শিরোনাম
◈ জুলাই যোদ্ধাদের জন্য সরকারি চাকরিতে কোটা থাকছে না: মুক্তিযুদ্ধ উপদেষ্টা ◈ পোড়া শরীর নিয়ে বের হচ্ছে অনেকে ◈ ইলিশের দাম কমাতে পদক্ষেপ নেবে সরকার: ফরিদা আখতার ◈ ঢাকা সফরে আসছেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি, গুরুত্ব পাচ্ছে অভিবাসন ইস্যু ◈ রাজধানীর উত্তরায় প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত, নিহত ১, হতাহতের শঙ্কা (ভিডিও) ◈ মিরপুর ডিওএইচএস-এ ভরদুপুরে ডাকাতি, আসলে কী ঘটেছিলো? (ভিডিও) ◈ বেনাপোলে রেলপথে বানিজ্য ঘাটতি ২৯ হাজার মোট্রিক টন ◈ বিশ্বের ১০টি ভয়ঙ্কর বিমানবন্দর: যেখানে অবতরণ মানেই শ্বাসরুদ্ধকর চ্যালেঞ্জ! ◈ ইসকন রেস্তোরাঁয় ঢুকে মুরগির মাংস খেলেন যুবক, ভাইরাল ভিডিও ঘিরে তীব্র বিতর্ক ◈ চীনের 'লগইংক' নিয়ে শঙ্কায় যুক্তরাষ্ট্র, বাংলাদেশকেও সতর্ক করল ওয়াশিংটন (ভিডিও)

প্রকাশিত : ২০ জুলাই, ২০২৫, ০৮:২৪ রাত
আপডেট : ২১ জুলাই, ২০২৫, ১১:৪৭ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কুমিল্লায় ভেজাল ওষুধের দৌরাত্ম্য, নজরদারির ঘাটতিতে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি

শাহাজাদা এমরান, কুমিল্লা: কুমিল্লায় নকল,ভেজাল ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধের অবাধ বিক্রেিত স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েছে জেলার সাধারণ মানুষ। শহর থেকে গ্রাম প্রতিটি স্তরে অসংখ্য ফার্মেসিতে বিক্রি হচ্ছে সন্দহেজনক মানের ওষুধ। এসব দোকানের অধিকাংশেরই নেই সরকারি অনুমোদন বা বৈধ লাইসেন্স।

জেলার স্বাস্থ্য বিভাগ ও ঔষধ প্রশাসনের তথ্যমতে, কুমিল্লায় বর্তমানে প্রায় ৬৫০টি ফার্মেসি কোনো বৈধ লাইসেন্স ছাড়াই পরিচালিত হচ্ছ।ে এর বড় একটি অংশ চালাচ্ছনে প্রশিক্ষণহীন ব্যক্ত,ি যাদের নেই ফার্মাসিস্টরে সনদ বা ওষুধ সংরক্ষণের প্রয়োজনীয় জ্ঞান। ফলে সহজেই এসব দোকানে প্রবেশ করছে নকল, ভেজাল ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ।

সরেজমিনে কুমিল্লা শহরের কয়েকটি ওষুধের দোকানে দেখা গেছে, ব্যথানাশক, অ্যান্টবিায়োটিক, উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের মতো গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ বিক্রি হচ্ছে পুরোনো মোড়কে বা পরিবর্তিত ম্যানুয়ালে। কিছু দোকানে মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও ওষুধ রাখা হয়েছে বিক্ররি জন্য। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন,সাধারণ মানুষ ভেজাল ওষুধ চিনতে পারবে না। এজন্য ফার্মেসিতে প্রশিক্ষতি ফার্মাসিস্ট থাকা জরুরি।

এছাড়া প্রশাসনের নিয়মিত তদারকি না থাকলে নকল ওষুধের বিস্তার ঠেকানো কঠিন। কুমিল্লার ক্যান্টনমেন্ট এলাকার বাসিন্দা মোক্তার হোসেন জানান, তার মা ও সন্তান নিয়মিত ওষুধ সেবন করেন। গত তিন মাসে ওষুধের পেছনে প্রতি মাসে আগের তুলনায় বাড়তি ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা খরচ হচ্ছ।ে আগে যে ওষুধ ৩৬০ টাকায় পাওয়া যেত, এখন সেটি ৪২০ টাকায় কিনতে হচ্ছ।ে তার মতে, এটি মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য বাড়তি চাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ঝাউতলা এলাকার মরিয়ম ফার্মেসির বিক্রতো মো. সাজ্জাদ হোসেন জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক সময়ে প্রায় সব কোম্পানি ওষুধের দাম বাড়িয়েছে। অনেক ওষুধে নতুন মূল্য লেখা না থাকায় পুরোনো মোড়কেই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছ।ে এ অবস্থায় ভোক্তাদের মধ্যে অসন্তােষ বাড়ছে।

ফার্মেসি মালিকদের অভিযোগ, বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানি কাঁচামালের দাম বৃদ্ধরি অজুহাতে দাম বাড়াচ্ছ।ে কিন্তু কোনো কোনো কোম্পানি নতুন দামের মোড়ক পাঠাচ্ছে না, ফলে দোকানিরা দাম নির্ধারণে দ্বধিায় পড়ছেন। এ-ফ্লক্স ১০ ট্যাবলেটের দাম ১০৫ টাকা থেকে বেড়ে ১৪০ টাকা, বাইজোরান ১০০ থেকে ১২০ টাকা, লিনাগ্লপি-এম (ডায়াবেটিসের ওষুধ) ৩৬০ থেকে বেড়ে ৪২০ টাকা হয়েছে।

মুরাদনগর উপজেলার আমিরাবাদ গ্রামের বাসিন্দা হোসনে আরা বেগম জানান, তার স্বামী ও নিজে দীর্ঘদিন ধরে উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের ওষুধ খান। গত মাসে একই ধরনের ওষুধ কিনেও তেমন উপকার পাননি। এরপর চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ বদলাতে হয়েছে।

নতুন ওষুধে কিছুটা উপকার পেলেও আগেরটার কার্যকারিতা ছিল না বলে অভিযোগ তার। এমন অবস্থার মধ্যওে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বড় ধরনের তদারকি বা অভিযান খুব একটা চোখে পড়ছে না। কুমিল্লা ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সালমা সিদ্দকিা জানিয়েছেন, নিয়মিত বাজার তদারকি ও অভিযান পরিচালনা করা হলেও নতুন ওষুধ ও প্রসাধনী আইন এখনো তফসিলভুক্ত না হওয়ায় অভিযান চালাতে কিছু আইনি সীমাবদ্ধতা রয়েছে।

আইনটি চূড়ান্তভাবে কার্যকর হলে আরও কঠোরভাবে মাঠে নামা যাবে বলে তিনি মনে করেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ সংকট শুধু অভিযানের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। ওষুধের দাম নির্ধারণ ও পর্যবেক্ষণে একটি স্বচ্ছ ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলা প্রয়োজন, যেখানে প্রতিটি কোম্পানির আপডেটেড দাম উল্লখে থাকবে। ফার্মেসিতে লাইসেন্স ঝুলিয়ে রাখার বাধ্যবাধকতা কার্যকর করার পাশাপাশি সরকারিভাবে মোবাইলভিত্তকি ওষুধ যাচাই অ্যাপ চালু করার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

বিএমএ কুমিল্লার সভাপতি ডা. আতাউর রহমান জসিম বলেন, “ভেজাল ঔষধ সাধারণ মানুষ চিনতে পারবে না। তাই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ কিনতে হবে৷ এবং এক্ষেেত্র প্রশাসনের তদারকি অত্যন্ত জরুরি। এছাড়াও প্রতিটি ফার্মেসিতে একজন ফার্মাসিস্ট থাকতে হবে। তাহলে ভেজাল ঔষধের ছড়াছড়ি কমবে। প্রশাসনের উচিত লাইসেন্সবিহীন ফার্মেসিগুলোতে ওষুধ বিক্ররি অনুমতি না দেওয়া।”

কুমিল্লা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কাউছার মিয়া বলেন,“ওষুধের দাম বেশি কিংবা নকল ওষুধ বিক্ররি অভিযোগে আমরা বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করেছি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” 
কুমিল্লা সিভিল সার্জন ডা. আলী নুর মোহাম্মদ বশীর আহমেদ বলেন,“আমরা এ বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছ।ি এমন অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।”

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়