গাজীপুরের শ্রীপুরে মো. নাজমুল ইসলাম হত্যা মামলার তিন আসামির তালাবদ্ধ বাড়িতে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ পাওয়া গেছে। আগুনে তিনটি বসতঘরের আসবাব ও ধান-চাল পুড়ে গেছে।
আজ রোববার ভোররাতে উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের যোগীরসিট গ্রামের গুজারমোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘর পুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা হলেন যোগীরসিট গ্রামের মফিজ উদ্দিনের ছেলে মো. ওমর ফারুক, মো. বাবুল মিয়া ও স্বপন মিয়া।
নিহত মো. নাজমুল ইসলাম (২৮) উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের যোগীরসিট গ্রামের মো. মোসলেম উদ্দিনের ছেলে।
সরেজমিনে দেখা যায়, আধপাকা তিনটি বসতঘরের সব আসবাব, গবাদিপশু, গাছপালা ও ধান-চাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ঘরের টিনের চাল, কাঠ, বাঁশ আগুনে পুড়ে অঙ্গার হয়ে আছে। পল্লী বিদ্যুতের কর্মীরা ঘরগুলো থেকে বিদ্যুৎ সংযোগের মিটারগুলো খুলে নিয়ে যান।
মফিজ উদ্দিনের স্ত্রী সায়মন নেছা বলেন, গত শুক্রবার রাতে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নাজমুল মারা যান। এ ঘটনায় আমার তিন সন্তানসহ নাতিদের আসামি করা হয়। ভয়ে তাঁরা বসতবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। মামলার বাদীপক্ষের লোকজন বসতবাড়ি ছেড়ে যেতে হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন। এ জন্য আমরা বসতবাড়িতে তালাবদ্ধ করে চলে আসি। ভোররাতে প্রতিবেশীরা আমাদের বাড়িতে আগুন জ্বলতে দেখে খবর দেন।
সায়মন নেছা বলেন, ‘আমরা কয়েকজন নারী বাড়িতে এসে দেখি, বসতবাড়ি আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আমাদের তিনটি বাড়ির সব শেষ। আমার ছেলে আর নাতিরা খুন করলে তাঁদের বিচার হবে। কিন্তু আমাদের বসতবাড়ি জ্বালিয়ে দিল কেন? আমাদের তিনটি বসতবাড়ির একটি সুইও অবশিষ্ট নেই।’
নাজমুলের চাচি শারমিন আক্তার বলেন, ‘আমাদের ছেলে খুন হওয়ার পর আসামিরা পরিকল্পিতভাবে তাঁদের বাড়িতে আগুন দিয়েছে। আমরা কেন আগুন দিতে যাব। আমরা তো আমাদের ছেলের চিন্তায় আছি।’
কাওরাইদ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. মোমেনুল কাদের বলেন, ‘আগুন লাগার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসেছি। আগুনে বসতবাড়ি পুড়ে গেছে। তবে বাদী-বিবাদীরা একে অপরকে দোষারোপ করছে। বিষয়টি আমি পুলিশকে জানিয়েছি।’
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল আজকের পত্রিকাকে বলেন, আসামিদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগের খবর পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এর আগে গত ১ মে উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের যোগীরসিট গ্রামে ধানখেতের আইলে ধানের আঁটি রাখাকে কেন্দ্র করে বসতবাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে আল আমিন ফেরদৌস ও রাকিব মিলে ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করে নাজমুলের ও তাঁর বাবা মোসলেম উদ্দিনের নাড়িভুঁড়ি বের করে ফেলেন বলে অভিযোগ করা হয়।