শিরোনাম
◈ ক্যালিফোর্নিয়ায় সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে তামাকের মতো সতর্কবার্তা প্রদর্শনের বিল অনুমোদন ◈ লন্ডনে এক লাখেরও বেশি মানুষের অভিবাসনবিরোধী সমাবেশ, পুলিশের সঙ্গে সহিংস সংঘর্ষে আহত ২৬ কর্মকর্তা ◈ কক্সবাজারে স্ত্রীকে ধর্ষণের পর তার সামনে স্বামীকে হত্যা ◈ এক ম্যাচে দুই ভাইয়ের গোল, ইন্টার মিলান‌কে হারা‌লো জুভেন্টাস ◈ আজ থেকে চাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ শুরু, ভোট ১২ অক্টোবর ◈ বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি ২২% বৃদ্ধি, চীনের হারানো অর্ডার এলো দেশে ◈ বিরল দৃশ্যের অবতারণা, কাবা ঘরের ওপর নেমে এলো চাঁদ ◈ ফজলুর রহমানকে গালি দিয়ে স্লোগান দেওয়া সেই ফারজানা ১০ লাখ টাকা চাঁদাবাজি মামলায় গ্রেপ্তার (ভিডিও) ◈ মাহফুজ আলমের ওপর হামলা চেষ্টা, লন্ডন পুলিশকে ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান অন্তর্বর্তী সরকারের ◈ সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন আর নেই

প্রকাশিত : ২৮ জুলাই, ২০২৫, ১১:১২ রাত
আপডেট : ০৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৪:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : মনজুর এ আজিজ

বকেয়ায় কয়লা আমদানি করতে না পারায় বন্ধের পথে বাঁশখালী বিদ্যুৎকেন্দ্র!

মনজুর এ আজিজ : কয়লার মজুদ ৫ আগস্টের মধ্যেই ফুরিয়ে যাবে। সে কারণে কয়লা আমদানির জন্য বকেয়া পাওনা হিসেবে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) কাছে কমপক্ষে ৮০০ কোটি টাকা চেয়ে চিঠি দিয়েছে কোম্পানিটি। বাঁশখালী বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান এসএস পাওয়ার-১ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ট্যান ঝেলিং বকেয়া বিলের জন্য বিপিডিবির চেয়ারম্যান বরাবর দুই দফায় লিখিত চিঠি দিয়েছেন বলে জানা গেছে। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে- বিল না পাওয়ায় কয়লা আমদানি করতে পারছে না বাঁশখালী ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। এতে ৫ আগস্টের পর নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হবে না। 

চিঠিতে তিনি আরও লিখেছেন- জুন ২০২৫ পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিল বাবদ ৩ হাজার ১৬৬ কোটি ১৫ লাখ টাকা বকেয়া পড়েছে। অবিলম্বে কমপক্ষে ৮০০ কোটি টাকা বিল পরিশোধ করা না হলে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হবে। ২৭ জুলাই তারিখে দেওয়া ওই পত্রে বলা হয়েছে, বর্তমানে যে কয়লা মজুদ রয়েছে তা দিয়ে আগামী ৫ আগস্ট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ দেওয়া যাবে। আপনার দফতর নিশ্চয়ই অবগত রয়েছে বিদেশ থেকে কোনো মাদার ভেসেল নিশ্চিত করতে হলে কমপক্ষে ১ মাস পূর্বে এলসি নিশ্চিত করতে হয়। অন্যদিকে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে এলসি ইস্যুর জন্য ১০০ শতাংশ এলসি মার্জিন জমা রাখতে হয়। বারংবার অর্থ প্রাপ্তির জন্য তাগাদা প্রদান করা সত্ত্বেও অর্থের অভাবে কয়লার কোনো বুকিং দিতে পারিনি।

এমন পরিস্থিতিতে আগামী ৫ আগস্ট বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি কয়লার অভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি খুচরা যন্ত্রাংশ আমদানি অব্যাহত রাখা দরকার। চিঠিতে চুক্তির কথা মনে করে দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে ১০ লাখ মার্কিন ডলার বা সমতুল্য ১২ কোটি ২০ লাখ (ডলার ১২২ টাকা) টাকা পাওনা থাকলে বিপিডিবি কর্তৃক কোম্পানির বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ গ্রহণের অধিকার রহিত হয়ে যাবে। কোম্পানি বিপিডিবিকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করার বাধ্যবাধকতা থেকে মুক্ত থাকবে। তবে বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ থাকাকালীন সময়ে ক্যাপাসিটি পেমেন্ট প্রাপ্য হবে। এর আগে, ৭ জুলাই বিল পেমেন্ট দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছিলেন ট্যান ঝেলিং। সেই চিঠির পর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করার হতাশা ব্যক্ত করেছেন পরের চিঠিতে।

এদিকে প্রতিদিনই কমছে দেশীয় গ্যাসের উৎপাদন। যার প্রভাবে গ্যাস ভিত্তিক অনেক বিদ্যুৎকেন্দ্র বেকার বসে থাকছে। সেই ঘাটতি সামাল দিতে সাশ্রয়ী কয়লার দিকে ঝুঁকে রয়েছে বাংলাদেশ। এমন অবস্থায় বাঁশখালীর মতো বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেলে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পুরোদমে উৎপাদনে থাকা অবস্থায়ও সারাদেশে লোডশেডিংয়ের খবর পাওয়া যাচ্ছে। বন্ধ হয়ে গেলে কি হতে পারে তা সহজেই অনুমেয়।

বিদ্যুৎ উৎপাদনে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে সাশ্রয়ী বিবেচনা করা হয় গ্যাসকে। প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাস খরচ হয় ৪ টাকার মতো, আর কয়লা দিয়ে উৎপাদনে খরচ হয় ৭ টাকার মতো। আবার কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর মধ্যে সাশ্রয়ী হিসেবে পরিচিত বঙ্গোপসাগরের কূলঘেঁষে বাঁশখালীর (চট্টগ্রাম) গন্ডামারা এলাকায় অবস্থিত বাঁশখালী ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি। যে কারণে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের লিস্টকস্ট জেনারেশনের তালিকায় সবার আগে থাকে বাঁশখালীর নাম। প্রতি ইউনিট বিদ্যুতে জ্বালানি খরচ হয় প্রায় ৭ টাকার মতো। একই পরিমাণ বিদ্যুৎ ফার্নেস অয়েল দিয়ে সরবরাহ দিতে গেলে পড়বে প্রায় ১৮ থেকে ২০ টাকার মতো।

১৩২০ মেগাওয়াট সক্ষমতার বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি পুরোমাত্রায় উৎপাদন করলে মাসে প্রায় ৯৫ কোটি ইউনিট বিদ্যুৎ দিতে পারে। একই পরিমাণ বিদ্যুৎ কয়লার পরিবর্তে ফার্নেস অয়েল থেকে পেতে হলে সরকারকে বাড়তি ৯৫০ কোটি টাকা গুণতে হবে। যা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জন্য বিশাল চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে। 

এ প্রসঙ্গে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কোল পাওয়ার জেনারেশন পরিদপ্তরের পরিচালক মাকসুদুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, বকেয়ার কারণে বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা না। বিষয়টি ফাইন্যান্স বিভাগের, তারা ভালো বলতে পারবে। তবে আমরাতো চাই তারা নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ অব্যাহত রাখুক। কোনো কারণে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে গেলে বিকল্প কোনো ব্যবস্থা আছে কি-না। এমন প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান তিনি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়