মাদক ভয়াবহ সামাজিক ব্যাধি। ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয় মাদক। শরীরের জন্যও এটি মারাত্মক ক্ষতিকর—ধ্বংস করে দেয় মস্তিষ্ক, লিভার, হৃদ্যন্ত্রসহ নানা অঙ্গপ্রত্যঙ্গ। মাদক গ্রহণে মানুষের নৈতিকতা নষ্ট হয়, নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে বিবেক-বুদ্ধি। ফলাফল হিসেবে জন্ম নেয় অপরাধ, সহিংসতা, পরিবারে অশান্তি ও সম্পর্কের ভাঙন। মাদক শুধু ব্যক্তিকে নয়, পুরো সমাজ গ্রাস করে। তাই মাদক থেকে দূরে থাকা এবং অন্যদের সচেতন করার প্রতি নির্দেশ দেয় ইসলাম।
ইসলামে মাদক গ্রহণ, এর ব্যবসা করা, এ কাজে সাহায্য করা এবং এ কাজের জন্য বাড়িঘর ও দোকান ভাড়া দেওয়া সম্পূর্ণ অবৈধ বা হারাম। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে ইমানদারগণ, নিশ্চয়ই মদ, জুয়া, প্রতিমা-দেবী ও ভাগ্যনির্ধারক তিরগুলো নাপাক, শয়তানের কর্ম। সুতরাং তোমরা তা পরিহার করো, যাতে সফলকাম হতে পারো।’ (সুরা মায়েদা: ৯০)। নবী করিম (সা.) বলেন, ‘মদ পান করা, তা বিক্রি এবং এ থেকে উপহার গ্রহণ হারাম।’ (সহিহ্ বুখারি: ২২২৩)। অন্য হাদিসে এসেছে, ‘যা পান করা হারাম, তার ক্রয়-বিক্রয়ও হারাম।’ (সহিহ্ মুসলিম)
মাদকদ্রব্যকে ইসলামে উম্মুল খাবায়েস বা সব জঘন্যতার মূল বলে অভিহিত করা হয়েছে। মাদকাসক্ত ব্যক্তি নিজের জীবন যেমন নষ্ট করে, তেমনি পরিবারে আনে অশান্তি ও সংকট। তরুণেরা যখন মাদকের ফাঁদে পড়ে, তখন তারা হারায় স্বপ্ন, লক্ষ্য ও নৈতিকতা। চুরি, ছিনতাই, খুনসহ নানা অপরাধের পেছনে মাদকের প্রভাব প্রকট। নবীজি (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি মদ পান করল, সে যেন আপন মা, খালা ও ফুফুর সঙ্গে অপকর্মে লিপ্ত হলো।’ (আল-মুজামুস সাগির লিত্ তাবরানি)। এই হাদিস জানার পর কোনো মুসলমানের পক্ষে কি মাদক সেবন করা সম্ভব?
মাদক ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত জীবনের সবচেয়ে বড় বিজয়। এটি শরীর ও মনের ওপর চেপে থাকা বিষাক্ত বোঝা দূর করে। পরিবার ফিরে পায় হাসিমুখের প্রিয়জন, আর সমাজ পায় একজন সুস্থ, সচেতন নাগরিক। মাদকমুক্ত জীবন মানে সম্ভাবনায় ভরা ভবিষ্যৎ। সূত্র: আজকের পত্রিকা