শিরোনাম
◈ বিমানের নতুন চেয়ারম্যান শেখ বশিরউদ্দীন ◈ শুনানিতে বিএনপি-এনসিপি মারামারির ঘটনায় ইসির জিডি ◈ ট্রাম্পের শুল্কে ভারতীয় রপ্তানির বড় ধাক্কা, সুযোগে বাংলাদেশ-পাকিস্তান ◈ যেসব দেশে নাগরিকত্ব মিলবে বিয়ে করলেই ◈ ‘ভিক্ষুকের’ বাসায় পুলিশের অভিযান, মিলল ৪ ভরি স্বর্ণ ও সাড়ে ৪ লাখ টাকা ◈ আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম, ভরি কত? ◈ সংবিধান পরিবর্তন মানবে না বিএনপি: মির্জা ফখরুল ◈ বাংলাদেশ মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে শীর্ষে, আছে ৮ লাখেরও বেশি কর্মী ◈ ট্রাম্পের শুল্কে বন্ধ ভারতের কারখানা, রপ্তানি হুমকিতে ◈ দাবি না মানলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের: আল্টিমেটাম রাত ৮টা পর্যন্ত

প্রকাশিত : ২৬ আগস্ট, ২০২৫, ০৮:৩৫ রাত
আপডেট : ২৭ আগস্ট, ২০২৫, ০১:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

নোয়াখালীতে ঘাট দখল-চাঁদাবাজি: ভাগ যাচ্ছে রাজনৈতিক নেতা ও প্রশাসনের পকেটে

নোয়াখালী প্রতিনিধি: নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের দক্ষিণাঞ্চলের চরএলাহী ঘাটকে ঘিরে চাঁদাবাজি, আধিপত্য বিস্তার, দখল-বেদখল আর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে অস্থির হয়ে উঠেছে জনজীবন। হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে ইজারা ছাড়াই রাজনৈতিক নেতাদের মদদ ও প্রশাসনকে ম্যানেজ করে চলছে ঘাটের নিয়ন্ত্রণ যুদ্ধ।

স্থানীয় সূত্র জানায়, চরএলাহী ঘাট হলো উড়িরচর ও চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার সঙ্গে কোম্পানীগঞ্জের একমাত্র নৌ-যোগাযোগ কেন্দ্র। প্রতিদিন এই ঘাট দিয়ে কয়েক লাখ টাকার পণ্য ওঠানামা হয়। মাছ-সবজির পাশাপাশি মাদকের চালান যাতায়াতের অভিযোগও রয়েছে। সরকারি বিধি মোতাবেক ঘাটটি ইজারা নিয়েছিলেন ইউনিয়ন যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক শেখ বেলাল। তবে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর ঘাটের নিয়ন্ত্রণ নেয় স্থানীয় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মতিন তোতা।

এই ঘাট দখলকে কেন্দ্র করে গত বছরের ২৭ আগস্ট রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে নিহত হন আবদুল মতিন তোতা। পরে যুবদল নেতা এরশাদ মাঝি খুন হন। এতে আহত হন সাবেক বিএনপি নেতা সাহাব উদ্দিন, ছাত্রদল নেতা আশরাফুল ইসলাম ইমনসহ অর্ধশতাধিক কর্মী। এরপরও সহিংসতা থামেনি; এলাকায় চলছে দাঙ্গা, লুটপাট ও ধর্ষণের মতো অপরাধ।

স্থানীয়দের অভিযোগ, তোতা চেয়ারম্যান নিহত হওয়ার পর তাঁর ছেলে ইসমাইল তোতা ও ইব্রাহিম তোতা মামলা ঘুরিয়ে প্রকৃত আসামিদের আড়াল করছেন। তারা বিএনপির রাজনীতিকে জিম্মি করে ঘাট থেকে লাখ লাখ টাকা লুট করছেন। পাশাপাশি বালু মহাল ও স্থানীয় প্রজেক্ট দখল করে বিপুল অর্থ আদায় করছেন।

চরএলাহী ইউনিয়নের বাসিন্দা মাসুম বিল্লাহ ও বেলাল হোসেন বলেন, “তোতা পরিবারের সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির কারণে বিএনপির বহু কর্মী হামলার শিকার হয়েছেন। এক কথায় পুরো ইউনিয়ন তাদের হাতে জিম্মি।”

এ বিষয়ে বসুরহাট পৌর বিএনপির আহ্বায়ক আবদুল মতিন লিটন বলেন, “চরএলাহী ঘাট একসময় আওয়ামী লীগ নেতা রাজ্জাক চেয়ারম্যানের নিয়ন্ত্রণে ছিল। এখন তোতা পরিবারের দখলে। তারা ঘাট ও প্রজেক্ট মালিকদের জিম্মি করে কোটি কোটি টাকা আদায় করছে। আমরা চাই, সরকারিভাবে ঘাট পরিচালনা হোক এবং প্রশাসন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করুক।”

এদিকে, সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া অডিও রেকর্ডে ঘাটের কেরানি সেলিম, স্পিডবোট মালিক ইস্কান্দার মির্জা ও কথিত সাংবাদিক কামালকে বলতে শোনা যায়— প্রতিটি স্পিডবোট চালাতে তোতা পরিবারকে ২০% চাঁদা দিতে হয়, যার ভাগ যায় স্থানীয় বিএনপি নেতা, ইউএনও ও ওসির পকেটে।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, “ঘাট নিয়ে সীমানা জটিলতার মামলা থাকায় এটি ইজারা দেওয়া হয়নি। চাঁদাবাজির বিষয়ে কারও লিখিত অভিযোগও পাওয়া যায়নি। কল রেকর্ডে যা প্রচার হয়েছে তা সত্য নয়। স্থানীয় প্রভাবশালীরা নিজেরাই দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ায় বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে। বর্তমানে ঘাট উপজেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে।”

চরএলাহী ঘাটের আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি ও সহিংসতায় এলাকা পরিণত হয়েছে অস্থির জনপদে। প্রশাসনের নীরবতা আর রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের স্বার্থে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে— এই সহিংসতা কবে থামবে?

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়