বাংলাদেশ পুলিশকে ‘পাকিস্তানি সেনা’ বলে দাবি করছে ভারতীয় এক গণমাধ্যম। গতকাল শনিবার ভারতীয় গণমাধ্যম আজতক বাংলা এক ভিডিও প্রতিবেদনে কয়েকটি ছবি দেখিয়ে এ দাবি করে।
ছবিতে দেখা যায়, ড. ইউনূসের সঙ্গে হ্যান্ডশেক করছেন কয়েকজন সেনা কর্মকর্তা। আজতক বাংলার উপস্থাপক সে সময় দাবি করেন ‘পোশাক দেখে মনে হচ্ছে না তারা কেউ বাংলাদেশের সেনা। কেননা বাংলাদেশের সেনার পোশাক এই রকম নয়।.. এরা কি তাহলে অন্য কোনো দেশের সেনা আধিকারিক? তাহলে বাংলাদেশে কী করছেন? এরা কি পাকিস্তানি সেনা আধিকারিক?’
এদিকে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ছবিতে ড. ইউনূসের সঙ্গে হ্যান্ডশেক করা ব্যক্তিরা কোনো দেশের সেনা কর্মকর্তা নয়। বরং তারা বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন শাখার কর্মকর্তা এবং সেই ছবিটি প্রকৃতপক্ষে, গত ২৯ এপ্রিল পুলিশ সপ্তাহ-২০২৫ এর উদ্বোধনের সময়কার।
অনুসন্ধানে আরও দেখা যায়, একই ছবি গত ২৯ এপ্রিল ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের ফেসবুক পেজ ও ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়।
জানা গেছে, ছবিটি ‘পুলিশ সপ্তাহ–২০২৫’-এর উদ্বোধন ও পদক প্রদান অনুষ্ঠানের মুহূর্ত ধারণ করে। অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের হাত থেকে বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম–সেবা) গ্রহণ করেন ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের অ্যাডিশনাল আইজিপি মো. ছিবগাত উল্লাহ, পিপিএম।
অন্যদিকে, এদিনের তোলা একাধিক ছবিতেও পুলিশ কর্মকর্তাদের একই পোশাকে দেখা যায়। এমনকি পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলমকেও একই পোশাকে ড. ইউনূসের পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।
এ বিষয়ে এআইজি (মিডিয়া) এনামুল হক সাগর ‘রিউমর স্ক্যানার’-কে বলেন, ‘এখানে উপস্থিত সবাই বাংলাদেশ পুলিশের সদস্য। এটি আমাদের আনুষ্ঠানিক পোশাক, যা ‘সামার টিউনিক’ নামে পরিচিত। পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে আমরা এই ceremonial dress পরিধান করি।’ অর্থাৎ, ড. ইউনূস যাদের সঙ্গে এখানে হ্যান্ডশেক করছেন, তারা সকলেই বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন শাখার কর্মকর্তা।’
সুতরাং, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বাংলাদেশ পুলিশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে হ্যান্ডশেক করা ছবিকে ভারতের কিছু গণমাধ্যম পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সঙ্গে তার হ্যান্ডশেক ছবি বলে যেভাবে উপস্থাপন করছে-তা সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর এবং ভিত্তিহীন।
উল্লেখ্য, গত এপ্রিল মাসে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া ২৯৬টি ভুল তথ্য শনাক্ত করেছে বাংলাদেশের ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানার।
এর আগের মাসে (মার্চ) ২৯৮টি ভুল তথ্য শনাক্ত করেছিল রিউমর স্ক্যানার।
রিউমর স্ক্যানারের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর থেকে ভারতীয় গণমাধ্যম ও ভারত থেকে পরিচালিত বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্ট থেকে বাংলাদেশকে জড়িয়ে ভুয়া তথ্য প্রচারের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। এপ্রিলেও এই ধারাবাহিকতা লক্ষ করেছে রিউমর স্ক্যানার।