শিরোনাম
◈ সাইকেল কিনতে ৩ হাজার টাকা চুরি, দেখে ফেলায় দুই খালাকে হত্যা ◈ আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপনে কী বলা আছে? ◈ দ‌ক্ষিণ আ‌ফ্রিকার বিরু‌দ্ধে বাংলাদেশের দুর্দান্ত জয় ◈ বিএসএফ সুপরিকল্পিতভাবে পুশইন করছে, সীমান্তে সতর্ক বিজিবি ◈ ‘যাত্রীপ্রতি ২০০ টাকা’ ঈদের সময় অতিরিক্ত ভাড়া চান বাস মালিকরা, সরকারি প্রতিক্রিয়া কি? ◈ বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল হবে না ভারতে! সমস্যার কারণ পাকিস্তান ◈ বিদেশের মাটিতে পাকিস্তানের কাছে হারলো ভারত! ◈ অ‌স্ট্রেলিয়ান শন টেইট বাংলা‌দেশ দ‌লের নতুন পেস বোলিং কোচ ◈ পুলিশের হাতে ‘মারণাস্ত্র’ থাকবে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ◈ হাসিনাপুত্র জয় নাগরিকত্ব নিলেন যুক্তরাষ্ট্রের, নিয়েছেন শপথ

প্রকাশিত : ১২ মে, ২০২৫, ০৩:৩০ দুপুর
আপডেট : ১২ মে, ২০২৫, ০৮:২০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কক্সবাজার সদর হাসপাতালের চিকিৎসা সেবার বিপর্যয়, অর্ধকোটি মানুষের মাথায় হাত!

হাবিবুর রহমান সোহেল, কক্সবাজার : সারাবিশ্বের ভ্রমন পিপাসু মানুষের পছন্দের তালিকায় রয়েছে কক্সবাজার। আবার জেলার ২৫ লাখ মানুষের সাথে যুক্ত হয়েছে ১৫ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। এমন একটি জন গুরুত্বপুর্ন জেলাতে এক মাত্র সদর হাসপাতালটির নাজুক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। চরম অর্থ সংকট ও টানাপোড়নে অবশেষে কক্সবাজার জেলার প্রধান সরকারি চিকিৎসা কেন্দ্র কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের বিশেষায়িত বিভাগ আইসিওসহ সিসিইউ বন্ধ হয়ে গেছে। টানা ৯ মাস ৩০ চিকিৎসক সহ ১৩০ জন কর্মচারি বিনা বেতনে সেবা প্রদান করে চালু রেখেছিল ওইসব বিভাগ।

কিন্তু তা আর সম্ভব না হওয়ায় বৃহস্পতিবার (৮ মে) এসব সেবা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। যার কারনে জেলার অসংখ্য মানুষ ও রোহিঙ্গারা প্রতিনিয়ত চিকিৎসা অভাবে মারা যাচ্ছেন বলে জানান একাধিক ভোক্তভোগী। এমন পরিস্থিতি থেকে দ্রুত মুক্তির দাবী জানিয়েছে লাখোও মানুষ। হাসপাতালে সহসা এসব সেবা চালু না হলে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারী দিয়েছেন ছাত্রনেতারা। 

বিষয়টি উধ্বর্তন মহলকে লিখিতভাবে অবহিত করেছেন বলে জানান, হাসপাতালের তত্ত্বাবাধয়ক ডাক্তার মং টিং ঞো। মুলত ২০১৯ সাল থেকে রোহিঙ্গা সংকটে স্থানীয়দের জন্য বিশ্বব্যাংকের বরাদ্দ অর্থে আন্তর্জাতিক ও দেশি বিভিন্ন এনজিও জেলাব্যাপী হাসপাতাল ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বিভিন্ন সহায়তার অংশ হিসেবে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চালু করা হয়েছিল আইসিইউ, সিসিইউ, জরুরি প্রসূতি এবং শিশু সুরক্ষা সেবা কার্যক্রম। জেলার ২৫ লাখ মানুষের সঙ্গে ২০১৭ সালে যোগ হয়েছে ১২ লাখ রোহিঙ্গা। তার আরো অলিখিত আছে ৫ লাখেরও বেশি।

আর প্রতিবছর কক্সবাজারে বেড়াতে আসে কয়েক লাখ পর্যটক। বিপুল জনগোষ্ঠীর উন্নত সেবার আধুনিক সেবা প্রতিষ্ঠান ২৫০ শয্যার কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল। হাসপাতালটিতে সরকারি মঞ্জুরি হওয়া ৩২৮টি পদের মধ্যে ৭৬টি শূন্য রয়েছে। জরুরি বিভাগে প্রতিদিন গড়ে পাঁচ শতাধিক রোগী সেবার জন্য আসে। এসব রোগীদের মাত্র তিনজন চিকিৎসক সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। ন্যূনতম সেবা চালু রাখতে হলে জরুরি বিভাগে অন্তত ১২ জন চিকিৎসক প্রয়োজন। 

এ ছাড়া ২৫০ শয্যার হলেও হাসপাতালে ইন্ডোরে গড় হিসাবে প্রতিদিন ৮০০ থেকে ৯০০ রোগী ভর্তি থাকে। এসব রোগীর ছাপ সামলাতে বরাবরে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।হাসপাতাল থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বব্যাংকের ‘স্বাস্থ্য ও জেন্ডার সাপোর্ট প্রকল্প (এইচজিএফপি), স্বাস্থ্য ও লিঙ্গ সহায়তা প্রকল্পের (এইচজিএস) অধীনে রোহিঙ্গা সংকটে স্থানীয়দের জন্য বিশ্বব্যাংকের বরাদ্দ অর্থে আন্তর্জাতিক ও দেশি বিভিন্ন এনজিও জেলাব্যাপী হাসপাতাল ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বিভিন্ন সহায়তা দিয়ে আসছে ২০১৯ সালের শুরু থেকে।

এতে কক্সবাজার স্বাস্থ্য বিভাগে সরকারিভাবে নিয়োগ করা জনবল ছাড়াও কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে  ১৯৯ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর পদায়ন করা হয়েছিল। যার অধিনে হাসপাতালটিতে চালু করা হয়েছিল আইসিইউ, সিসিইউ, জরুরি প্রসূতি এবং শিশু সুরক্ষা সেবা কার্যক্রম। কিন্তু প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয় ২০২৪ সালের জুন মাসে। ওই সময় বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যম সহ নানাভাবে সংবাদ প্রকাশের পর সরকারি প্রচেষ্টায় প্রকল্পের মেয়াদ ৩ মাস বাড়িয়ে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বর্ধিত করে। 

কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মং টিং ঞো বলেন, ‘প্রকল্প বন্ধ হওয়ার পর ইনক্লুসিভ সার্ভিসেস অপারেটিং (আইএসও) নামের একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার নতুন একটি প্রকল্পের অনুমোদন হওয়ার আশ্বাস পাওয়া যায়। যার প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও কর্মচারিদের সাথে আলোচনা করে আইসিইউ, সিসিইউ সহ বিশেষায়িত বিভাগ সমুহ চালু করা হয়। যেখানে ৩০ জন চিকিৎসক ও ১ শত কর্মচারি ছিল। যারা গত ৯ মাস ধরে বিনা বেতনে সেবা প্রদান করে আসছিলেন এবং বিভাগ সমুহ চালু ছিল।

’নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, মুলত বিশেষায়িত বিভাগ সমুহ এনজিও’র উপর নির্ভরশীল। আইসিইউ ও সিসিইউ সহ কয়েকটি বিভাগ সরকারি ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতালের অধিনে না। গত জুন মাসে এসে এনজিও প্রকল্প বন্ধ হয়ে যায়। পরে তিনমাস বাড়ানো হলেও পরে সেপ্টেম্বর এ বন্ধ হয়ে যায়। এরপর বিনা বেতনে অনেকেই চালিয়ে গেছে প্রকল্প আসবে এই আশায়। কিন্তু আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে এখনো প্রকল্প আটকে আছে। এর মধ্যে অনেকেই চাকরি ছেড়ে দিয়ে চলে গেছে। জেলার সচেতন মহল এই ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তসহ সরকারের জরুরী হস্তক্ষেপ কামানা করেন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়