মনিরুল ইসলাম : বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমানের সাম্প্রতিক মন্তব্য নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
তিনি বলেছেন, লন্ডনে অনুষ্ঠিত বৈঠককে 'বিশেষ দলের প্রতি অনুরাগ' আখ্যা দেওয়া শোভনীয় নয়, কারণ জামায়াতের সঙ্গেও অতীতে বহুবার বৈঠক হয়েছে।
আজ রোববার নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় আয়োজিত এক দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।
শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেন, "যখন জামায়াতের আমীর সাহেব বলেন লন্ডনের বৈঠক একটি বিশেষ দলের প্রতি অনুরাগ ছিল, এই কথা কি শোভা পায়? কারণ জামায়াতের সঙ্গে কম করে না হলেও দশবার বৈঠক হয়েছে। এককভাবেও অনেক বৈঠক হয়েছে, আবার বাকি রাজনৈতিক দলগুলো নিয়েও বৈঠক হয়েছে। সেখানে তো আমরা কোনো কথা বলিনি।"
মিলাদ মাহফিলে শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে কথা বলেন। তিনি দাবি করেন, বেগম জিয়া প্রকৃতপক্ষে অসুস্থ ছিলেন না, বরং 'ফ্যাসিবাদী' সরকারের মিথ্যা মামলায় দীর্ঘ দিন কারাবন্দী থাকার কারণে শ্যাতশ্যাঁতে পরিবেশে অসুস্থ হয়ে পড়েন। বর্তমানে তিনি চিকিৎসা নিয়ে অনেকটা সুস্থ আছেন বলে জানান এ্যানি।
তিনি আরও বলেন, বেগম জিয়ার পরামর্শ ও উপদেশ গ্রহণ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে তারা 'দেশ গড়ার কাজে নেমে পড়েছেন'।
জুলাই আন্দোলন প্রসঙ্গে এ্যানি বলেন, বিএনপি এই আন্দোলনে শুধু শরিকই ছিল না, গত ১৫ বছরে তাদের নেতাকর্মীরা বহু ত্যাগ স্বীকার করেছেন, কষ্ট সহ্য করেছেন এবং অনেকে গুম হয়েছেন। অসংখ্য নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় তারা বাড়িতে থাকতে পারেননি। এত অত্যাচার সহ্য করেও বিএনপি আন্দোলন থেকে সরে যায়নি এবং খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বে মাঠে ছিল।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, তারেক রহমান শুধু বিএনপি নেতাকর্মীদেরই একত্রিত করেননি, তিনি দেশের সকল স্তরের মানুষকে এবং সব দলের পক্ষ থেকে কথা বলেছেন।
তিনি আরও যোগ করেন, তারেক রহমান দেশের বাইরে আছেন, এটা নতুন কিছু নয়, তাই দেশের বাইরে একটি বৈঠক হওয়ায় এত কৌশল করে কথা বলার প্রয়োজন নেই। তাদের আন্দোলন ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে এবং একটি সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সবাই মিলে এই আন্দোলন করেছেন।
গণতন্ত্রের জন্য ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেন, বিএনপি একটি দায়িত্বশীল দল। এর আগেও বিএনপি বহুবার ক্ষমতায় এসেছে। দেশের প্রেক্ষাপটে আমরা তো বলতেই পারি আগামী বাংলাদেশের বিএনপি নেতৃত্ব দেবে। তবে আমরা বলেছি এক ব্যক্তির শাসন ও এক দলীয় শাসন আমরা করতে চাই না।
তিনি বলেন, গণতন্ত্রের স্বার্থে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। কারণ আমাদের টার্গেট একটি সুন্দর বাংলাদেশ গড়া। আগামী দিনের নির্বাচন কিভাবে সুষ্ঠ করা যায় সে বিষয়ে আমাদের সবার আলোচনা করতে হবে।
অনুষ্ঠানে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ এবং মৎস্যজীবী দলের সাবেক সদস্য সচিব আবদুর রহিমসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।