জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র স্থাপনের ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপারের (এসপি) ভূমিকা বাদ দিয়ে নিজস্ব কর্মকর্তাদের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সোমবার (৩০ জুন) ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র স্থাপন ও ব্যবস্থাপনা নীতিমালা-২০২৫’ গেজেট আকারে প্রকাশ করে এই পরিবর্তন এনেছে সংস্থাটি।
নতুন নীতিমালায় ইভিএমের জন্য পৃথক কক্ষ নির্ধারণের পূর্ববর্তী ধারা থেকেও সরে এসেছে ইসি। সব মিলিয়ে এবার পুরো ভোটকেন্দ্র ব্যবস্থাপনায় ইসির মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারাই মূল দায়িত্ব পালন করবেন।
এতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) জন্য কক্ষ নির্ধারণের বিষয়টিও তুলে দেওয়া হয়েছে।
ভোটকেন্দ্র স্থাপন ইসির কাজ। এত দিন ইসির কর্মকর্তারাই এটি করে আসছিলেন। কিন্তু ২০২৩ সালের ভোটকেন্দ্র নীতিমালায় ভোটকেন্দ্র নির্ধারণের ক্ষেত্রে ডিসি ও এসপিদের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করেছিল কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন। এ কমিটির মাধ্যমেই ভোটকেন্দ্র স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এ নিয়ে সে সময়ই অনেক সমালোচনা হয়। এমনকি ইসি কর্মকর্তাদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়।
আউয়াল কমিশনের সময় করা নীতিমালায় বলা হয়েছিল, কোথায় কোথায় ভোটকেন্দ্র হবে, তার খসড়া তালিকা তৈরির জন্য উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) আহ্বায়ক করে একটি ৫ সদস্যের কমিটি থাকবে। জেলা পর্যায়ে থাকবে ডিসির নেতৃত্বে ৭ সদস্যের কমিটি। উপজেলা কমিটির তৈরি করা ভোটকেন্দ্রের খসড়া তালিকা মহানগর বা জেলা কমিটিতে পাঠানো হবে। এই কমিটি দৈবচয়নের ভিত্তিতে ভোটকেন্দ্র সরেজমিন তদন্ত করে মতামত দেবে। এই মতামতসহ খসড়া তালিকা নির্বাচন কমিশনে পাঠাবেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা।
ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, বর্তমান কমিশনের অধীন করা নতুন নীতিমালায় উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে কমিটি করার বিধান বাদ দেওয়ায় ভোটকেন্দ্র স্থাপনের কাজটি ইসির মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের হাতে ফিরল।
গত ২১ মে পঞ্চম কমিশন সভায় বিষয়টি তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় এএমএম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন কমিশন।
ওই সভা শেষে নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, ভোট কেন্দ্র স্থাপনে যে কমিটি ছিল এবার তা বিলুপ্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া ইভিএমের বিষয়টিও আমরা বাদ দিয়েছি।
এবারের নীতিমালায় আগের মতোই গড়ে তিন হাজার ভোটারের জন্য একটি কেন্দ্র এবং ৫০০ পুরুষের জন্য একটি কক্ষ ও ৪০০ নারীর জন্য একটি কক্ষ রাখা হয়েছে।
২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ৪২ হাজারের বেশি ভোটকেন্দ্র ছিল। এবার ভোটার সংখ্যা পৌনে ১৩ কোটির কাছাকাছি পৌঁছতে পারে। তাই বাড়তে পারে ভোটকেন্দ্রও।