শিরোনাম
◈ ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানালেন জামায়াত আমির ◈ জুলাই সনদের দাবি: দ্বিতীয় দিনের মতো অবরুদ্ধ শাহবাগ, যানজটে ভোগান্তি (ভিডিও) ◈ ঐকমত্য কমিশনের ৮২৬ সুপারিশের মধ্যে ৭৭৫টিতে একমত বিএনপি, জানালেন সালাহউদ্দিন আহমদ ◈ ২০ শতাংশ শুল্ক সরকারের আরেকটি সফলতা : আসিফ নজরুল ◈ ‘বৃহত্তর বাংলাদেশ’ মানচিত্রে উদ্বেগ, যা বললেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর ◈ ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে  সিরিজ শুরু পাকিস্তানের ◈ পটুয়াখালীর বাউফলে পরকীয়া সন্দেহে শিক্ষক স্ত্রীকে জবাই করে হত্যা ◈ আটকে পড়া বাংলাদেশি কর্মীদের সুখবর দিলো মালয়েশিয়া, বোয়েসেলের মাধ্যমে কর্মী নিয়োগের নতুন সিদ্ধান্ত ◈ বাঙালিদের যদি অত্যাচার ও অবহেলা করা হয়, তাহলে এটি যথেষ্ট আপত্তিকর: অমর্ত্য সেন (ভিডিও) ◈ গুলশানে চাঁদাবাজির ঘটনায় গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের নেতা অপু গ্রেপ্তার

প্রকাশিত : ৩১ জুলাই, ২০২৫, ০৭:৫০ বিকাল
আপডেট : ০১ আগস্ট, ২০২৫, ১০:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বাগেরহাটে ভাইরাস, বৃষ্টিতে মৎস্য খাত ধসের মুখে ক্ষতি ৫০ কোটির বেশি

এস.এম.  সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট :বাগেরহাটে মৎস্য চাষের রাজধানী নামে খ্যাত বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ, রামপাল, মোংলা, ও শরণখোলায়,ফকিরহাটসহ ৯ উপজেলার মাছ চাষিরা নানামুখী সংকটে পড়ে দিশেহারা। ভাইরাস আক্রমণে মাছের ব্যাপক মৃত্যু, টানা বৃষ্টিপাত, অস্বাভাবিক জোয়ার এবং ড্রেনেজ ব্যবস্থার অবনতি- সব মিলিয়ে ৯ উপজেলার অধিকাংশ মৎস্য ঘের, পুকুর, খাল ও নিচু এলাকা এখন জলমগ্ন। চাষিরা বলছেন, এতে তার কমপক্ষে ৫০ কোটি টাকা ক্ষতির মুখে পড়েছেন।

 সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে,জেলার ৯ সহ শুধু মোরেলগঞ্জ নয়, রামপাল, মোংলা, ও শরণখোলায়.ফকিরহাটের ভৈরব নদ, মূলঘর ইউনিয়নে চিত্রা নদী ও কালীগঙ্গা নদীর পারে বসবাসকারী মানুষের অনেক ঘরবাড়িতে জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। তা ছাড়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে অতিবৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে রাস্তাঘাট, পুকুর, খাল, মাছের ঘের, বসতবাড়ি ডুবে গেছে। সমূদ্রে লঘু চাপের ফলে নদী ও খালে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে উচ্চতা বৃদ্ধি, নদীর নাব্যতা হ্রাস, টানা ভারী বর্ষণ, উপজেলার ১৩টি সু্চই গেটের ১০টি অকেজো ও পানি নিষ্কাশনে ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকার কারণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে বলে জানায় ওই এলাকার লোকজন।

অনেক স্থানে নদী, পুকুর, খাল, মাছের ঘের ডুবে একাকার হয়ে গেছে। দেখে বোঝার উপায় নেই কোনটি কী! ফলে বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে বের হয়ে গেছে ছোটবড় চাষের মাছ। লোকজনকে ঘরের সামনের উঠানে, উন্মুক্ত খাল ও নদীতে চাষীদের বের হয়ে যাওয়া মাছ ধরতে দেখা গেছে।

ঘেরের মাছ যাতে বের হয়ে যেতে না পারে সেজন্য চাষীদের প্রাণন্ত চেষ্টা করতে দেখা গেছে। অনেক চাষি মাটি তুলে ডুবে যাওয়া ঘেরে আইল মেরামতের চেষ্টা করছেন। অনেকে নেট দিয়ে মাছ আটকানোর চেষ্টা করছেন। এসব চাষিরা বলছেন ইতোমধ্যে তাদের বেশ ক্ষতি হয়ে গেছে। যা আছে সেটুকু রক্ষার চেষ্টা করছেন।

ফকিরহাট মৎস্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, উপজেলায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাষ করা ৪৩০টি বাগদা চিংড়ি ঘেরে ভাইরাস সংক্রমণ হয়েছে। ৬২৫ টি চিংড়ি ও সাদা মাছের ঘের ডুবে গেছে ও ডুবে যাওয়ার ঝুঁকির মধ্যে আছে। প্রায় ৩০০ একর গলদা ও বাগদা চিংড়ির ঘেরের জমি ধ্বসে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

তবে মাছ চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি। উপজেলার প্রায় দুই শতাধিক পুকুর ও দিঘিসহ ৯ ইউনিয়নের অসংখ্য ঘের তলিয়ে গেছে। মাছ চাষী ও মৎস্য ব্যবসায়ীরা দাবি করেন এই সমস্যায় তাদের কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

মৎস্য চাষী শেখ মনি, বাবু ফকির, শওকত আলী সহ অনেক ঘের মালিক জানান, ভাইরাসে মরে যাওয়া বাগদা চিংড়ি খেয়ে উচ্চ মূল্যের গলদা চিংড়ি মাছ পঞ্চ হয়ে যাচ্ছে। ফলে সেগুলো আর বাজারে বিক্রি করা যায় না। আবার সাদা মাছ ওই চিংড়ি খেলে তাদের বৃদ্ধিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। তার উপর জেয়ারের পানি ও বৃষ্টির পানিতে জলবদ্ধতার কারণে মাছ বের হয়ে গেছে। ঋণ নিয়ে মাছ চাষ করে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে অনেকে ইতোমধ্যে পথে বসতে চলেছে বলে জানান ওই চাষিরা।

এ অবস্থায় নতুন করে মাছের পোনা ছাড়াও সম্ভব হচ্ছে না। দেশীয় হ্যাচারী পর্যাপ্ত পোনা উৎপাদন না করায় ও নদীর পোনা সংগ্রহে নিষেধাজ্ঞা থাকায় দেখা দিয়েছে রেনু পোনা সংকট। ফলে ভারত থেকে চোরাপথে আসা মাছ কিনে ঘেরে ছেড়েছিলেন চাষিরা। কিন্তু তা আশানুরূপ উৎপাদন না হওয়ায় বিরাট ক্ষতির মূখে পড়েছে এই উপজেলার মানুষের প্রধান অর্থনৈতিক চালিকাশক্তি মৎস্য চাষ।

ফকিরহাট উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা শেখ আছাদুল্লাহ বলেন, 'মাছ ঘের ও পুকুর থেকে ভেসে গেলেও মৎস্য বিভাগের দৃষ্টিতে ক্ষতি হয়নি। কারণ মাছগুলো মারা যায়নি। তবে ভাইরাস সংক্রমনের সংকট মোকাবেলায় মাইকিং, লিফলেট বিতরণ, ব্যানার টানানো ও মাঠ পর্যায়ে পরামর্শ সভা চলমান রয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়