শিরোনাম
◈ কর কাঠামোতে বড় পরিবর্তন আসছে, মূল্যস্ফীতির চাপে নুইয়ে পড়বে চাকরিজীবীরা? ◈ ডিসেম্বরের মধ্যে অবশ্যই নির্বাচন হতে হবে: আমির খসরু (ভিডিও) ◈ ফারুক আহমেদকে সরিয়ে দেওয়া নিয়ে যা বললেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী (ভিডিও) ◈ রাজনৈতিক সহিংসতায় পথশিশুর প্রাণহানি ১৬৮, শতাধিক চোখ হারানোর শিকার: গবেষণা প্রতিবেদন ◈ ভারতে নতুন করে করোনার ঢেউ? আক্রান্ত তিন হাজারের কাছাকাছি ◈ প্রবাসীদের টাকায় প্রবাসীদের জন্য হাসপাতাল: আসিফ নজরুল ◈ ট্রাইব্যুনাল থেকে সরাসরি সম্প্রচার হবে শেখ হাসিনার বিচারকাজ ◈ চীনা বাণিজ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে বৃহৎ প্রতিনিধি দল ঢাকায়, বিনিয়োগে নতুন সম্ভাবনার ইঙ্গিত ◈ বিএনপিকে ২ জুন আবার যমুনায় আমন্ত্রণ প্রধান উপদেষ্টার ◈ ব্যালন ডি’অরের জন‌্য নি‌জে‌কে যোগ‌্য ভাব‌লেও দেম্বেলের চোখ চ্যাম্পিয়নস লিগে

প্রকাশিত : ২৮ মে, ২০২৫, ০৫:২৪ বিকাল
আপডেট : ৩১ মে, ২০২৫, ০৭:০০ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

লালমনিরহাটে আ.লীগের ৩৮জনকে আসামি করে মামলা

জিন্নাতুল ইসলাম জিন্না, লালমনিরহাট : লালমনিরহাটে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ৬ছাত্রকে পুড়িয়ে হত্যা ও শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনার নয় মাস পর জেলা আ'লীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সুমন খানকে প্রধান করে আওয়ামী লীগের ৩৮ জনের নামে লালমনিরহাট সদর থানায়্ হত্যা মামলা হয়েছে। এছাড়াও এই হত্যা মামলায় অজ্ঞাত আরও ৩০ থেকে ৩৫ জনকে আসামী করা হয়। মামলা দায়েরের পর পরই অভিযান চালিয়ে আ'লীগের ৬ নেতাকে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ।

মঙ্গলবার (২৭ মে) রাতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্র প্রতিনিধি আরমান আরিফ (২৭) লালমনিরহাট সদর থানায় এ মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় তাহহিয়াতুল হাবিব মৃদুল (২৬), মোঃ রুহুল আমিন (২৫), কামুজ্জামান সুমন (২৫) ও শাহীন ইসলাম (৩০) নামে ৪ ছাত্র প্রতিনিধিকে স্বাক্ষী করা হয়।

শাখাওয়াত হোসেন সুমন খান লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং জেলা শহরের কালীবাড়ি মাস্টারপাড়া এলাকার মৃত বাচ্চু খানের ছেলে।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, পৌর আ'লীগের সক্রিয় সদস্য শরীফ মোহাম্মদ আতাউল্লাহ (৫০), আ'লীগ নেতা জাহিদ হাসান ওরফে ভুট্ট কমিশনার (৪৮), আ'লীগ নেতা সেলিম খান বকুল (৫৬), আ'লীগ নেতা বাবলু মিয়া (৪২), যুবলীগ নেতা আমিরুল হক চৌধূরী দোয়েল (৩৪) ও যুবলীগ নেতা জুয়েল শেখ(২৮)।

গ্রেফতারকৃত শরীফ মোহাম্মদ আতাউল্লাহ এক সময় বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত থাকলেও চাঁদাবাজি ও দখলবাজিসহ সাংগঠনিক পরিপন্হি কাজের কারনে বিএনপি থেকে তাকে বহিস্কার করা হয়। পরে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে ভোল্ট পাল্টিয়ে আ'লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত হন এবং হুন্ডি সুমনের অর্থ ও বুদ্ধিদাতা হিসেবে কাজ করেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ সরকার কোটা বহাল করায় সারা দেশে এর বিরুদ্ধে ন্যায্য আন্দোলন গড়ে উঠলে বাদীসহ স্বাক্ষীরা ঘটনার দিন শহরের মিশনমোড় হইতে মিছিল নিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার যাওয়ার পথে লক্ষ্য করে আওয়ামীলীগের শতাধিক কর্মী বেআইনী ভাবে দেশিয় বিভিন্ন অস্ত্র নিয়ে শহিদ মিনারের সামনে অবস্থান করে আছে। বাদীদের মিছিল শহিদ মিনারের কাছে পৌছাইলে বেআইনী ভাবে গতিরোধ করতঃ ভীতি সঞ্চারের জন্য লালমনিরহাট জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সুমন খান (৪৬) এর প্রত্যখ্য মদত ও হুকুমে আওয়ামী অঙ্গসংগঠনের নেতা কর্মীরা মিছিলে হামলা চালায়। হামলার ফলে মিছিলের সবাই দৌড়াইয়া যাওয়ার সময় অনেকেই গুরুতর আহত হয়। এসময় নিহত ৬ ছাত্র প্রতিনিধি জোবায়ের হোসেন (১৭), আল শাহরিয়ার রিয়াদ তন্ময় (১৯), শাহরিয়ার আল আফরোজ শ্রাবণ (১৮), জনি মিয়া (২০), রাধিক হোসেন রুশো (১৯), মোঃ রাজিব উল করিম সরকার (১৮) দের ধরে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে সুমন খানের বহুতল বাড়িতে তালাবদ্ধ করে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করে। ছাত্র অভ্যুথ্থানে স্বৈরাচার আ'লীগ সরকার পতন হওয়ার পর ৬ ছাত্র প্রতিনিধিকে কোথাও পাওয়া যায় না। অনেক খোঁজাখুজি করে তাদের কোথাও না পাইলে তাদের বাবা, মা ও অভিভাবকগণ চিন্তিত হয়ে পড়েন। ঘটনার পরদিন অন্যান্য ছাত্র প্রতিনিধি ও ছাত্ররা তাদের সহযোদ্ধাদের খুজতে বাহির হয়। পরে ওইদিনই আ'লীগ নেতা সুমন খানের আগুনে পুড়িয়ে যাওয়া বহুতল ভবনের একটি রুমে পুড়ে ভস্ম হওয়া ৬ ছাত্র প্রতিনিধির মরদেহ উদ্ধার করা হয়।  

এই মামলায় আওয়ামীলীগের ৩৮ জনের নাম উল্লেখসহ আরও ৩০ থেকে ৩৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, এর আগে হত্যা ও অর্থ পাচারসহ ১০টি মামলায় লালমনিরহাটের বহুল আলোচিত শীর্ষ সন্ত্রাসী, হুন্ডি ব্যবসায়ী ও ৬ ছাত্র হত্যা মামলার হত্যা মামলার প্রধান আসামি জেলা আ'লীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সুমন খানকে গত বছরের ১১ নভেম্বর রাত ১১টার দিকে পালিয়ে যাওয়ার সময় লালমনিরহাট সদর উপজেলার তিস্তা সড়ক সেতু টোল প্লাজা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে সদর থানা পুলিশ।

এ ব্যাপারে লালমনিরহাট সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি তদন্ত) ও তদন্তকারী অফিসার বাদল কুমার মন্ডল জানান, আইনী জটিলতার কারনে দীর্ঘদিন পর ৬ছাত্র হত্যা মামলাটি রেকর্ড করা হয়। এর পরপরই অভিযান চালিয়ে এজাহার নামিয় ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকী আসামীদের গ্রেফতার অভিযান অভ্যাহত রয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়