শিরোনাম
◈ চালক-যাত্রীদের অনুরোধেও সড়ক ছাড়েননি ছাত্র-জনতা ◈ আজ সন্ধ্যায় দেশে পৌঁছাবে ওসমান হাদির মরদেহ, শনিবার জানাজা ◈ তারেক রহমানের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে যে দুই ইস্যু ◈ যেভাবে বিপ্লবী হয়ে উঠেছিলেন শরিফ ওসমান হাদি ◈ ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বিক্ষুব্ধ জনতার আগুন-ভাঙচুর (ভিডিও) ◈ শাহবাগে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভে যোগ দিলেন নাহিদ-আসিফ (ভিডিও) ◈ হাদির মৃত্যু: চট্টগ্রামে নওফেলের বাড়িতে আগুন-ভাঙচুর ◈ কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার অফিসে হামলা-ভাঙচুর (ভিডিও) ◈ দেশে ফিরলে তারেক রহমানকে এসএসএফের নিরাপত্তা দেবে সরকার ◈ ‘ভাইয়া আমার বাচ্চাটারে একটু দেইখেন’—বলে কেঁদেছিলেন হাদি (ভিডিও)

প্রকাশিত : ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১২:৪০ দুপুর
আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০১:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কাতারে বেঁচে যাওয়া হামাস নেতাদের পরেরবার হত্যা করবে ইসরায়েল: যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত

কাতারে মঙ্গলবারের বিমান হামলায় যদি হামাসের নেতাদের হত্যা করতে ইসরায়েল ব্যর্থ হয়েও থাকে পরেরবার সফল হবে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত। এ হামলার পর যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রচেষ্টায় ধাক্কা লাগার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

ইসরায়েলি কূটনীতিক ইয়েখিয়েল লাইটা মঙ্গলবার রাতে ফক্স নিউজকে বলেন, ‘এখন আমরা হয়তো কিছু সমালোচনার মুখে পড়েছি। তবে তারা এটা কাটিয়ে উঠবে।

আর ইসরায়েল এখন বদলাচ্ছে, আরো ভালো হচ্ছে। যদি এবার না পেরে থাকি, পরেরবার আমরা সফল হবো।’
দোহায় মঙ্গলবার হামাসের রাজনৈতিক নেতাদের লক্ষ্যবস্তু করে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। যুক্তরাষ্ট্র এটিকে একতরফা আক্রমণ বলে অভিহিত করে, যা ওয়াশিংটন ও তেল আবিবের স্বার্থ অগ্রসর করবে না বলে মন্তব্য করেছে।

হামলাটি বিশেষভাবে স্পর্শকাতর, কারণ কাতারই ছিল দুই বছর ধরে চলা যুদ্ধবিরতি আলোচনার প্রধান মধ্যস্থতাকারী।
হামাস জানিয়েছে, এ হামলায় তাদের গাজা-নির্বাসিত শীর্ষ নেতা ও আলোচক খালিল আল-হাইয়ার ছেলেসহ পাঁচ সদস্য নিহত হয়েছে। তবে দলের শীর্ষ রাজনৈতিক নেতৃত্ব হামলা থেকে বেঁচে গেছেন।

একজন জ্যেষ্ঠ ইসরায়েলি কর্মকর্তা বুধবার বলেন, শুরুতে আশাবাদী থাকলেও হামলার ফলাফল নিয়ে এখন সন্দেহ তৈরি হয়েছে।

কয়েক ঘণ্টা কেটে গেলেও স্পষ্ট ফলাফল না পাওয়া উদ্বেগজনক। কাতার জানিয়েছে, হামলায় তাদের একজন নিরাপত্তা সদস্য নিহত হয়েছেন। তারা ইসরায়েলকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ ও ‘রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদে’ জড়িত বলে অভিযুক্ত করেছে।

হামলার পর আরববিশ্বের কূটনৈতিক তৎপরতা বেড়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান ও জর্দানের যুবরাজ হুসেইন বুধবার কাতারে পৌঁছবেন।

সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান বৃহস্পতিবার সেখানে পৌঁছবেন বলে জানিয়েছেন এ বিষয়ে অবগত একজন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও এ হামলার নিন্দা জানিয়ে মন্তব্য করেছে, এটি মধ্যপ্রাচ্য ইস্যুতে কিছু বহিরাগত শক্তির ‘একপেশে অবস্থানের’ বহিঃপ্রকাশ।

দোহায় হামলার পর গাজা সিটি থেকে ফিলিস্তিনিদের চলে যাওয়ার নির্দেশ দেয় ইসরায়েল। একসময় প্রায় ১০ লাখ মানুষের আবাস এই এলাকায় এখন আবারও বড়সড় হামলার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

ফিলিস্তিনের ৬৫ বছর বয়সী পাঁচ সন্তানের মা উম তামের রয়টার্সকে বলেন, ‘এর মানে কি আর যুদ্ধবিরতির কোনো আশা নেই? আমার ভয় হচ্ছে, এখন ইসরায়েল গাজা সিটির দখল আরো ত্বরান্বিত করবে।’

ইসরায়েলি বিমানবাহিনী গাজার একটি ১২তলা ভবনে দুটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে, আগেই বাসিন্দাদের ভবন ছাড়ার সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছিল। তবে স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীদের মতে, আশপাশের অস্থায়ী তাঁবুতে থাকা অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। গাজায় বুধবার সারা দিনে অন্তত ৩০ জন নিহত হয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দোহা হামলা নিয়ে বলেন, তিনি এই ঘটনার ‘প্রতিটি দিক নিয়েই অত্যন্ত অসন্তুষ্ট’।

এ হামলা যুদ্ধবিরতি আলোচনায় প্রভাব ফেলবে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হাকাবি রয়টার্সকে বলেন, ‘সৎ উত্তর হলো—আমরা জানি না এটা যুদ্ধবিরতি আলোচনায় কী প্রভাব ফেলবে। হামাস এখন পর্যন্ত প্রতিটি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে।’

তিনি আরো বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের অবস্থান স্পষ্ট, ‘হামাসকে যেতে হবে’ এবং ভবিষ্যতে তারা গাজা পরিচালনায় থাকতে পারবে না।

হামাস আবারও জানিয়েছে, ইসরায়েল যদি যুদ্ধ শেষ করে সেনা প্রত্যাহার করে, তবে তারা সব বন্দি মুক্তি দেবে। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু চান একটি ‘অল-অর-নাথিং’ চুক্তি—যেখানে সব বন্দিকে একসঙ্গে মুক্তি দিতে হবে ও হামাসকে আত্মসমর্পণ করতে হবে। দোহায় মঙ্গলবারের অভিযানে বিশ্বব্যাপী নিন্দাকে তিনি অস্বীকার করেছেন।

২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাস ইসরায়েলে হামলা চালায়, যেখানে ইসরায়েলের হিসাবে এক হাজার ২০০ জন নিহত ও ২৫১ জন বন্দি হয়। এর পর থেকেই গাজায় ইসরায়েলি হামলায় স্থানীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী ৬৪ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক। পুরো গাজা উপত্যকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং ক্ষুধা-দুর্ভিক্ষসহ এক ভয়াবহ মানবিক সংকট বিশ্বকে হতবাক করেছে। সূত্র: রয়টার্স 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়