ইরানে নেতৃত্বের পরিবর্তন হলে আপত্তি নেই বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দেশটির পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলার চালানোর পরদিন (২২ জুন) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ কথা বলেন তিনি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
ওই পোস্টে তিনি বলেন, সরকার পরিবর্তন (রেজিম চেঞ্জ) শব্দবন্ধ ব্যবহার করা রাজনৈতিকভাবে সঠিক নয়। তবে বর্তমান ক্ষমতাসীনরা যদি ইরানকে পুনরায় মহান করে তুলতে ব্যর্থ হয়, তবে সেখানে কেন ক্ষমতার পালাবদল ঘটবে না?
গত ১৩ জুন ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা ও সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে ইসরায়েলি হামলা থেকে চলমান সংকটের সূচনা। তেল আবিবের দাবি, ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন থেকে বিরত রাখতে এই অভিযান চলছে। অপরদিকে, বরাবরের মতো পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কথা অস্বীকার করে এসেছে ইরান।
এরমধ্যেই শনিবার ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনা নাতানজ, ইস্পাহান এবং ফরদোতে হামলার কথা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নিজেই ইরানকে দুই সপ্তাহ সময় বেঁধে দেওয়ার দু-দিন পরই হামলা করে বসেন তিনি।
মার্কিন বিমান হামলার পর ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা দাবি করছেন, ইরানের নেতৃত্ব উৎখাত করতে তারা সামরিক পদক্ষেপ নেয়নি।
মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের সঙ্গে সুর মিলিয়ে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ বলেছেন, ইরানের সরকার পরিবর্তনের উদ্দেশ্যে আমরা হামলা চালাইনি।
ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ইরানে দায়িত্বপ্রাপ্ত মার্কিন কূটনীতিক হিসেবে দায়িত্বপালন করা এলিয়ট আব্রামস বলেছেন, ট্রাম্প বোধহয় কেবল রসিকতা করছেন।
উল্লেখ্য, ইরাকসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংঘাত এবং সাদ্দাম হোসেন সরকারের পতনে মার্কিন সম্পৃক্ততা নিয়ে সবসময় ব্যাপক সমালোচনা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
শনিবারের হামলায় যুক্তরাষ্ট্র তিনটি ইরানি পারমাণবিক স্থাপনায় উচ্চ প্রযুক্তির বাংকার-বাস্টার বোমা ব্যবহার করে হামলা চালায়। ট্রাম্প দাবি করেছেন, এই হামলায় 'অভূতপূর্ব ক্ষতি' হয়েছে, যদিও ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত পরিমাণ এখনও পরিষ্কার নয়। এদিকে, জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষক সংস্থা ওই এলাকায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে যেন নিরীক্ষা চালানো সম্ভব হয়।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সুর মিলিয়ে ট্রাম্প একাধিকবার বলেছেন, পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সক্ষমতার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে ইরান। তবে তাদের দাবি বরাবরই অস্বীকার করে এসেছে তারা।
শনিবার মার্কিন হামলার পর ইরান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, এর জন্য চিরস্থায়ী পরিণতি ভোগ করতে হবে।
এরমধ্যেই সোমবার ইসরায়েলি বাহিনী দাবি করেছে, ফরদো পারমাণবিক স্থাপনার যাতায়াত পথে (অ্যাক্সেস রুট) আরেক দফা হামলা চালানো হয়েছে। ইরানের কর্মকর্তাদের বরাতে দেশটির সংবাদমাধ্যম এই হামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছে।