শিরোনাম

প্রকাশিত : ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৯:৩১ রাত
আপডেট : ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৯:৩১ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মাদক না পেয়ে টাকা ছিনতাইয়ের চেষ্টা, জনরোষে আটক মাদকদ্রব্য কর্মকর্তারা

অনিরুদ্ধ রেজা, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ মাদক না পেয়ে এক যুবকের টাকা ছিনতাই কালে জনতা হাতে আটক মাদক দ্রব্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। পরে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের হস্তক্ষেপে তাদের উদ্ধার করা হয়। অবশেষে জনতার কাছে মাফ চেয়ে এলাকা ত্যাগ করেন ওই দুর্নীতিবাজ ডাকাত কর্মকর্তারা। ২১ সেপ্টেম্বর'২৫ রবিবার দুপুরে কুড়িগ্রাম সদরের পাটেশ্বরী বাজারে এই ন্যাক্কারজনক ঘটনাটি ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়,রবিবার কুড়িগ্রামে সদরের ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের পাটেশ্বরী বাজারে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একটি পিক আপ রাস্তায় ব্যারিকেড দেয় পাশ্ববর্তী এলাকার  মোটরসাইকেল আরোহী আনিছুর রহমানকে। মোটরসাইকেল আরোহী মাটিতে পড়ে যায় পরে গেলে স্থানীয় বাজারের লোকজনের দৌড়াদৌড়ি করে তাকে উদ্ধার করতে ছুটে আসে। এসময় মাদকদ্রব্যের সিপাহি সোহেল জনসম্মুখে তল্লাশি চালিয়ে মাদকজাতীয় কোন কিছু না পেয়ে পকেটের  থাকা টাকা হাতিয়ে নিয়ে, টেনে হেচরে গাড়িতে তোলার চেষ্টা করে। এসময় উপস্থিত এলাকাবাসী উত্তেজিত হয়ে গাড়ি সহ মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ কে আটক করে। একপর্যায়ে মাদকদ্রব্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে এলাকাবাসীর ধস্তাধস্তি শুরু হয়,পরে আমজনতা ঘিরে রাখেন। এ খবর পেয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করে  মাদকদ্রব্য লোকজন কে উদ্ধার। তবে উপস্থিত এলাকাবাসীর কাছে মাফ চেয়ে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা এলাকা ত্যাগ করে।

এলাকাবাসী বেলাল জানায়,মোটরসাইকেল আরোহী আনিছুর রহমানের পকেটে থাকা চিকিৎসার ব্যবস্থাপত্র সহ প্রায় ৪০ হাজার টাকা ছিল। কিন্তু মাদকদ্রব্যের লোকেরা ঐ ব্যক্তির পকেটে থাকা টাকা নিয়ে জোরপূর্বক টেনে হেচড়ে গাড়িতে নেওয়ার চেষ্টা করে। এতে স্থানীয় জনতা ক্ষিপ্ত হয়ে বাঁধা দেন ও গাড়িসহ তাঁদেরকে ঘিরে রাখেন। পরে খবর পেয়ে  মাদকদ্রব্যের সাব ইন্সপেক্টর আজহারুল ইসলাম,  জান্নাতুল ফেরদৌস ও আরো দুইজন সিপাহী ইমরান,জয় কে সাথে নিয়ে ঘটনাস্থলে যায়। মাদকদ্রব্যের গাড়ি আটকানো নিয়ে স্থানীয় জনতাদেরকে অশ্লীল গালিগালাজ ও ভিডিও ধারণের কারণে এক ব্যক্তির মোবাইল ছিনিয়ে নেয় মাদকদ্রব্য কর্মকর্তারা। তাদের এহেন কর্মকান্ডে ক্ষিপ্ত হয়ে উওোজিত জনতার সাথে ধস্তাধস্তি শুরু করে। 

পরে খবর পেয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যরা আটককৃত কর্মকর্তাদের উদ্ধার করেন। স্থানীয় লোকজনের নিকট  প্রকাশ্য ক্ষমা চেয়ে চলে আসেন মাদকদ্রব্য কর্মকর্তারা। স্থানীয় বাসিন্দা মাহাবুব বলেন,বাজারে দাঁড়িয়ে আছি হঠাৎ চলন্ত মোটরসাইকেল আরোহী কে মাদকদ্রব্যের অধিদপ্তরের পিক আপ এসে চাঁপা দেয়। লোকটি মোটরসাইকেল থেকে মাটিতে পড়ে গেলে বাজারের লোকজন সবাই ছুঁটে আসে।

ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য মনিয়া বলেন,জনসম্মুখে কুড়িগ্রাম  মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের  সিপাহি সোহেল তল্লাশি চালিয়ে মাদকজাতীয় কিছু না পেয়ে ছেলেটির পকেটে থাকা চিকিৎসকের ব্যবস্থা সহ প্রায় ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পায়।
বাজারের ব্যবসায়ী জাহিদুল বলেন, মাদকজাতীয় কোন কিছু না পাওয়ার পরেও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সিপাহি সোহেল জোরপূর্বক পিক আপে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এটি মাদকদ্রব্য প্রশাসনের ন্যাক্কারজনক ঘটনা।

এবিষয়ে মাদকদ্রব্যের এসআই আজহারুল বলেন, আমাদের নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে উক্ত ছেলের নিকট মাদকদ্রব্য আছে সন্দেহে তাঁকে আটক করি। এসময় তাঁর কাছে কিছু না থাকায় স্থানীয় জনতার সাথে আমাদের ভুল বুঝাবুঝি সৃষ্টি হয়ে এরকম পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।

এ ঘটনাকে ঘিরে কুড়িগ্রাম মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সাব ইন্সপেক্টর জান্নাতুল ফেরদৌস সংবাদ প্রকাশ না করার অনুরোধ জানায়।

এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ভোগডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সাইদুর রহমান বলেন,মাদকদ্রব্যের কর্মকর্তাদের আটক রাখার খবর শুনে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উত্তেজিত জনতার সাথে কথা বলে তাদেরকে উদ্ধার করি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়