নিনা আফরিন, পটুয়াখালী: পটুয়াখালীর দুমকি ও বাউফল উপজেলার মধ্যে অবস্থিত বগা-গরবদী ফেরিঘাটের লিজ বাতিল সংক্রান্ত সরকারি আদেশ হাইকোর্ট তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছেন। একই সঙ্গে আদালত রুল জারি করেছেন, কেন এই আদেশকে অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে সরকারি কর্মকর্তাদের কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হাইকোর্টের বেঞ্চে ছিলেন বিচারপতি কাজী জিনাত হক ও বিচারপতি আয়নুন নাহার সিদ্দিকা।
মামলার সূত্রে জানা গেছে, পুরান বাজার এলাকার এম.এস. দাস অ্যান্ড ব্রাদার্স প্রোপ্রাইটর-শিবুলাল দাস প্রতিষ্ঠানটি ২০২৩ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২৬ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত তিন বছরের জন্য সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে বগা ফেরিঘাটের ইজারাদার হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিল। তবে গত ১৭ জুলাই সড়ক ও জনপথ বিভাগের একটি অফিস আদেশের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটির ইজারা বাতিল করা হয় এবং ২৪ জুলাই থেকে ঘাটটি অন্য এক পক্ষকে হস্তান্তর করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
রিট আবেদনকারীর অভিযোগ, ইজারা বাতিলের আগে তাদের কোনো কারণ দর্শানোর সুযোগ দেওয়া হয়নি। এছাড়া জমা দেওয়া নিরাপত্তা জামানতের ৭৪ লাখ ১৭ হাজার ৪১৬ টাকার মধ্যে ১১ লাখ ১২ হাজার ৫৮৪ টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে, যা বেআইনি ও কর্তৃত্ববহির্ভূত।
আদালত প্রাথমিকভাবে দেখেছেন, আবেদনকারীর ইজারা বাতিলের সিদ্ধান্ত যথাযথ আইন ও ন্যায্যতার ভিত্তিতে হয়নি। তাই আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে সাতজন সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তাকে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত রিট আবেদনকারীকে টোল আদায়ের মাধ্যমে ফেরিঘাট পরিচালনার অনুমতি দেওয়া হয়েছে এবং নতুন হস্তান্তরের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
ফেরিঘাটের সুপারভাইজার মোস্তাফিজুর রহমান ও এনামুল হক জানিয়েছেন, ফেরি দৈনিক প্রায় ২০ হাজার টাকা আয় করে, কিন্তু ব্যয় ২২ হাজার টাকা। ফেরি চালক মালেক জানান, দৈনিক ২০০ লিটার তেল লাগে।
ইজারাদার শিবু লাল দাস জানান, ২০২৩ সালে ৬ কোটি ৩৬ লাখ টাকায় ইজারার কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছিল। হাইকোর্টের আদেশ থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন অজুহাতে ফেরিঘাট হস্তান্তর করা হচ্ছে না। পটুয়াখালী সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জামিল আক্তার বলেন, হাইকোর্টের আদেশের হার্ড কপি না পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব নয়।