রাজধানীর মোহাম্মদপুরে লায়লা আফরোজ (৪৮) ও তার মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যা মামলায় মূল অভিযুক্ত গৃহকর্মী আয়েশা এবং তার স্বামী রাব্বীকে ঝালকাঠির নলছিটি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের পর আয়েশা স্বামী রাব্বীর কাছে বিষয়টি জানালে রাব্বী তাকে পালাতে সহায়তা করেন বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। তবে পরে রাব্বীর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই আয়েশাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়।
তেজগাঁও বিভাগের এডিসি মোহাম্মাদ জুয়েল রানা জানান, প্রথমে ঢাকার সাভার এলাকা থেকে আয়েশার স্বামী রাব্বীকে আটক করা হয়। তার তথ্য অনুযায়ী ঝালকাঠির নলছিটির দাদা–শ্বশুরের গ্রামের বাড়ি থেকে আয়েশাকে হাতেনাতে ধরতে সক্ষম হয় পুলিশ। তদন্তে তার সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ মিললে রাব্বীকেও গ্রেপ্তার দেখানো হবে বলে জানান তিনি।
পুলিশ জানায়, বুধবার (১০ ডিসেম্বর) বেলা ১২টার দিকে নলছিটি থেকে আয়েশাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি সেখানে আত্মগোপনে ছিলেন। তাকে ঢাকায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে এবং হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত তথ্য উদঘাটন করা হবে।
এডিসি জুয়েল রানা আরও জানান, ছয় মাস আগে মোহাম্মদপুরের বেড়িবাঁধ এলাকার আরেকটি বাসায় চুরির ঘটনার সঙ্গেও আয়েশার সম্পৃক্ততার তথ্য পুলিশের হাতে এসেছে।
গত সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মোহাম্মদপুরের নিজ বাসা থেকে লায়লা আফরোজ ও তার নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী মেয়ে নাফিসার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, সকাল ৭টা ৫১ মিনিটে বোরকা পরে আয়েশা লিফটে উঠে ফ্ল্যাটে যান এবং সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে মুখে মাস্ক ও কাঁধে ব্যাগ নিয়ে ফ্ল্যাট থেকে বের হন।
নিহত নাফিসার বাবা স্কুলশিক্ষক আ জ ম আজিজুল ইসলাম জানান, চার দিন আগে গৃহকর্মী হিসেবে কাজে যোগ দেন আয়েশা। পুরো সময় তিনি মুখ ঢেকে রাখতেন, ফলে লায়লা আফরোজ ও নাফিসা ছাড়া পরিবারের অন্য কেউ তার মুখ দেখেনি। এজন্য তাকে শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে পুলিশকে সময় নিতে হয়েছে।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সোমবার রাতে গৃহকর্মী আয়েশাকে একমাত্র আসামি করে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন নিহত লায়লা আফরোজের স্বামী।