প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সালে বিশ্বব্যাপী মোট ৪৩ কোটি ৬০ লাখ টন প্লাস্টিক উৎপাদন হয়েছে। এর বড় অংশই ব্যবহারের পর বর্জ্যে পরিণত হয়েছে, যা বাস্তুতন্ত্র, জনস্বাস্থ্য ও খাদ্য ব্যবস্থায় মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। বিশেষ করে উপকূলীয় ও ছোট দ্বীপ রাষ্ট্রগুলোয় এর প্রভাব পড়েছে বেশি।
২০২৩ সালে বৈশ্বিক প্লাস্টিক বাণিজ্য ১ দশমিক ১ ট্রিলিয়ন বা ১ লাখ ১০ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়ে যায়, যা বৈশ্বিক পণ্য বাণিজ্যের ৫ শতাংশের সমান। তবে এ বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিকের প্রায় ৭৫ শতাংশই পরিণত হয়েছে বর্জ্যে। যার বড় অংশ পরিবেশ ও সাগরে মিশে মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়েছে। এমন তথ্য উঠে এসেছে জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়নবিষয়ক সংস্থা আঙ্কটাডের নতুন প্রতিবেদনে। খবর আনাদোলু।
গত তিন দশকে প্লাস্টিক ও রাবারজাত পণ্যের গড় আমদানি শুল্ক ৩৪ থেকে কমে ৭ দশমিক ২ শতাংশে নেমে এসেছে। অন্যদিকে কাগজ, বাঁশ, প্রাকৃতিক তন্তু ও সামুদ্রিক শৈবালের মতো টেকসই পণ্যে এখনো ১৪ দশমিক ৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ হচ্ছে। এ বৈষম্য পরিবেশবান্ধব পণ্যে বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত করছে বলে জানিয়েছে আঙ্কটাড।
সংস্থাটি জানিয়েছে, প্লাস্টিক দূষণ, জীববৈচিত্র্য ধ্বংস ও জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত হলেও এখন পর্যন্ত প্লাস্টিকের উৎপাদন, নকশা, বাণিজ্য ও নিষ্পত্তি নিয়ে কোনো বৈশ্বিক চুক্তি নেই। বর্তমানে ব্যবহৃত ৯৮ শতাংশ প্লাস্টিকের উপকরণ জীবাশ্ম জ্বালানি।
বিপজ্জনক প্লাস্টিক নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন দেশ পণ্যের মান, লেবেলিং ও নিষেধাজ্ঞার মতো নন-ট্যারিফ (এনটিএম) নীতিমালা চালু করেছে। তবে নিয়মের বৈচিত্র্য ও জটিলতা উন্নয়নশীল দেশের ক্ষুদ্র রফতানিকারকদের জন্য সমস্যা তৈরি করছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৩ সালে প্লাস্টিকবিহীন প্রাকৃতিক বিকল্প পণ্যের বাণিজ্যের আকার ছিল ৪৮ হাজার ৫০০ কোটি ডলার। এক্ষেত্রে উন্নয়নশীল দেশগুলোয় বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। তবে উচ্চ শুল্ক, বাজারে প্রবেশে প্রতিবন্ধকতা ও দুর্বল নীতিগত প্রণোদনার কারণে বিকল্প পণ্য খাতের ব্যাপক প্রসার ঘটছে না।
এ প্রেক্ষাপটে টেকসই বিকল্প উৎসাহিত করতে একাধিক প্রস্তাব দিয়েছে আঙ্কটাড। এর মধ্যে রয়েছে ট্যারিফ ও নন-ট্যারিফ নীতির সংস্কার, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও পুনর্ব্যবহারযোগ্য অবকাঠামোয় বিনিয়োগ এবং বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও), জলবায়ু সনদ (ইউএনএফসিসিসি), বাসেল কনভেনশনসহ আঞ্চলিক চুক্তির মধ্যে সমন্বিত নীতি প্রণয়ন। বণিক বার্তা