মার্কিন সংবাদ সংস্থা ব্লুমবার্গ বলছে, গতকাল রোববার জাহাজ দুটি হরমুজ প্রণালিতে প্রবেশ করেছিল। পরে স্যাটেলাইট ট্র্যাকিংয়ে দেখা যায়, তারা হঠাৎ দিক পরিবর্তন করে প্রণালি ছেড়ে চলে যাচ্ছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তেল বা পণ্য পরিবহনের জন্য নতুন রুট বেছে নেওয়ার চিন্তাভাবনা শুরু হতে পারে—এই ঘটনা সেই সম্ভাবনারই প্রাথমিক ইঙ্গিত হতে পারে।
ইরানে মার্কিন হামলার পর হরমুজ প্রণালি এড়িয়ে চলছে তেলবাহী ট্যাংকারগুলো। এরই মধ্যে হরমুজ প্রণালি থেকে দিক পরিবর্তন করেছে দুটি বিশাল তেলবাহী জাহাজ—কোসইউসডম লেক ও সাউথ লয়্যালটি। জাহাজ দুটি প্রায় ২০ লাখ ব্যারেল করে অপরিশোধিত তেল পরিবহনের সক্ষমতা রাখে।
বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই জলপথ দিয়ে প্রতিদিন বিশ্বব্যাপী ব্যবহৃত তেলের প্রায় ২০ শতাংশ পরিবহন হয়। মার্কিন জ্বালানি তথ্য সংস্থা (ইআইএ) একে ‘বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তেল পরিবহন চোকপয়েন্ট’ হিসেবে উল্লেখ করেছে।
ইরান আগেই হুমকি দিয়েছিল, যদি তাদের ওপর সামরিক চাপ বাড়ে কিংবা যুদ্ধ শুরু হয়, তবে তারা হরমুজ প্রণালি বন্ধ করে দেবে। তেলবাহী জাহাজগুলোর উপসাগরীয় অঞ্চলে প্রবেশ ও প্রস্থানের একমাত্র পথ এটিই। সে ক্ষেত্রে অল্প কিছু দিনের জন্যও যদি এই পথ বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে বিশ্ববাজারে ব্যাপক অস্থিরতা তৈরি হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ইরানের মার্কিন হামলার একদিন পেরিয়েছে, এরই মধ্যে অস্থির হয়ে উঠেছে তেলের বাজার। যুদ্ধের আশঙ্কা এবং সরবরাহে বিঘ্ন ঘটতে পারে—এই আতঙ্কে আজ দিনের শুরুতেই বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম হঠাৎ করেই ঊর্ধ্বমুখী হয়ে ওঠে।
ব্রেন্ট ক্রুড এবং যুক্তরাষ্ট্রের মূল তেলবাজার ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই)- দুটিই আজ দিনের শুরুতে এক লাফে চার শতাংশের বেশি বেড়ে জানুয়ারি মাসের পর সর্বোচ্চ দামে পৌঁছেছে। যদিও পরে কিছুটা দাম কমে আসে, তবুও গ্রিনিচমান সময় রাত ১২টা ৩০ মিনিট নাগাদ ব্রেন্টের দাম ২ দশমিক ২ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ব্যারেলপ্রতি ৭৯ দশমিক ২০ ডলারে এবং ডব্লিউটিআই ২ দশমিক ১ শতাংশ বেড়ে হয় ৭৫ দশমিক ৯৮ ডলার প্রতি ব্যারেল।