শিরোনাম
◈ ব্রাহ্মণবাড়িয়া নবীনগরে যুবদল নেতা গুলিবিদ্ধ ◈ মিরপুরে কমিউনিটি সেন্টারে ভয়াবহ আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৬ ইউনিট ◈ শান্তি ও সহযোগিতার আকাঙ্ক্ষা পূরণে জাতিসংঘকে হতে হবে আরও গতিশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক: ড. মুহাম্মদ ইউনূস ◈ ওমরাহ যাত্রায় এখন থেকে রিটার্ন টিকিট বাধ্যতামূলক: নতুন নির্দেশনায় কড়াকড়ি সৌদি কর্তৃপক্ষের ◈ আগামী নির্বাচনে যাদের জয়ী হবার কোনো সম্ভবনা নেই তারাই নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে : মির্জা আব্বাস ◈ পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়ন ছাড়া বিকল্প নেই: সুপ্রদীপ চাকমা ◈ শাহবাগে আর্থিক লেনদেন বিরোধে এনসিপি'র দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ১ ◈ তারেক রহমান ফিরবেন নভেম্বরে, চলতি মাসেই ২০০ আসনে একক প্রার্থী চূড়ান্ত করবে বিএনপি: সালাহউদ্দিন আহমদ ◈ ‘ভোটকেন্দ্রে থাকবে বডি ক্যামেরা ও সিসিটিভি, উড়বে ড্রোন’ ◈ সাবেক স্ত্রীকে ‘মোটা’ বলায় আদালতে জরিমানা, স্বামীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ

প্রকাশিত : ২১ অক্টোবর, ২০২৫, ০৬:৫৬ বিকাল
আপডেট : ২৩ অক্টোবর, ২০২৫, ০৬:০০ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মুখের যত্নে টুথব্রাশ, কিন্তু এখানেই জন্ম নিচ্ছে বিপজ্জনক জীবাণু

আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের অপরিহার্য বস্তু টুথব্রাশ। দাঁত পরিষ্কারের এই উপকরণটি আসলে লাখ লাখ জীবাণু—ছত্রাক ও ভাইরাসের একটি আখড়া! দাঁতের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে আমরা দিনে সাধারণত দুবার এটিকে মুখে দিলেও, বিজ্ঞান জানাচ্ছে, আপনার ব্যবহৃত টুথব্রাশটি ১০ লাখ থেকে ১ কোটি ২০ লাখ পর্যন্ত ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকের আবাসস্থল!

গবেষণা অনুসারে, ব্রাশের আর্দ্র প্লাস্টিক তন্তুগুলোতে প্রতিনিয়ত জমা হয় মুখগহ্বরের লালা, ত্বকের কোষ, খাবারের কণা এবং পরিবেশ থেকে আসা জীবাণু। এই ক্ষুদ্র জীবজগৎ আমাদের হার্পিস ভাইরাস, ক্যানডিডা ইস্ট এবং শৌচাগারের ফ্লাশ থেকে আসা ব্যাকটেরিয়া বহন করতে পারে।

জার্মানির রাইন-ওয়াল ইউনিভার্সিটি অব অ্যাপ্লাইড সায়েন্সেসের অণুজীব বিজ্ঞানী ড. মার্ক-কেভিন জিন-এর মতে, টুথব্রাশে জীবাণু আসার প্রধান তিনটি উৎস হলো—ব্যবহারকারীর মুখ, ব্যবহারকারীর ত্বক এবং ব্রাশটি যেখানে রাখা হয় সেই পরিবেশ (বাথরুম)।

সাধারণত মুখের জীবাণু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ক্ষতিকারক নয়। তবে এগুলোর মধ্যে লুকিয়ে থাকে অনেক বিপজ্জনক অতিথি! যেসব ক্ষতিকর জীবাণু টুথব্রাশে জমে এর মধ্যে অন্যতম হলো:

দাঁত ক্ষয়ের কারণ: দাঁত ক্ষয় এবং মাড়ির প্রদাহ সৃষ্টিকারী স্ট্রেপটোকক্কি এবং স্ট্যাফাইলোকক্কি।

পেটের সংক্রমণ: ই-কোলাই, সিউডোমোনাস এরুগিনোসা এবং এন্টারোব্যাকটেরিয়া-এর মতো জীবাণু, যা সাধারণত পেটের সংক্রমণ ও খাদ্য বিষক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত।

হাসপাতালের জীবাণু: ক্লেবসিয়েলা নিউমোনিয়া-এর মতো রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণুও টুথব্রাশে পাওয়া গেছে। এগুলো সাধারণত হাসপাতালে সংক্রামিত রোগের সাধারণ কারণ।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বাথরুম উষ্ণ ও আর্দ্র থাকায় এটি জীবাণুর বংশবৃদ্ধির জন্য আদর্শ স্থান। সবচেয়ে উদ্বেগের কারণটি হলো—শৌচাগার।

যখনই ফ্লাশ করা হয়, তখন মল ও পানির সূক্ষ্ম কণার (অ্যারোসল) একটি মেঘ ১ দশমিক ৫ মিটার (৫ ফুট) পর্যন্ত বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। এই স্প্রে-এর সঙ্গে ফ্লু, কোভিড-১৯ এবং নরোভাইরাসের মতো সংক্রামক ভাইরাস এবং মলে থাকা ব্যাকটেরিয়া বহন করে। আপনার টুথব্রাশ যদি শৌচাগারের কাছাকাছি থাকে, তাহলে এই দূষণ ব্রাশের তন্তুগুলোতে জমা হওয়ার ঝুঁকি থাকে। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হলো, ফ্লাশ করার আগে কমোড সিট নামিয়ে দেওয়া উচিত।

ঝুঁকি কতটা এবং প্রতিকার কী?

শিকাগোর নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির গবেষক ড. এরিকা হার্টম্যান বলেছেন, বেশির ভাগ সুস্থ মানুষের ক্ষেত্রে টুথব্রাশ থেকে অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি খুব কম। তবে যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল, তাদের জন্য এই জীবাণুগুলো বড় উদ্বেগের কারণ হতে পারে। যেমন:

অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী জীবাণু: ইতালির এক গবেষণায় দেখা গেছে, পরীক্ষিত টুথব্রাশগুলোর শতভাগেই একাধিক অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়া উপস্থিত ছিল, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মধ্যম উদ্বেগের বিষয়।

পরিষ্কার রাখার সহজ উপায়

চিকিৎসা ও দন্ত্যচিকিৎসকেরা টুথব্রাশ যতটা সম্ভব পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য কয়েকটি সহজ কৌশল অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন:

১. বাতাসে শুকানো: ব্যবহারের পর টুথব্রাশের মাথা ঢেকে না রেখে সোজা করে, উন্মুক্ত স্থানে রাখুন। কভার বা বদ্ধ পাত্র ব্যবহার করলে সেখানে আর্দ্রতা জমে জীবাণুর বৃদ্ধি ঘটে।

২. দূরে রাখুন: শৌচাগার থেকে যতটা সম্ভব দূরে টুথব্রাশ রাখুন।

৩. ডিসইনফেকশন: সপ্তাহে একবার ৫ থেকে ১০ মিনিটের জন্য ব্রাশের মাথা অ্যান্টিসেপটিক মাউথওয়াশ-এর (যেমন ০.১২% ক্লোরহেক্সিডিন বা ০.০৫% সিটিলপাইরিডিনিয়াম ক্লোরাইডযুক্ত দ্রবণ) মধ্যে চুবিয়ে রাখা যেতে পারে। কেউ কেউ ১ শতাংশ ভিনেগার দ্রবণে ডুবিয়ে রাখারও পরামর্শ দেন।

৪. সময়মতো পরিবর্তন: দাঁতের স্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্থাগুলো প্রতি তিন মাস বা ১২ সপ্তাহ অন্তর টুথব্রাশ বদলানোর পরামর্শ দেয়। ড. জিনের গবেষণা অনুযায়ী, ব্যবহারের ১২ সপ্তাহ পর ব্রাশে ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছায়। এ ছাড়া ব্রাশের তন্তুগুলো ক্ষয়প্রাপ্ত হলে দ্রুত বদলে ফেলা উচিত।

সূত্র: বিবিসি

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়