শ্রমিকদের বেতন, ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী ও নাটোর থেকে ঢাকাসহ দূরপাল্লার বিভিন্ন রুটে দ্বিতীয় দিনের মতো বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। গতকাল সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে আজ মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) এখন পর্যন্ত এই রুটে গুটি কয়েকটি কম্পানির বাস ব্যতীত কোনো বাস চলাচল করেনি।
আজ মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ঢাকা বাস স্ট্যান্ডে বেশিরভাগ কাউন্টার খোলেনি। এ অবস্থায় দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা।
অনেকে বাস স্ট্যান্ডে এসে ফিরে যাচ্ছেন বা বিকল্প উপায় বেছে নিচ্ছেন।
শ্রমিকরা জানান, এসব রুটে গুটিকয়েক কম্পানির বাস চলাচল করছে। তবে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে শুধু একটি কম্পানির বাস চলছে। এদিকে, শ্রমিক নেতারা জানিয়েছেন, আজ মঙ্গলবার বিকালে সমস্যা সমাধানে ঢাকায় মালিক ও শ্রমিকদের সভা হবে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ট্রাক, ট্যাংকলরী ও কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়ন সভাপতি সাইদুর রহমান বলেন, ‘বেতন ও আনুষাঙ্গিক বিভিন্ন ভাতার দাবিতে চলতি মাসের ৮ ও ৯ তারিখ রাজশাহীর বাস শ্রমিকরা এ ধর্মঘট প্রথম শুরু করেন। পরে ২১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সমস্যা সমাধানে মালিক-নেতাদের আশ্বাসে ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়। কিন্তু মালিকরা আবার সময় চাইলে তিন জেলার বাস শ্রমিকরা গতকাল সোমবার থেকে একযোগে কোচ চলাচল বন্ধ করে দেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকা রুটে একটি কোচের চালক, সহকারী ও সুপারভাইজার এই তিন শ্রমিক একত্রে বর্তমানে প্রতি ট্রিপে (যাওয়া-আসা) ২ হাজার ৭৮৫ টাকা বেতন ও আনুষাঙ্গিক খরচ পান।
রাজশাহী থেকে ঢাকা রুটে বেতন ও খরচ দেওয়া হচ্ছে এরচেয়ে ১০০ টাকা কম। অন্যান্য বিভিন্ন দূরপাল্লার রুটেও আনুপাতিক হারে বেতন-ভাতা দেওয়া হয়। গড়ে একজন বাস শ্রমিক মাসে ১২/১৪টির বেশি ট্রিপ পান না। সাধারণত একটি ট্রিপের পর অন্তত একদিন বসে থাকতে হয় পরের ট্রিপের জন্য। শ্রমিকদের দীর্ঘদিনের দাবি, এই অমানবিক বেতন ও খরচ বাড়ানো হোক।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকা রুটে প্রতি ট্রিপে এটি ৫ হাজার টাকা এবং রাজশাহী থেকে ঢাকা রুটে এটি ৪ হাজার ৭০০ টাকা করা হোক।’
রাজশাহী মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম পাখি বলেন, ‘এই সমস্যার সঙ্গে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন এবং বাংলাদেশ বাস ও ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন সম্পৃক্ত। তারা বারবার দাবি পূরণে বসার আশ্বাস দিলেও দাবি পূরণের কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।’ বারবার কালক্ষেপণ করেছেন। সর্বশেষ গত ২১ সেপ্টেম্বর বসার কথা থাকলেও তারা বসেননি বরং আবার ২৮ সেপ্টেম্বর বসার কথা বলেছেন। ফলে বাধ্য হয়ে সোমবার থেকে বিশেষ করে বড় বাস কম্পানির শ্রমিকরা তিন জেলা থেকে বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। তবে ২/৩টি কম্পানির অল্প সংখ্যক বাস চলছে।’
নাটোর মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মজিদ বলেন, ‘নাটোর থেকে শুধু একটি কম্পানির কোচ চলছে।’
তিন জেলার শীর্ষ শ্রমিক নেতারা বলেন, ‘এ অবস্থায় আজ মঙ্গলবার বিকালে ঢাকায় শ্রমিক ও মালিকদের মধ্যে সভা আহ্বান করা হয়েছে। সভায় সমঝোতার চেষ্টা হবে।’ সূত্র: কালের কণ্ঠ