ইফতেখার আলম বিশাল, রাজশাহী প্রতিনিধি: বিমান বিধ্বস্ত হয়ে প্রাণ হারানো ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম সাগরের জানাজার নামাজ রাজশাহীর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৪টায় জানাজা শেষে তাকে নগরীর সপুরা গোরস্থানে দাফন করা হয়।
উত্তরায় ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় তৌকিরসহ অন্যান্য সদস্যদের মৃত্যুর খবরে রাজশাহীজুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে। জানাজায় অংশ নিতে আসা ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা অঝোরে কাঁদেন। তারা বলেন, "তৌকিরকে কয়েকবার দেখা হয়েছে। সে খুবই ভদ্র, বিনয়ী ছেলে ছিল। গত ঈদেও রাজশাহী এসেছিল। এত অল্প বয়সে জীবন চলে গেল! আমরা আল্লাহর কাছে তার জন্য জান্নাতের দোয়া করি এবং সরকারের কাছে দাবি জানাই যেন তার পরিবারের যথাযথ খেয়াল রাখা হয়।"
জানাজার সময় স্টেডিয়ামের ভেতরে পরিবারের সদস্যরা তাকে শেষবারের মতো দেখার সুযোগ পান। এরপর র্যাব-৫ এর একটি গাড়িতে করে স্বজনদের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়।
এসময় তৌকিরের মা সালেহা খাতুন পুত্রশোকে ভেঙে পড়েন। আহাজারি করে ছেলেকে উদ্দেশ করে বলেন, "আব্বা, তুমি কোথায় গেলে? তুমি শহীদ হয়েছ, আব্বা!" ছোট বোন বৃষ্টি খাতুনও কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি কাঁদতে কাঁদতে বলেন, "ও ভাইয়া, তুই সকালে একবার ফোন করতে পারলি না? একটু কথা বললি না কেন?"
জানাজার পূর্বে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন তৌকিরের বাবা তহুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, "আমার ছেলে খুব ভদ্র ও নম্র ছিল। তার আচার-আচরণে কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে ক্ষমা করে দেবেন।" এ কথা বলার সময় তিনিও আবেগে ভেঙে পড়েন।
জানা গেছে, ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকিরের গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার কানসাট উপজেলায়। তবে রাজশাহী নগরীর উপশহর এলাকায় তারা বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করছিলেন। নগরীর সপুরা ছয়ঘাটি মোড়ে তাদের নিজস্ব বাসার নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে।