শিরোনাম
◈ ভূমিকম্পে ঢাকায় আরমানীটোলায় ভবন ধস, আতঙ্কে রাস্তায় মানুষের ভিড়, ধসে পড়েছে একাংশ ◈ 'এখনই তত্ত্বাবধায়ক' দাবি থেকে কেন সরে এলো বিএনপি ও জামায়াত? ◈ ভূমিকম্পে কেঁপে উঠলো কলকাতাও ◈ আর্থিক দুর্নীতির মামলায় প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর স্বামীর বিরুদ্ধে দিল্লির আদালতে চার্জশিট জমা ◈ হামজা চৌধুরীর অভিনন্দন বার্তা পে‌য়ে বিস্মিত মুশফিকুর র‌হিম ◈ ঢাকাসহ বাংলাদেশের অন্যান্য স্থানে ৫.২ মাত্রার ভূমিকম্প ◈ ভারত–বাংলাদেশ নিরাপত্তা সংলাপ: দুই দিনের বৈঠকে ‘ইতিবাচক বার্তা’ ◈ পেশাগত নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য ও কর্মক্ষেত্র নিরাপত্তায় বৈপ্লবিক অগ্রগতি—আইএলওর ১০টি মৌলিক দলিল অনুমোদন করলো বাংলাদেশ ◈ প্রবাসী ভোটারদের রেকর্ড সাড়া—পোস্টাল ভোট অ্যাপে কোরিয়া-জাপান এগিয়ে ◈ সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণে সম্মতি খালেদা জিয়ার

প্রকাশিত : ১৬ নভেম্বর, ২০২৫, ১১:২৮ রাত
আপডেট : ২১ নভেম্বর, ২০২৫, ১২:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বিজ্ঞানীরা কেন এখনও খুঁজছেন আল্লাহর নূরে ছাই হয়ে যাওয়া পর্বত? (ভিডিও)

ইসলাম ধর্মানুসারে, হযরত মুসা (আ.)-এর সঙ্গে আল্লাহর কথোপকথনের পবিত্র স্থান সিনাই পর্বত, যা জাবালে মুসা নামেও পরিচিত, আজও বিশ্ব মানচিত্রে রহস্যের আবরণে ঘেরা। এই পর্বত পবিত্র কোরআনের একাধিক সূরায় বর্ণিত হলেও, এর সঠিক ভৌগোলিক অবস্থান নিয়ে দীর্ঘকাল ধরে গবেষণা ও বিতর্ক চলছে। আধুনিক গবেষণা ও প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধানে এর সম্ভাব্য অবস্থান চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হলেও, কোনো নিশ্চিত প্রমাণ মেলেনি।

পবিত্র কোরআনের বর্ণনা অনুযায়ী, আল্লাহ যখন মুসা (আ.)-কে এই পর্বতের উপর ডেকেছিলেন কথা বলার জন্য, তখন মুসা (আ.) আল্লাহর দিদার (দর্শন) লাভের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। আল্লাহ তখন নিজের নূরের একটি ছোট্ট ঝলক প্রকাশ করেন সিনাই পর্বতে। মুহূর্তেই সেই পর্বত পুড়ে ছাই হয়ে যায় এবং মুসা (আ.) জ্ঞান হারান। এই ঘটনা কোরআনের সূরা আরাফ-এর ১৪৩ নম্বর আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে। ইসলামি তাফসিরবিদ ইবনে কাসির (রহ.)-এর ব্যাখ্যা অনুযায়ী, এই পর্বতের অবস্থান ছিল তুর সিনাই নামক এক মরুভূমি অঞ্চলে।

ঐতিহাসিকরা দীর্ঘদিন ধরে এই পর্বতের অবস্থান নিয়ে গবেষণা করছেন। অনেকের মতে, বর্তমান মিশর ও সৌদি আরবের সীমানা অঞ্চলে সিনাই উপদ্বীপে অবস্থিত যে পাহাড়কে "মাউন্ট সিনাই" বলা হয়, সেটিই কোরআনে বর্ণিত "তুর পাহাড়"। কারণ, সেই স্থানে এখনো প্রাচীন খ্রিষ্টান মঠ রয়েছে, যা ষষ্ঠ শতকে নির্মিত হয়। মিশর সরকার দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছে যে, সিনাই উপদ্বীপে অবস্থিত সেন্ট ক্যাথরিন পাহাড়ি প্রকৃত তুর পাহাড়।

তবে, আধুনিক গবেষণায় ভিন্ন তথ্য উঠে আসছে। ২০০২ সালে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, কিছু স্যাটেলাইট ইমেজ বিশ্লেষণে সৌদি আরবের উত্তর অঞ্চলে একটি অস্বাভাবিক কালো শিলার এলাকা দেখা গেছে। এই কালো শিলার চূড়াগুলো আগুনের পোড়া পাথরের মতো, যা কোরআনে বর্ণিত আল্লাহর নূর দ্বারা পাহাড় ধ্বংস হওয়ার সঙ্গে মিলে যায়। এই কালো শিলার এলাকাটি সম্ভবত সেই পাহাড়ের ধ্বংসাবশেষ হতে পারে। এই এলাকাটি জেবাল আল লাউজ বা জাবাল আল লাউজ নামে পরিচিত, যা সৌদি আরবের আল-বাদ শহরের কাছাকাছি অবস্থিত।

প্রত্নতাত্ত্বিকভাবে সিনাই পর্বতের কোনো নিশ্চিত প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এর ফলে এই বিতর্ক আজও থামেনি। ইতিহাসবিদরা বলছেন, সময়ের প্রবাহে ভূতাত্ত্বিক পরিবর্তন, আগ্নেয়গিরির ক্রিয়া এবং মরুভূমির বালুর কারণে হয়তো অঞ্চলগুলো প্রাচীন সেই পর্বতের অবস্থানকে পুরোপুরি ঢেকে দিয়েছে। আবার ইসলামি তাফসির অনুযায়ী, আল্লাহ চাইলে কোনো নিদর্শন লুকিয়ে রাখতে পারেন, যাতে মানুষ অন্ধবিশ্বাসে না পড়ে এবং ইমানের পথে বিচলিত না হয়। যেমন কোরআনের সূরা আল-বাকারার ২৫৯ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, "আল্লাহ অনেক সময় তার নিদর্শন আড়ালে রাখেন, যেন মানুষ চিন্তা-ভাবনা ও গবেষণার মাধ্যমে সত্যে পৌঁছায়।"

তাই আজও তুর পাহাড় বা জাবালে মুসা রহস্যে ঘেরা। এটি হয়তো মিশরের সিনাই উপদ্বীপে, আবার হয়তো সৌদি আরবের মরুভূমিতে লুকিয়ে আছে। এই রহস্যের সমাধান ভবিষ্যতের আরও গভীর গবেষণার উপর নির্ভরশীল।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়