শিরোনাম

প্রকাশিত : ০৪ মে, ২০২৫, ০২:২৬ দুপুর
আপডেট : ০৪ মে, ২০২৫, ০৯:১৮ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে হাজার কোটি ডলারের গোপন আঁতাত কারা টিকিয়ে রেখেছে

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আনুষ্ঠানিক বাণিজ্যের পরিমাণ অনেকটাই কম দেখালেও, প্রকৃতপক্ষে পেছনের দরজা দিয়ে প্রতিবছর প্রায় এক হাজার কোটি (১০ বিলিয়ন) ডলার মূল্যের বাণিজ্য চলছে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী এই দুই দেশের মধ্যে। এমনটি জানিয়েছে ভারতীয় থিংক ট্যাঙ্ক জিটিআরআই। এই বাণিজ্য সাধারণত সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই, শ্রীলঙ্কার কলম্বো ও সিঙ্গাপুরের মধ্য দিয়ে ঘুরিয়ে আনা হয়, যেখানে পণ্যের গায়ে 'মূল প্রস্তুতকারী দেশের' নাম পরিবর্তন করে পাকিস্তানে পাঠানো হয়।

গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে সশস্ত্র হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত-পাকিস্তান পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক ও সীমান্ত বাণিজ্য বন্ধ করে দেয়। ভারতের পর পাকিস্তানও পাল্টা পদক্ষেপ নেয় এবং তৃতীয় দেশের মাধ্যমেও ভারতীয় পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করে।

২০১৭-১৮ অর্থবছরে উপমহাদেশের দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের মোট বাণিজ্য ছিল ২.৪১ বিলিয়ন ডলার। ভারতে পাকিস্তানের রপ্তানি পণ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ফার্মাসিউটিক্যালস, জ্বালানি, রাসায়নিক ও কৃষিপণ্য। সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। 

আনুষ্ঠানিকভাবে বাণিজ্য বন্ধ হলেও অনানুষ্ঠানিক বাণিজ্য চলছে কেন? পাকিস্তানে ভারতীয় পণ্যের চাহিদা খুব বেশি। রপ্তানিকারকেরা মধ্যপ্রাচ্য ও অন্যান্য দেশের মাধ্যমে পণ্য পাঠিয়ে বেশি মুনাফা পাচ্ছে। কাস্টমস নিয়ম এড়িয়ে ব্যবসায়ীরা সর্বশেষ দেশকে 'উৎস দেশ' হিসেবে দেখায়, যেটা পুরোপুরি অবৈধ না হলেও 'গ্রে জোন স্ট্র্যাটেজি' হিসেবে বিবেচিত। 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পাকিস্তান সরকার চাইলেও এই ধরনের অনানুষ্ঠানিক বাণিজ্য পুরোপুরি বন্ধ করা কঠিন। কারণ এতে দুই দেশের ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের চাহিদা মিটে এবং তাদের মধ্যে সাংস্কৃতিক মিল থাকায় ভারতের পণ্যের জনপ্রিয়তা পাকিস্তানে অনেক বেশি।

এই চিরবৈরি দুই দেশের ইতিহাসে এমন বাণিজ্য বিরোধ আগেও হয়েছে। ১৯৬৫ ও ১৯৭১ সালে যুদ্ধের সময় বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যায়। ২০১৯ সালে পুলওয়ামা হামলার পর ভারত ২০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। একই বছরে ভারতের মাধ্যমে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর পাকিস্তান সম্পূর্ণ বাণিজ্য বন্ধ করে দেয়। 

আনুষ্ঠানিকভাবে যতই নিষেধাজ্ঞা থাকুক, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে পণ্য বাণিজ্য প্রকৃতপক্ষে অনেকটাই চালু রয়েছে, বিশেষ করে তৃতীয় দেশের মাধ্যমে। কারণ বাণিজ্য নীতির চেয়ে ব্যবসায়ীদের চাহিদা ও মুনাফা অনেক বড় চালিকা শক্তি। অনুবাদ: চ্যানেল২৪

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়