শিরোনাম
◈ ডিজিটাল বাংলাদেশে নতুন মাইলফলক: সার্টিফিকেট সত্যায়ন এখন অনলাইনেই (ভিডিও) ◈ রাতের আকাশে আগুন! ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রে কাঁপছে ইসরায়েল ◈ ইসরায়েলে আঘাত করা ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে যা জানা গেল ◈ অধ্যাপক ইউনূসের যুক্তরাজ্যে 'সরকারি সফর' থেকে কী অর্জন হলো ◈ ইরানে বিদ্রোহের ইঙ্গিত সাবেক যুবরাজ রেজা পাহলভির: ইসরায়েল-যুদ্ধ পরবর্তী ‘রেজিম চেঞ্জ’ পরিকল্পনার আভাস ◈ ভুটানসহ আরও ৩৬ দেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে, বাকি দেশ গুলোর নাম হলো ◈ ইরানে ইসরায়েলের হামলার আসল কারণ যা জানাগেল! ◈ ইরান প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য হটলাইন চালু ◈ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য করোনা সংক্রমণ রোধে বিশেষ নির্দেশনা ◈ যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নবায়নে বাংলাদেশিদের জন্য দুঃসংবাদ

প্রকাশিত : ২৯ এপ্রিল, ২০২৫, ০৭:৫৭ বিকাল
আপডেট : ১১ জুন, ২০২৫, ০৯:০০ সকাল

প্রতিবেদক : মনজুর এ আজিজ

বিদ্যুতের দামে সমতা চায় ডেসকো-ওজোপাডিকো

মনজুর এ আজিজ : লোকসান কমাতে পাইকারি বিদ্যুতের মূল্যহার সমন্বয়ের আবেদন করেছে দুই বিতরণ কোম্পানি। অন্য বিতরণ কোম্পানির তুলনায় ৩৩ কেভিতে থাকা বেশি দর কমিয়ে সমান করার আবেদন করেছে তারা। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে (বিইআরসি) লিখিত আবেদন দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিইআরসির সদস্য (বিদ্যুৎ) বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহিদ সারওয়ার।

আবেদন করা কোম্পানি দু’টি হচ্ছে ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (ডেসকো) ও ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো)। কোম্পানি দু’টি ৩৩ কেভিতে পাওয়া বিদ্যুতের দাম অন্যান্য কোম্পানির সমান করার প্রস্তাব করেছে।

ঢাকা শহরের উত্তরাংশে বিতরণের দায়িত্বে থাকা ডেসকো, ঢাকার দক্ষিণাংশের বিতরণ কোম্পানি ডিপিডিসির সমান করা, আর খুলনা, বরিশাল অঞ্চলের বিতরণের দায়িত্বে থাকা ওজোপাডিকো রাজশাহী ও রংপুর অঞ্চলের বিতরণ কোম্পানি নেসকোর সমান বিল করার আবেদন করেছে। চিঠিতে তারা বলেছে, তাদের গ্রাহকদের যে ধরণ ও স্তর একই ওই কোম্পানি দুটির। তাই পাইকারি বিদ্যুতের দর একই সমান হওয়া উচিত।

চিঠিতে কোম্পানিগুলো বিগত বছরের লোকসানের বিষয়টি সামনে এনেছে। ডেসকো গত অর্থবছরে ৫০৫ কোটি ৫৬ টাকা, অন্যদিকে ওজোপাডিকো গত অর্থবছরে ২০৮ কোটি টাকা নিট লোকসান হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে।
২০১৭ সাল থেকে বিদ্যুতের পাইকারি দরে এই পার্থক্য বিদ্যমান। তখন কোম্পানিগুলোর রাজস্ব চাহিদা এবং বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের রাজস্ব বিবেচনায় ওই আদেশ দেওয়া হয়। তখন ডিপিডিসি কিছুটা পিছিয়ে থাকায় তুলনামূলক তাদের দাম কম। একইভাবে নতুন কোম্পানি নেসকোর কিছুটা বাড়তি সুবিধা দেওয়া হয় স্বনির্ভর হওয়ার জন্য। তারপর থেকে বিভিন্ন সময়ে দাম বৃদ্ধি হলেও কোম্পানি ভেদে পার্থক্য রয়ে গেছে।

৩৩ কেভিতে ডিপিডিসির তুলনায় ইউনিট প্রতি প্রায় ৩ পয়সা হারে বাড়তি বিল দিচ্ছে ডেসকো। ডিপিডিসি ইউনিট প্রতি বিল দিচ্ছে ৮.৫৬০০ টাকা হারে। একই স্তরে ডেসকোকে পরিশোধ করতে হচ্ছে ৮.৫৮৮০ দরে। অন্যদিকে নেসকোর তুলনায় ৪১ পয়সা হারে বেশি বিল দিতে হচ্ছে ওজোপাডিকোকে। নেসকো ইউনিট প্রতি ৭.০৪ টাকা হারে বিল দিলেও ওজোপাডিকোকে দিতে হচ্ছে ৭.৪৬ টাকা।

এদিকে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) ইউনিট প্রতি দর ৫.১৭ টাকা থেকে ৬৬ শতাংশ বাড়িয়ে ৮.৫৮ টাকা করার আবেদন করেছিল। বিইআরসি ২০২২ সালের ১৮ মে সেই প্রস্তাবের ওপর গণশুনানি গ্রহণ করে। বিপিডিবির দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব ১৩ অক্টোবর নাকচ করে দেয় বিইআরসি। রিভিউ আবেদন জমা দিলে পাইকারি দাম প্রতি ইউনিট (১৯.৯২ শতাংশ) ৫.১৭ টাকা বাড়িয়ে ৬.২০ টাকা নির্ধারণ করে বিইআরসি।

পাইকারি দাম বৃদ্ধির পরেই গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর আবেদন জমা দেয় বিতরণ কোম্পানিগুলো। সেই প্রস্তাবের ওপর ২০২৩ সালের ৮ জানুয়ারি গণশুনানি গ্রহণ করে বিইআরসি। শুনানি পরবর্তী লিখিত মতামত দেওয়ার জন্য ১৫ জানুয়ারি সময় নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে ১২ তারিখের মধ্যে দাম বাড়ানোর চাপ দেওয়া হয়। বিইআরসির তৎকালীন কমিশন এতে সায় না দিলে নির্বাহী আদেশে ১২ জানুয়ারি ৫ শতাংশ দাম বাড়িয়ে দেয় সরকার। এরপর ফেব্রুয়ারি মাসে আরেক দফায় পাইকারি ও গ্রাহক পর্যায়ে দাম বাড়ানো হয় নির্বাহী আদেশে।

বিতরণ কোম্পানিগুলো তারপর থেকেই বলে আসছে, দুই দফায় যে হারে পাইকারি দাম (১৯.৯২ ও ৫ শতাংশ) বেড়েছে, সে হারে খুচরা দাম বাড়েনি। জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে দুই দফায় ৫ শতাংশ হারে দাম বাড়ানো হয়েছে। এতে তাদের লোকসান দিতে হচ্ছে। তারা গ্রাহক পর্যায়ে দাম বাড়ানোর দাবি জানিয়ে আসছেন।

এ প্রসঙ্গে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোহাম্মদ হায়দার আলী গণমাধ্যমকে বলেন, নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানির সঙ্গে আমাদের গ্রাহকের প্যাটার্ন একই কিন্তু আমাদের ৩৩ কেভিতে বিদ্যুতের পাইকারি দর তাদের তুলনায় বেশি। নেসকো ইউনিট প্রতি ৭.০৪ টাকা একই ধাপে আমাদেরকে পরিশোধ করতে হচ্ছে ৭.৪৬ টাকা। ওজোপাডিকোর ওই দর ২০২৪ সালের সর্বশেষ নির্বাহী আদেশ অনুযায়ী। ২০২০ সালের আদেশে ৩৩ কেভিতে নেসকোর ইউনিট প্রতি দাম ছিল ৫.০৫ টাকা। তখন ওজোপাডিকোকে পরিশোধ করতে হতো ৫.৩৭ টাকা দরে।

তিনি বলেন, গত অর্থবছরে আমাদের কোম্পানির নিট লোকসান হয়েছে ২০৮ কোটি টাকা। সে কারণে আমরা নেসকোর সমান দর নির্ধারণ করার জন্য বিইআরসিতে চিঠি দিয়েছি। বিইআরসি বলেছে, গণশুনানি ছাড়া ট্যারিফ পরিবর্তন করার কোনো সুযোগ নেই। ট্যারিফ পরিবর্তন চাইলে যথাযথ প্রক্রিয়ায় আবেদন দিতে হবে। আমরা এখনও আবেদন জমা দিইনি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়