এন এ মুরাদ, মুরাদনগর (কুমিল্লা): কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ইউনিয়ন ভূমি অফিসগুলোতে নিয়মিত সেবা পেতে ঘুষ দিতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। নামজারি ও খারিজ প্রক্রিয়ায় সরকারি নির্ধারিত ফি মাত্র ১,১৭০ টাকা হলেও বাস্তবে দিতে হচ্ছে ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, একটি সাধারণ নামজারির জন্য তহশিলদারকে দিতে হয় ন্যূনতম ১,৫০০ টাকা। ঘুষ না দিলে বিভিন্ন অজুহাতে সার্ভার অকার্যকর দেখানো হয় বা ফাইল আটকে রাখা হয়। সেবা প্রত্যাশীরা প্রতিবাদ করলে হয়রানির মুখে পড়েন বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে।
২২ নম্বর টনকী ইউনিয়নের বাইড়া গ্রামের মোখলেসুর রহমান জানান, রাসেল মুন্সি নামে এক দালালকে ১৪ হাজার টাকা দিলেও খারিজ না করেই সে টাকা আত্মসাৎ করে। পরে তিনি নিজে গিয়ে খারিজের আবেদন করলে অফিস সহকারী আরিফুল ইসলাম ৩ হাজার টাকা দাবি করেন। অনুরোধ করে তিনি অবশেষে ১,৭০০ টাকা দেন।
এই প্রসঙ্গে টনকী ভূমি অফিসের সহকারী আরিফুল ইসলাম বলেন, “খরচের জন্য টাকা রাখা হয়েছে।” কিন্তু সরকারি নির্ধারিত ফি ছাড়া অন্য কোনো খরচের ব্যাখ্যা চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান এবং বলেন, “আগামী দিন আসেন, টাকা ফেরত দিয়ে দিবো।”
অন্য ইউনিয়ন অফিসগুলোতেও একই চিত্র
আকবপুর, আন্দিকুট, নবীপুর পশ্চিম, পূর্বধৈইর পূর্ব ও পশ্চিম ইউনিয়ন ভূমি অফিসগুলোতেও একইভাবে ঘুষ বাণিজ্য চলে আসছে বলে জানা গেছে। এসব অফিসে দালালদের মাধ্যমে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছেন।
জানা গেছে:
আন্দিকুট ইউনিয়নে দালালি করছেন বাচ্চু মিয়া (৫০) ও তার মেয়ে মাহমুদা আক্তার (২০), আকবপুরে সাগর (২২), পূর্বধৈইর পূর্বে রিয়াদ (২৮), পূর্বধৈইর পশ্চিমে রাকিব হোসেন (২৫) তাদের মাধ্যমে ভূমি অফিসে চুক্তিভিত্তিক কাজ করিয়ে নিচ্ছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সাধারণ মানুষ সরকারি ফি সম্পর্কে না জানায় তারা সহজেই দালালদের ফাঁদে পড়ে যাচ্ছেন।
প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া
এ বিষয়ে মুরাদনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাকিব হাসান খান বলেন, “নামজারি খারিজে সরকারি নির্ধারিত ফি ব্যতীত অতিরিক্ত অর্থ নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কেউ ঘুষ নিয়ে থাকলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমার অফিসে এ ধরনের কোনো অতিরিক্ত ফি লাগেনা।”