ইতিহাসের বিভীষিকাময় দুনিয়াকাঁপানো নাইন ইলেভেনের বার্ষিকী আজ। ২০০১ সালের এই দিনে সন্ত্রাসীরা যাত্রীবাহী চারটি বিমান ছিনতাই করে একযোগে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের টুইন টাওয়ার ও ভার্জিনিয়ার পেন্টাগনে হামলা চালায়। এ হামলায় অন্তত তিন হাজার লোক নিহত হন। নিহতদের মধ্যে বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় ৭৮টি দেশের নাগরিকও ছিলেন। গুরুতর আহত হন প্রায় ২৫ হাজার।
বৃহস্পতিবার নানা আয়োজনে দিনটিকে স্মরণ করবে মার্কিন নাগরিকরা। প্রতি বছরের মতো এবারো দিনটিতে হাজার হাজার সাধারণ মানুষ হামলায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ফুল-মালা-মোমবাতি নিয়ে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার চত্বরে হাজির হবেন। স্মৃতিসৌধ ও জাদুঘরে বার্ষিক আয়োজনে শ্রদ্ধাঞ্জলির পাশাপাশি প্রতিবছরের ন্যায় পরিবারের সদস্যদের দ্বারা নিহতদের নাম পাঠ এবং নীরবতা পালন করা হবে।
অনুষ্ঠানটি শুরু হবে স্থানীয় সময় সকালে। মোট ছয়টি মুহূর্তে পালন করা হবে নীরবতা। প্রথম নীরবতা পালন করা হবে ৮টা ৪৬ মিনিটে, ঠিক যে সময়ে উত্তর টাওয়ারে প্রথম হামলাটি চালানো হয়েছিল। অনুষ্ঠানে কয়েক হাজার মানুষ উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে।
নিউ ইয়র্ক মেয়র অফিসের প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা মীর বাশার মানবজমিনকে জানান, সিটি মেয়র এরিক এডামসসহ বিভিন্ন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে নিহতদের স্মরণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন।
এ ছাড়া হামলার অপর দুই এলাকা পেন্টাগন এবং পেনসিলভেনিয়া পার্কেও দিনটিকে স্মরণ করে নানা আয়োজন করবে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প দিনটিকে স্মরণ করবেন বিভিন্ন আয়োজনে।
২০০১ সালের ১১ই সেপ্টেম্বরের এ হামলা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে হওয়া সবচেয়ে মারাত্মক হামলা। আল-কায়েদা এ হামলা চালিয়েছে দাবি করে এরপর থেকে বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান শুরু করে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট। জঙ্গিবাদ দমনের নামে আফগানিস্তান সহ মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কিছু দেশে সামরিক আগ্রাসন চালায় যুক্তরাষ্ট্র। এতে প্রাণ হারান বহু নিরপরাধ মানুষ। পরবর্তীতে ২০১১ সালে পাকিস্তানে এক অভিযান চালিয়ে ওসামা বিন লাদেনকে হত্যা করে মার্কিন বাহিনী। ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পর তা আমেরিকার অর্থনীতি এবং বিশ্ববাজারে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে। ২০০৬ সালে আবার নতুন করে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০১৪ সালে তা জনসাধারণের জন্য খুলে দেয়া হয়। বর্তমানে হামলার স্থানে নিহতদের স্মরণে বেশ কয়েকটি স্মৃতিসৌধ তৈরি করা হয়েছে।
১১ই সেপ্টেম্বরের সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের মধ্যে ৬ জন বাংলাদেশি ছিলেন। নিহতের তালিকায় রয়েছেন মুক্তাগাছার নূরুল হক মিয়া এবং তার স্ত্রী মৌলভীবাজারের শাকিলা ইয়াসমীন, সুনামগঞ্জের সাব্বির আহমেদ, কুমিল্লার মো. শাহজাহান, সিলেটের সালাহউদ্দিন চৌধুরী এবং নোয়াখালীর আবুল কে. চৌধুরী। যাদের স্মরণে নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশি কমিউনিটির পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হবে।