সনত চক্রবর্ত্তী, ফরিদপুর: ফরিদপুরের পদ্মা নদীতে জেলের বরশিতে ধরা পড়েছে প্রায় ৪২ কেজি ওজনের বিরল প্রজাতির একটি বিশাল বাগাড় মাছ। শনিবার (২৮ জুন) দিবাগত রাতে চরভদ্রাসন উপজেলার হাজার বিঘা চরে স্থানীয় জেলে আদু শেখের বরশিতে মাছটি ধরা পড়ে। পরে চর হাজিগঞ্জ বাজারে নিয়ে গেলে স্থানীয় ১৮ জন ভাগ করে ৬২ হাজার টাকায় কিনে নেন মাছটি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পদ্মায় পানি বাড়তে থাকায় সম্প্রতি জেলেদের জালে বড় আকৃতির মাছ ধরা পড়ছে। সেই ধারাবাহিকতায় শনিবার রাতে আদু শেখ বরশি পাতলে ভোর রাতে তার বরশিতে আটকা পড়ে বাগাড়টি। খবর ছড়িয়ে পড়লে বাজারে উৎসুক মানুষের ভিড় জমে। মাছটি ওজন করে দেখা যায় এর ওজন প্রায় ৪২ কেজি। পরে নিলামে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ১৮ জন ভাগ করে কিনে নেন।
মাছের অংশীদার বাবুল জানান, “এত বড় বাগাড় মাছ পদ্মায় এ বছর প্রথম ধরা পড়লো। বিষয়টি এলাকার জন্য বিরল ও গর্বের।”
তবে এই বাগাড় মাছ নিয়ে উদ্বেগ জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংস্থার (IUCN) তালিকায় বাগাড়কে ‘মহাবিপন্ন’ (Critically Endangered) প্রজাতি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ফলে প্রজাতিটি বিলুপ্তির ঝুঁকিতে রয়েছে।
বাংলাদেশের বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২ অনুযায়ী বাগাড় শিকার, ধরা ও বিক্রি করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। তা সত্ত্বেও এই মাছ প্রকাশ্যে নিলামে বিক্রি হওয়া প্রশ্ন তুলেছে আইন বাস্তবায়ন নিয়ে।
ফরিদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার বলেন, “বাগাড় মাছ বড় হলে মৎস্য সংরক্ষণ আইনে তেমন বাধা নেই। তবে বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইনে এটি দণ্ডনীয় অপরাধ। আমরা সাধারণত ঝাটকা বা ছোট মাছ রক্ষা নিয়ে কাজ করি। বড় মাছের ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেওয়ার এখতিয়ার আমাদের কম।”
উল্লেখ্য, দেশের বিভিন্ন এলাকায় বাগাড় মাছ নিলামে বিক্রি হলেও এখনো তেমন কোনো কঠোর আইন প্রয়োগ দেখা যায়নি।