বর্তমানে দেশের ৩২টি বিমা কোম্পানি উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানিয়েছেন বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান এম আসলাম আলম। এরমধ্যে ১৫টি লাইফ ইনস্যুরেন্স ও ১৭ টি নন-লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, ১৫ টি লাইফ ইনস্যুরেন্স উচ্চ ঝুঁকিতে থাকার পাশাপাশি আরও ১৫টি লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি মধ্যম ঝুঁকিতে রয়েছে। মাত্র ছয়টি লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি স্থিতিশীল পর্যায়ে রয়েছে।
তবে আলম নন-লাইফের ক্ষেত্রে লাইফের মতো বিস্তারিত তথ্য জানাননি তিনি।
এম আসলাম আলম বলেন, উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা কোম্পানিগুলোর সংকট আর নিরসনের পর্যায়ে নেই। তবে মধ্যম ঝুঁকির কোম্পানিগুলোর সমস্যা নিরসনযোগ্য।
আজ দুপুরে মতিঝিলে আইডিআরএ-এর প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য জানান।
উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা বিমা কোম্পানিগুলোর তালিকা চাওয়া হলে আইডিআরএ চেয়ারম্যান বলেন, 'আমাদের অভ্যন্তরীণ কিছু মাপকাঠি রয়েছে সেই বিবেচনাতেই ঝুঁকিপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের তালিকা তৈরি করা হয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, বিমা খাত একটা সংকটের মধ্যে রয়েছে। সময় মতো বিমা দাবি পরিশোধ না করায় এ খাতের প্রতি মানুষের আস্থাহীনতা বেড়েছে। স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ছাড়া আস্থা বাড়বে না।
আসলাম আলম আরও বলেন, বিমা খাতের প্রতি মানুষের আস্থাহীনতা তৈরি হওয়ার পেছনে আইডিআর-এর ব্যর্থতা রয়েছে। বর্তমানে জীবন বিমার ক্ষেত্রে ৪৫ শতাংশ এবং নন-লাইফ বিমার ক্ষেত্রে প্রায় ৪৭ শতাংশ দাবি অনিষ্পন্ন অবস্থায় রয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও জানান, ২০২৪ সাল শেষে লাইফ ইনস্যুরেন্স খাতে ১৩ লাখ গ্রাহকের ৪,৪১৪ কোটি টাকার দাবি অনিষ্পন্ন রয়েছে। এ ছাড়া বিগত ১৪ বছরে ৫৪ লাখ পলিসি বাতিল হয়েছে। বর্তমানে চালু থাকা পলিসির সংখ্যা ৭১ লাখ।
তিনি বলেন, আইডিআরএ শুধু ২০২৪ সালে ২৪ হাজার ৮৫২টি অভিযোগ পেয়েছে। তবে জনবল সংকটের কারণে সব অভিযোগ তদারকি করা সম্ভব হচ্ছে না।
আসলাম আলম আরও বলেন, বিমা খাতের প্রতি মানুষের আস্থা বাড়াতে বিভিন্ন আইন ও বিধি সংশোধন করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
কোম্পানিগুলো সময়মতো গ্রাহকের বিমা দাবির টাকা পরিশোধ না কারায় এ খাত চরম আস্থাহীনতার মধ্যে রয়েছে বলেও জানান তিনি। এ কারণে বিমা খাত পিছিয়ে পড়ছে বলে অভিমত আইডিআরএ চেয়ারম্যানের।
দেশে বর্তমানে ৮২টি বিমা কোম্পানি রয়েছে, এরমধ্যে ৩৬টি লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি ও ৪৬টি নন-লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি। উৎস: ডেইলি স্টার।