শিরোনাম
◈ ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানালেন জামায়াত আমির ◈ জুলাই সনদের দাবি: দ্বিতীয় দিনের মতো অবরুদ্ধ শাহবাগ, যানজটে ভোগান্তি (ভিডিও) ◈ ঐকমত্য কমিশনের ৮২৬ সুপারিশের মধ্যে ৭৭৫টিতে একমত বিএনপি, জানালেন সালাহউদ্দিন আহমদ ◈ ২০ শতাংশ শুল্ক সরকারের আরেকটি সফলতা : আসিফ নজরুল ◈ ‘বৃহত্তর বাংলাদেশ’ মানচিত্রে উদ্বেগ, যা বললেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর ◈ ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে  সিরিজ শুরু পাকিস্তানের ◈ পটুয়াখালীর বাউফলে পরকীয়া সন্দেহে শিক্ষক স্ত্রীকে জবাই করে হত্যা ◈ আটকে পড়া বাংলাদেশি কর্মীদের সুখবর দিলো মালয়েশিয়া, বোয়েসেলের মাধ্যমে কর্মী নিয়োগের নতুন সিদ্ধান্ত ◈ বাঙালিদের যদি অত্যাচার ও অবহেলা করা হয়, তাহলে এটি যথেষ্ট আপত্তিকর: অমর্ত্য সেন (ভিডিও) ◈ গুলশানে চাঁদাবাজির ঘটনায় গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের নেতা অপু গ্রেপ্তার

প্রকাশিত : ৩১ জুলাই, ২০২৫, ০৭:৩৩ বিকাল
আপডেট : ০১ আগস্ট, ২০২৫, ০৫:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

"কক্সবাজারে অস্ত্রের স্ফোরণ: রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও পাহাড়ে বিপজ্জনক সন্ত্রাসী ঘাঁটি গড়ে উঠছে"

হাবিবুর রহমান সোহেল,কক্সবাজার: পর্যটন শহর কক্সবাজার এখন আর শুধু সমুদ্র সৈকত কিংবা রোহিঙ্গা সংকটের পরিচয় বহন করছে না—এটি ক্রমেই পরিণত হচ্ছে এক বিপজ্জনক অস্ত্রভাণ্ডারে। জেলার সীমান্তবর্তী এলাকা, পাহাড় ও উপকূলজুড়ে নিয়মিত উদ্ধার হচ্ছে দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র, গ্রেনেড, মাইন, মর্টার শেল ও সামরিক মানের গোলাবারুদ।

জুলাই ২০২৪ থেকে জুলাই ২০২৫ সালের মধ্যে র‍্যাব, পুলিশ, বিজিবি, সেনাবাহিনী, কোস্টগার্ডসহ নিরাপত্তা বাহিনীর বিভিন্ন অভিযানে উদ্ধার হয়েছে ২৭৫টি আগ্নেয়াস্ত্র, ৭,৬১৩ রাউন্ড গুলি, ১০টি মাইন, ১৭টি গ্রেনেড, ২০টি ডেটোনেটর ও অর্ধশতাধিক ধারালো অস্ত্র। গ্রেপ্তার হয়েছে দেড় শতাধিক সন্ত্রাসী।

রোহিঙ্গা শিবিরে মিলছে সামরিক অস্ত্র
রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী শফির আস্তানায় গত জুনে র‍্যাব-১৫ এর অভিযানে টেকনাফের ক্যাম্প-২৬ এর পাশে পাহাড় থেকে উদ্ধার হয়েছে গ্রেনেড, এন্টি পারসোনাল মাইন ও বিপুল গুলি। শফি ও তার সহযোগীরা দীর্ঘদিন ধরে অপহরণ, খুন, চাঁদাবাজি ও মাদকপাচার চালিয়ে আসছিল।

গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মতে, অন্তত চারটি সংগঠিত রোহিঙ্গা গোষ্ঠী এখন কক্সবাজারে সক্রিয়—আরাকান রোহিঙ্গা আর্মি (এআরএ), আরসা, আরএসও ও ইসলামি মাহাজ। তাদের মাধ্যমে রাখাইন রাজ্য থেকে মিয়ানমারের যুদ্ধাস্ত্র ক্যাম্পে আসছে।

পাহাড়ে অস্ত্রধারী ডাকাতদলের ঘাঁটি
স্থানীয়ভাবে সক্রিয় রয়েছে বেলাল বাহিনী, শেখ রাসেল বাহিনী, আবছার বাহিনী, শাহীন চক্রসহ একাধিক ডাকাত দল। গর্জনিয়া, লেদা, বাহারছড়ার পাহাড়ি অঞ্চলে উদ্ধার হয়েছে একে-২২ রাইফেল, কাটা রাইফেল, শটগান, একনলা বন্দুক, দেশীয় পিস্তল ও বিপুল গুলি।

গোয়েন্দারা বলছেন, এসব অস্ত্র মিয়ানমার ও ভারত সীমান্ত হয়ে চোরাচালানের মাধ্যমে আসে এবং স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সিন্ডিকেট এর সঙ্গে জড়িত। অনেকে মনে করছেন, অস্ত্রের এ বিস্তার কেবল আত্মরক্ষার জন্য নয়, সংঘর্ষ ও আধিপত্য বিস্তারের জন্যও ব্যবহৃত হচ্ছে।

নিরাপত্তা বিশ্লেষক লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহফুজুর রহমান বলেন, “মাদক ও অস্ত্রের সংমিশ্রণ সর্বনাশা রূপ নিচ্ছে। রোহিঙ্গা সংকট এখন কেবল মানবিক নয়, এটি জাতীয় নিরাপত্তার হুমকি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সামরিক ও কূটনৈতিক সমন্বয় জরুরি।”

স্থানীয় প্রশাসন সূত্র জানায়, সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশের সমন্বয়ে কক্সবাজারে একটি যৌথ নিয়ন্ত্রণ কাঠামো গঠনের চিন্তাভাবনা চলছে। একই সঙ্গে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে জোর কূটনৈতিক উদ্যোগও প্রয়োজন।

কক্সবাজারের পাহাড় ও রোহিঙ্গা শিবিরে অস্ত্র, সহিংসতা ও মাদকের ত্রিমুখী সংকট তৈরি হয়েছে। একে শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা দিয়ে সমাধান করা সম্ভব নয়। প্রয়োজন একটি সমন্বিত জাতীয় কৌশল ও রাজনৈতিক সদিচ্ছা। অন্যথায়, এই অস্ত্রের আগুন ছড়িয়ে পড়তে পারে গোটা দেশে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়