শিরোনাম
◈ আওয়ামী লীগের 'কর্মকাণ্ড', ব্যাখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি ◈ দুদকের তলবে সাড়া দেননি টিউলিপ সিদ্দিক ◈ ম‌হেদী মিরাজ আইসিসির এপ্রিল মাসের সেরা ক্রিকেটার ◈ এবার ব্যারিকেড ভেঙে শাহবাগের নিয়ন্ত্রণ নিলেন আন্দোলনরত নার্সিং শিক্ষার্থীরা (ভিডিও) ◈ বাণিজ্যযুদ্ধে ‘বিজয়ের আনন্দ’ চীনে: দ্য ইকোনমিস্টের প্রতিবেদন ◈ ডলারের দর বাজারভিত্তিক করার ঘোষণা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ◈ রোনাল‌দো‌ পু‌ত্রের দেশের জার্সিতে অভিষেক, জাপানকে ৪-১ হারালো পর্তুগাল ◈ জয়পুরের স্টেডিয়ামে আবার বোমা মারার হুমকি, আইপিএল শুরুর আগে চিন্তায় বিসিসিআই ◈ শুঁটকি মাছের নমুনায় মিলেছে ক্যানসার সৃষ্টিকারী উপাদান: গবেষণা ◈ হাইকোর্টে জামিন পেলেন জুবাইদা রহমান

প্রকাশিত : ২৭ জানুয়ারী, ২০২৫, ১০:৩৯ দুপুর
আপডেট : ২৭ এপ্রিল, ২০২৫, ১১:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

চার ইসরাইলি নারী সেনার বিনিময়ে  ২০০ ফিলিস্তিনি বন্দির মুক্তি

পার্স-টুডে-শনিবার বন্দি-বিনিময় সম্পন্ন হয়েছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন ও দখলদার ইহুদিবাদী ইসরাইলের মধ্যে যুদ্ধ-বিরতি চুক্তির আলোকে। এই পর্যায়ে ২০০ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে ইসরাইল মুক্তি দিয়েছে চার ইসরাইলি সেনা-বন্দির বিনিময়ে।  

ইসরাইলি দৈনিক ইয়োদইয়ুত অহুরোনোত এই বন্দি-বিনিময় সম্পর্কে বলেছে, শনিবার ২০০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেয়া হয়েছে। এই বন্দিদের মধ্যে ১২১ জন ছিলেন যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত, ৭৯ জন দীর্ঘ মেয়াদের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত। মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে ৭০ জনকে মিশরে নির্বাসন দেয়া হয়েছে, ১১৪ জনকে পশ্চিম তীরে ও কেবল ১৬ জনকে গাজায় ফিরতে দেয়া হয়েছে। 

এখানে আমরা মুক্তিপ্রাপ্ত দুই জন বিশিষ্ট ও সবচেয়ে বিখ্যাত ফিলিস্তিনির পরিচয় তুলে ধরছি: 

মুহাম্মাদ আততুস-এর পরিচয়:  

মুহাম্মাদ আততুস হলেন সবচেয়ে পুরনো ফিলিস্তিনি বন্দি যিনি ৪০  বছর বন্দি থাকার পর শনিবার ফিলিস্তিনি সংগ্রামী দলগুলো ও ইসরাইলের মধ্যে বন্দি-বিনিময় চুক্তির আওতায় ইসরাইলি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। ইসরাইলি সেনারা পশ্চিম তীরের বেথেলহাম থেকে তাঁকে গ্রেফতার করেছিল ১৯৮৫ সালে। সেই থেকে তিনি এতদিন ইসরাইলি কারাগারেই ছিলেন। ফলে ইসরাইলি কারাগারে তিনিই সবচেয়ে পুরনো ফিলিস্তিনি বন্দি হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন।  

রাআদ আস সা'দির পরিচয়: 

রাআদ আস সা'দি পশ্চিম তীরের জেনিন অঞ্চলের সবচেয়ে পুরনো বন্দি যিনি গতকাল শনিবার ৩৬ বছর পর ইসরাইলি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। প্রথম ফিলিস্তিনি ইন্তিফাদা বা গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংগ্রামী ভূমিকার কারণে দুই বছর ধরে ইসরাইলের গ্রেফতারি পরোয়ানার আওতায় তাঁকে খুঁজছিল ইসরাইলি পুলিশ। ইহুদিবাদী দখলদাররা তাঁর ওপর চাপ সৃষ্টির লক্ষ্যে তাঁর বাবাকে বন্দি করে ও বহু বার তাঁদের পারিবারিক বাসভবনে হামলা চালায়। অবশেষে ১৯৮৯ সালের আগস্ট মাসে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় তাকে গ্রেফতার করে ইসরাইলি পুলিশ। তাকে দু'টি যাবজ্জীবন ও আরও বিশ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। কারাগারে থাকা অবস্থায় মা, ভাই ও পিতাকে হারান। ইহদিবাদীরা নিয়মিত তাঁর ওপর নির্যাতন চালানোর কারণে ও বিভিন্ন কারাগারে বদলি হওয়ার কারণে বিভিন্ন জটিল রোগের শিকার হন এবং কয়েকবার কারাগারের ভেতরেই তাঁর অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। 

ইসরাইলি দৈনিক হিউম এক প্রতিবেদনে এটা স্বীকার করেছে যে  শনিবারে মুক্তিপ্রাপ্ত ২০০ ফিলিস্তিনি বন্দির বেশিরভাগই ছিলেন নেতৃস্থানীয় ও প্রধান সংগ্রামী এবং তাঁদেরকে মুক্তি দিতে ইসরাইল বাধ্য হয়েছে।

গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধ-বিরতি শুরু হয় শত শত ফিলিস্তিনি বন্দির বিনিময়ে পর্যায়ক্রমে ৩৩ জন ইসরাইলি বন্দি মুক্তির শর্তের আলোকে। যুদ্ধ বিরতির প্রথম পর্যায় ৪২ দিন স্থায়ী হবে ৩৩ জন ইসরাইলি বন্দিকে জীবিত বা মৃত মুক্তি দেয়ার বিনিময়ে এক হাজার ৭০০ থেকে দুই হাজার ফিলিস্তিনি বন্দিকে ইসরাইলি কারাগার  থেকে মুক্তি দেয়ার কথা রয়েছে।  

যুদ্ধ-বিরতির প্রথম দিনেই তিন ইসরাইলি নারী বন্দিকে মুক্তি দেন ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন এবং ইসরাইলি কারাগার থেকে মুক্তি পান ৯০ জন নারী ও শিশু ফিলিস্তিনি বন্দি। 

যুদ্ধবিরতির এই সমঝোতা হামাসসহ ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলনের শক্তিমত্তা ও সক্ষমতা তুলে ধরেছে এবং বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা ও সামাজিক মাধ্যমের পোস্টগুলোতে ২০২৩ সালের ফিলিস্তিনি অভিযানের ভয়াবহ আঘাত যে পুরোপুরি হামাস ও প্রতিরোধ আন্দোলনের পক্ষে সমীকরণ সৃষ্টি করেছে তা উল্লেখ করা হচ্ছে।

আল-জাজিরা টেলিভিশন 'মা খাফি আ'যম'  তথা 'যা গোপন তা আরও বড়' শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের নানা খুঁটিনাটি ও গোপন দিক, বিশেষ করে হাতাহাতি লড়াইয়ে হামাসের প্রধান নেতা শহীদ ইয়াহিয়া সিনাওয়ারের অংশগ্রহণের প্রামাণ্য চিত্র প্রকাশ করেছে। ইয়াহিয়া আসসিনাওয়ার ছিলেন মুহাম্মাদ আততুস ও রায়াদ আস সা'দি'র মতই ইসরাইলি কারাগারে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া বন্দি।  শহীদ সিনাওয়ারকে ১৯৮৯ সালে চারবার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয় এবং তিনি ২২ বছর ধরে বন্দি ছিলেন। ২০১১ সালে ইসরাইলের সঙ্গে হামাসের যুদ্ধ-বিরতি চুক্তির আওতায় ইসরাইলি সেনা গিলআদ শালিতের মুক্তির বিনিময়ে যে দশ হাজার ২৭ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেয়া হয় সেইসব বন্দির অন্যতম ছিলেন শহীদ সিনাওয়ার। 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়