শিরোনাম
◈ আওয়ামী লীগের 'কর্মকাণ্ড', ব্যাখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি ◈ দুদকের তলবে সাড়া দেননি টিউলিপ সিদ্দিক ◈ ম‌হেদী মিরাজ আইসিসির এপ্রিল মাসের সেরা ক্রিকেটার ◈ এবার ব্যারিকেড ভেঙে শাহবাগের নিয়ন্ত্রণ নিলেন আন্দোলনরত নার্সিং শিক্ষার্থীরা (ভিডিও) ◈ বাণিজ্যযুদ্ধে ‘বিজয়ের আনন্দ’ চীনে: দ্য ইকোনমিস্টের প্রতিবেদন ◈ ডলারের দর বাজারভিত্তিক করার ঘোষণা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ◈ রোনাল‌দো‌ পু‌ত্রের দেশের জার্সিতে অভিষেক, জাপানকে ৪-১ হারালো পর্তুগাল ◈ জয়পুরের স্টেডিয়ামে আবার বোমা মারার হুমকি, আইপিএল শুরুর আগে চিন্তায় বিসিসিআই ◈ শুঁটকি মাছের নমুনায় মিলেছে ক্যানসার সৃষ্টিকারী উপাদান: গবেষণা ◈ হাইকোর্টে জামিন পেলেন জুবাইদা রহমান

প্রকাশিত : ২৭ জানুয়ারী, ২০২৫, ০৭:০৫ বিকাল
আপডেট : ১৮ এপ্রিল, ২০২৫, ০৬:০০ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পের ওপর নির্ভরশীলতা বন্ধ করা উচিত: নিক্কেই এশিয়ায় মতামত প্রতিবেদন

ভারত ও মিয়ানমারের মধ্যে নিম্ন সমভূমিতে ১৮ কোটি মানুষের বসবাস। এটি বাংলাদেশের একটি চিত্র। যেখানে প্রাকৃতিক দুর্যোগ সাধারণ ঘটনা। হোক সেটা মানুষের তৈরি অথবা প্রাকৃতিক। বন্যা ও সমুদ্রপৃষ্টের উচ্চতার কারণে ঝুঁকিতে রয়েছে ঢাকা। অবস্থা অমাস্টারডামের মতোই তবে প্রতিরক্ষামূলক অবকাঠামো নির্মাণের সক্ষমতা নেই। যেখানে প্রায়ই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কর্মীদের মৃত্যু হয়।

তৃতীয় বিশ্বের মতো একটি দেশ হওয়া স্বত্বেও বাংলাদেশ উদীয়মান অর্থনীতির জন্য একটি রোল মডেল। যেটির লক্ষ্য হলো মানুষকে দরিদ্রমুক্ত করা। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হওয়ার দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। কিন্তু তারপরেও গত তিন দশক ধরে বছরে ৪ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি দেখছে।

তাছাড়া বাংলাদেশ ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের অবস্থা থেকে উন্নতি লাভ করবে এবং এই দশকে উচ্চ মধ্যম আয়ের র‍্যাঙ্কিংয়ে স্থান পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এমনকি বর্তমানে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ভারতের চেয়ে বেশি।

বাংলাদেশের এই সফলতা মূলত লাইট ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের ওপর ভিত্তি করে। দেশটি বিশেষ করে গার্মেন্টস শিল্পের ওপর নির্ভরশীল। মূল্যর দিক থেকে এই খাত রপ্তানিতে ৮০ শতাংশের বেশি অবদান রাখে।

এখন প্রশ্ন হলো লাইট ম্যানুফ্যাকচারিং এর ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা অর্থনীতি দেশকে সামনের দিকে নিয়ে যেতে পারবে কি না। দুঃখের বিষয় হলো এভাবে বাংলাদেশের সম্ভাবনা নিয়ে আশাবাদী হওয়া কঠিন।

চীনভিত্তিক ম্যাক্রো গবেষণা সংস্থা উদীয়মান উপদেষ্টা গ্রুপের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ একটি পোস্ট টাইগার ইকোনমিতে পরিণত হয়েছে। দেশটি মাত্র একটি ক্ষেত্রেই শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। কিন্তু অন্যান্যখাতে কোনো বৈচিত্র নেই।

সিটিগ্রুপের চিফ ইন্ডিয়া ইকোনমিস্ট সমীরণ চক্রবর্তী বলেনে, সমস্যা হলো এখানে শুধু গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিই আছে। সবকিছুই এর ওপর নির্ভর করে।

গার্মেন্টস শিল্পের ওপর নির্ভরশীলতা কমানো বাংলাদেমের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিষগুলোর মিশ্রণের চাপও রয়েছে।

আগস্টে শেখ হাসিনার ভারতে পালিয়ে যাওয়ার আগে দুর্নীতি বড় একটি ইস্যু ছিল।

বিশ্বব্যাংকের ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন শাখার একজন কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশ ছিল অভিজাতদের দখলের একটি উদাহরণ। সব সংসদ সদস্যেরই বড় ধরনের স্বার্থ ছিল। সরকারের নীতিতে তাদের স্বার্থ প্রতিফলিত হতো। সব ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ ছিল কয়েক ব্যক্তির হাতে।

হাসিনার পতনের পর নোবেল শান্তি বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে। হাসিনার আওয়ামী লীগ বা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) থেকে রাজনীতিবিদদের বাদ দিয়ে এই সরকার গঠিত হয়েছে। নির্ভর করা হচ্ছে শিক্ষাবিদ, ব্যাংকার ও অর্থনীতিবিদদের ওপর।

ঢাকায় ভারতীয় মিডিয়া কোম্পানিতে কাজ করা একজন স্থানীয় সাংবাদিক বলেছেন, নিহিত স্বার্থ ও মুদ্রাস্ফীতির পরিপ্রেক্ষিতে এই সরকার অনিবার্যভাবে ব্যর্থ হবে। প্রতিটি রাজনৈতিক দল এই সরকারের বিরোধিতা করছে এবং এটিকে পতনের চেষ্টা করছে।

একটি বড় আন্তর্জাতিক ব্যাংকের ঢাকায় প্রধান অর্থনীতিবিদ বলেন, মূল সমস্যা হলো আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি। পুলিশ পুরোপুরি কার্যকর নয়, প্রশাসন বা বিচার বিভাগও নয়। অন্তর্বর্তী সরকার আগের শাসনামলে যাদের স্বার্থ ছিল তাদের সবাইকে সরাতেও পারছে না।

লুৎফে সিদ্দিকী ইউবিএস-এর লন্ডন অফিসে একজন ব্যাংকার ছিলেন। এখন তিনি দেশে ফিরে মোহাম্মদ ইউনূসের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ডিপ স্টেট বাস্তব। আগের শাসনামল থেকে সর্বত্র রাজনৈতিক ইমপ্লান্ট রয়েছে। তারা কেবল পোশাক পরিবর্তন করেছে। আমলারা সব কিছু ধীর করার চেষ্টা করছে। তবুও আমরা কর্তৃত্ববাদী হতে পারি না।

২০২৫ সালের জন্য অর্থনীতিবিদরা প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়েছে। এক দিকে দুর্বল হচ্ছে মুদ্রা। অন্যদিকে কমছে রিজার্ভ। চাপ রয়েছে মূল্যস্ফীতির।

অনিশ্চিয়তার কারণে বিদেশ থেকে নতুন করে বিনিয়োগও আসছে না। অতীতে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ এসেছে তেল ও গ্যাস শিল্প থেকে। দীর্ঘ মেয়াদি যে পরিপ্রেক্ষিতের প্রয়োজন তা খুঁজে পাওয়া কঠিন। দুঃখজনক হলেও সত্য এই মুহূর্তে বাংলাদেশের হন্য সহজ কোনো উত্তর নেই।

লেখক: হেনি সেন্ডার। তিনি অপ্সরা অ্যাডভাইজরির প্রতিষ্ঠাতা এবং ব্যবস্থাপনা অংশীদার। তিনি আগে বিনিয়োগ কোম্পানি ব্ল্যাকরকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। অনুবাদ: জাগোনিউজ২৪

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়