্থেই ঢাকায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয় স্থাপন করা হচ্ছে। প্রয়োজনে ছয় মাসের নোটিশে সরকার এ কার্যালয় প্রত্যাহারও করতে পারবে। তবে উপদেষ্টা মনে করেন, এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে না।
তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘আমাদের স্বার্থকে সামনে রেখেই এই পদক্ষেপ নিয়েছি। জাতিসংঘ প্রস্তাব দেয়ার পর আমরা তৎক্ষণাৎ স্বাক্ষর করিনি। সময় নিয়ে বিশ্লেষণ করে তবেই চুক্তি করেছি। তবে বিশেষজ্ঞদের মতের প্রতি আমার পূর্ণ সম্মান রয়েছে।’
তবে জাতিসংঘের এই দপ্তর চালুর বিষয়ে ঘোর আপত্তি তুলেছে ইসলামপন্থি বিভিন্ন দল ও সংগঠন। এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে সরাসরি হস্তক্ষেপ ও সার্বভৌমত্বের ওপর হুমকি বলে মনে করে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। ১১ জুলাই বাদ জুমা জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে অফিস স্থাপনের প্রতিবাদ মিছিলও করে সংগঠনটি। এতে বক্তারা বলেন, স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্রে এ ধরনের কার্যালয় বসানো মূলত বিদেশি এজেন্ডা বাস্তবায়নের ঘৃণ্য প্রচেষ্টা। হেফাজতের পাশাপাশি চুক্তি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করে ইসলামী আন্দোলন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস এবং জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম।
কার্যালয় স্থাপনের সিদ্ধান্তে গভীর উদ্বেগ ও তীব্র আপত্তি প্রকাশ করে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের নেতারা বলেন, সরকারের একজন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এ সিদ্ধান্তকে ‘বাংলাদেশের স্বার্থে’ বলে ব্যাখ্যা দিলেও জাতির সামনে এই স্বার্থ স্পষ্ট নয়। বাংলাদেশ একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র। দেশের নিজস্ব সংবিধান, বিচার ব্যবস্থা ও মানবাধিকার কমিশন রয়েছে। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক প্রতিষ্ঠানের স্থায়ী উপস্থিতি গ্রহণযোগ্য নয়। এতে দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের সুযোগ তৈরি হবে, যা আমাদের সংস্কৃতি, ধর্মীয় মূল্যবোধ ও সামাজিক ঐক্যের ওপর প্রভাব ফেলবে।
সরকারের চুক্তির সমালোচনা করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা সারজিস আলমও। প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে সমঝোতা স্মারকের খবরটি শেয়ার করা হলে সেখানে তিনি কড়া ভাষায় মন্তব্য করেন। সারজিস লেখেন, ‘যেই কমিশন মধ্যপ্রাচ্যকে ধ্বংস হতে দিয়েছে, মুসলমানদের টার্গেট করে জঙ্গি ট্যাগ দিয়েছে, পশ্চিমাদের সাম্রাজ্যবাদী উদ্দেশ্যকে সার্ভ করেছে, যে কমিশন পুরো পৃথিবী কিংবা মানবতার না হয়ে কয়েকটি দেশ, গুটিকয়েক ব্যক্তি কিংবা কিছু গোষ্ঠীর দালাল হিসেবে কাজ করেছে, সেই তথাকথিত মানবাধিকার কমিশন দিয়ে আমরা কী করবো?’
এইচআরসির মিশন চালুর বিষয়ে বিএনপি স্পষ্ট করে কিছু না বললেও প্রশ্ন তুলেছেন অফিস স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়ে। দলের নেতারা বলছেন, এমন নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার অন্তর্বর্তী সরকারের নেই। এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা না করেই চুক্তি করা ন্যায়সংগত হয়নি।
বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স চ্যানেল 24 অনলাইনকে বলেন, এই বিষয়ে জনগণের নির্বাচিত সংসদ ও সরকার সিদ্ধান্ত নিতে পারে এবং সেটিই যুক্তিযুক্ত ছিল। এইরকম একটি স্পর্শকাতর বিষয়ে বর্তমান সরকার এককভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নেয়নি। মূলত সে কারণেই বিতর্ক এবং ধূম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচিত সরকার আসলে বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করতে পারে বা সময় বর্ধিতকরণের সময় আলোচনা করার সুযোগ থাকবে। বিষয়টা আমাদের কাছে উদ্বেগজনক।
দেশের অন্যতম ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বিষয়টি নিয়ে এখনই কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। দলটির কেন্দ্রীয় মিডিয়া ও প্রচার বিভাগের প্রধান এবং সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের চ্যানেল 24 অনলাইনকে বলেন, আমরা বিষয়টি নিয়ে এখনো খোঁজখবর নিচ্ছি। বিশ্বের যেসব দেশে এই ধরনের মিশন চালু আছে সেসব দেশের সুবিধা অসুবিধাগুলো নিয়ে জানার চেষ্টা করছি। সব ধরনের তথ্যউপাত্ত সংগ্রহের পর দলের পক্ষ থেকে অবস্থান জানানো হবে।
জামায়াতের এই নেতা বলেন, আমরা সব সময় দেশের সার্বভৌমত্ব এবং জাতীয় স্বার্থবিরোধী কাজের বিপক্ষে অবস্থান নেবো। পাশাপাশি দেশের সংস্কৃতি পরিপন্থি কোন কার্যক্রম পরিচালনার চেষ্টা করা হলে জামায়াত তার প্রতিক্রিয়া জানাবে।
বিষয়টি নিয়ে সতর্কতার সাথে স্বাগত জানিয়ে আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু চ্যানেল 24 অনলাইনকে বলেন, ইতোমধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার একটা বড় ভুল করেছে, সেটা হলো তারা অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা না করেই এইচআরসি অফিস স্থাপনের জন্য চুক্তি করেছে। ফলে যাদের বিষয়টি নিয়ে শঙ্কা ও উদ্বেগ আছে তারা ক্ষুব্ধ হয়েছে, এই ক্ষুব্ধতা খুবই যৌক্তিক। আমরা চাই জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের ঢাকা মিশন এখানে গুম, খুন, আইন বহির্ভূত নির্যাতন ইত্যাদি বিষয়ে মনোযোগ দেবে। এর বাইরে অন্যান্য স্পর্শকাতর ইস্যুগুলো বা যেসব বিষয়ে অংশীজনেরা কনসার্ন রেইজ করেছে সেগুলোর ব্যাপারে তারা সতর্কতা মেনে কাজ করবেন।
এ বিষয়ে গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রাশেদ খান চ্যানেল 24 অনলাইনকে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের মূল কাজ ছিল বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন। এসব বিষয়ে সরকার দৃশ্যমান কিছু করতে পারেনি। এগুলো বাদ রেখে তারা বন্দর, মানবিক করিডোর এবং মানবাধিকার কমিশনের অফিস স্থাপন নিয়ে ব্যস্ত। সংগত কারণেই এসব সিদ্ধান্ত নিয়ে সন্দেহ ও সংশয় তৈরি হওয়াটা স্বাভাবিক। সরকারের উচিত ছিল, সব দলের সঙ্গে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেয়া। সরকারের উচিত হবে অনুমতির বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা।
তবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনে করে সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে এমন কিছু ঘটনা ঘটতেও পারে, যা দেশের স্বার্থ এবং সার্বভৌমের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। দলটির মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ চ্যানেল 24 অনলাইনকে বলেন, এই ধরনের মিশন আমাদের প্রয়োজন নেই, আমাদের পক্ষ থেকে কেউ এই অফিস চায়নি বা দাবি করেনি। এখন অনেক কিছুর দোহাই দেয়া হলেও বাস্তবতা ভিন্ন।
তিনি বলেন, এমনও হতে পারে কোনো আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের কারণে কেউ ইসলামের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলো। এর প্রতিবাদে যখন ইসলামী দলগুলো প্রতিক্রিয়া দেখাবে, তখন এসব প্রতিক্রিয়াকে জঙ্গিবাদ আখ্যা দেয়া হতে পারে। অর্থাৎ ইসলাম বা মানবতার ওপর কোন আঘাত আসে, তখন বাংলাদেশের মুসলমানরা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে, এই প্রতিক্রিয়াকে তারা ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা দেয়। এসব কারণেরই বিষয়গুলো নিয়ে ঝুঁকি দেখা যায়। তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, ফিলিস্তিন, আফগানিস্তানসহ দেশে দেশে মুসলিম নির্যাতনের সময় তারা কী ভূমিকা পালন করেছে? বিষয়টি নিয়ে দলের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে বলেও জানান এই নেতা।
জাতিসংঘের এই অফিস স্থাপনার ঘোর বিরোধিতা করা অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ বলেছে, ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার কমিশনের অফিস খুলতে দেয়া হবে না।’ সংগঠনটির মতে, এর আগেও বিভিন্ন দেশি-বিদেশি সংস্থা বাংলাদেশের মুসলিম পারিবারিক আইন, ইসলামি শরিয়া ও ধর্মীয় মূল্যবোধের ওপর হস্তক্ষেপের চেষ্টা করেছে। নারী সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনেও একই চিত্র দেখা গেছে। এছাড়া, এলজিবিটি বা সমকামী ইস্যুটি জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের মানবাধিকার দর্শন ও নীতিমালার অন্তর্ভুক্ত।
সংগঠনটির যুগ্ম মহাসচিব মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী চ্যানেল 24 অনলাইনকে বলেন, যতগুলো দেশে এই অফিস আছে, কোনো দেশেই তাদের সফলতা নাই বরং তাদের মাধ্যমে মানুষ কিছু অপকর্মের লাইসেন্স পেয়ে থাকে। এই অফিস স্থাপনে তড়িঘড়ি দেখেই সন্দেহ তৈরি হয়েছে। এই সরকারের সঙ্গে পশ্চিমা দেশগুলোর সম্পর্ক ভালো দাবি করা হলেও বাস্তবে ভিন্ন, এই সরকার তাদের খুশি করতে চাচ্ছে। এই সুবিধা পেতে গিয়ে আরও ঝুঁকির মধ্যে চলে যাচ্ছে। এই মুহূর্তে এই ধরনের মিশনের কোনো প্রয়োজন নেই। তাই এমন সিদ্ধান্ত নেয়ারও গ্রহণযোগ্যতা নেই। প্রয়োজনে নির্বাচিত সরকার আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
ইতোমধ্যে শনিবার (২৬ জুলাই) প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন হেফাজতে ইসলামের নেতারা। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার ওই সাক্ষাতের কথা উল্লেখ করে মুফতি কাসেমী বলেন, প্রধান উপদেষ্টা আমাদের কথা আগ্রহ সহকারে শুনে আশ্বস্ত করেছেন, অন্যান্য দলের সঙ্গে আলোচনা করে একটি সুব্যবস্থা করবো, তাতে আপনারাও সন্তুষ্ট থাকবেন। এরপরেও বিষয়টি নিয়ে সরকার নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকে, তাহলে হেফাজতে ইসলাম কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে মিশন চালুর প্রক্রিয়া আটকে দেবে।
মানবাধিকার খবরের সহকারী সম্পাদক আবুবকর সিদ্দীক আদদাঈ চ্যানেল 24 অনলাইনকে বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশন অফিস (ওএইচসিএইচআর) এমন একটি সংস্থা যার মূল কাজ হলো বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার রক্ষা, এ সংক্রান্ত প্রচার ও বাস্তবায়নে সহায়তা করা। সংস্থাটির ওয়েবসাইট থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের প্রায় দুইশত দেশের মাঝে তাদের অফিস রয়েছে মাত্র ১৬টি দেশে। এই দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে– বুরকিনা ফাসো, কম্বোডিয়া, চাদ, কলম্বিয়া, গুয়াতেমালা, গিনি, হুন্ডুরাস, লাইবেরিয়া, মৌরিতানিয়া, মেক্সিকো, নাইজার, ফিলিস্তিন, সিরিয়া, সুদান, তিউনিশিয়া ও ইয়েমেন।
কিন্তু বাস্তবতায় এসব দেশগুলোতে বিশেষ করে ফিলিস্তিনে বছরের পর বছর নারী, শিশুসহ নিরীহ মানুষ নিগৃহীত হলেও এই অফিসের কার্যকরী কোন উদ্যোগ দৃশ্যমান নয় বরং তারা দন্তহীন বাঘের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। যে সংস্থাটির অন্য দেশেই সফলতার নজির নেই তা বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য কোন ভূমিকা রাখতে পারবে বলে মনে হয় না। তদুপরি বাংলাদেশ মুসলিম অধ্যুষিত হওয়ায় ইউরোপের কৃষ্টি- কালচারের সঙ্গে রয়েছে ঢের পার্থক্য। এছাড়া উল্লিখিত দেশগুলোর মত ভয়াল মানবাধিকার বিপর্যয় এখন পর্যন্ত না ঘটায় চলমান সংকট নিরসনে রাষ্ট্রীয়ভাবে রুলস অব ল’ এর যথাযথ প্রয়োগই যথেষ্ট। তাই বিষয়টি নিয়ে জনগণের মতামতের ভিত্তিতে সরকারের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত, তিনি যোগ করেন।
প্রসঙ্গত, ওএইচসিএইচআর বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার রক্ষা, এ সংক্রান্ত প্রচার ও বাস্তবায়নে সহায়তা করা এই দপ্তরটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির তথ্য সংগ্রহ করে, পর্যালোচনা করে এবং প্রতিবেদন তৈরির মাধ্যমে সবার সামনে তা তুলে ধরে। সেসব প্রতিবেদন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক বিভিন্ন সম্মেলনে তুলে ধরা হয়। এর মাধ্যমে সেসব দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি সম্পর্কে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ধারণা করতে পারে। সেই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে অনেক সময় উন্নত দেশগুলোর সম্পর্ক, বিনিয়োগ ও অনুদানের বিষয় নির্ভর করে। বিশেষ করে, সংঘাতপ্রবণ দেশগুলোয় ওএইচসিআর-এর এই অফিসগুলো ওইসব দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে। এরপর তারা তা বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদন তৈরি করে।
অনেক সময় কোনো দেশে কার্যালয় না থাকলেও যেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠে, সেখানে বিশেষজ্ঞ দল পাঠিয়ে তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে এই সংস্থাটি। এছাড়াও, মানবাধিকার সুরক্ষায় তারা সরকার, নাগরিক সমাজ, ভুক্তভোগী ও অন্যান্য অংশীজনের সঙ্গে কাজ করে। যদিও মানবাধিকার হাইকমিশনের প্রতিবেদন বা সুপারিশ কোনো দেশের জন্য পালন করা বাধ্যতামূলক নয়। কিন্তু অনেক সময় এসব প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে জাতিসংঘ ও উন্নত দেশগুলোর নীতিনির্ধারণে ভূমিকা রাখে। উৎস: চ্যানেল24