ইফতেখার আলম বিশাল, রাজশাহী প্রতিনিধি : রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের সাবেক এপিএস এবং রাজশাহী মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াহেদ খান টিটুকে আটক করেছে নওগাাঁর বাদগাছী থানা পুলিশ।
রাজশাহী মহানগরের রাজনীতি এবং অপরাধজগতের এক আলোচিত নাম আব্দুল ওয়াহেদ খান টিটু। এক সময়ের ছাত্রলীগ নেতা থেকে সাবেক সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের এপিএস হিসেবে দায়িত্ব পালন করা টিটু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রাজনৈতিক শক্তির ছত্রছায়ায় হয়ে ওঠেন একজন কথিত ‘গডফাদার’। বর্তমানে তিনি রাজশাহী মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হলেও তার বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক গুরুতর অভিযোগ, যেগুলো শুধু রাজনৈতিক নয়, বরং সামাজিক নিরাপত্তার জন্যও হুমকিস্বরূপ।
স্থানীয় সূত্র এবং রাজশাহীর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক সদস্যের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, টিটু দীর্ঘদিন ধরে রাজশাহী শহরে একাধিক কিশোর গ্যাংয়ের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। তার নির্দেশেই কিশোর গ্যাং সদস্যরা প্রতিপক্ষের ওপর হামলা, ভাঙচুর ও দখলদারি কর্মকাণ্ড চালাত। শিক্ষার্থীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে বিভিন্ন অপরাধে ব্যবহার করা হতো।
টিটুর বিরুদ্ধে জমি দখল, সরকারি জমিতে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ এবং ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে সাধারণ মানুষের সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ বহু পুরনো। এমনকি তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, সে একাধিকবার থানায় ঢুকে পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছে, কিন্তু রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে কোনো আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের সূত্রে জানা যায়, টিটু রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (রুয়েট) কর্মরত থাকলেও তিনি নিয়মিত অফিস না করে মাসের পর মাস বেতন উত্তোলন করেছেন। সরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত থেকে এমন অনিয়ম এবং দাপ্তরিক দায়িত্বে অনুপস্থিতির বিষয়টি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দায়িত্বহীনতার চিত্রও তুলে ধরে।
স্থানীয়রা বলছেন, টিটুর রাজনীতির পেছনে অপরাধই ছিল প্রধান চালিকাশক্তি। বিভিন্ন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, প্রভাব খাটিয়ে চাঁদাবাজি, অবৈধ ভূমি দখল এবং প্রকল্পভিত্তিক কমিশন বাণিজ্যের মাধ্যমে অল্প সময়েই তিনি বিপুল সম্পদের মালিক হন। রাজশাহী শহরে একাধিক বাড়ি, বিলাসবহুল গাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক এখন টিটু, যেগুলোর উৎস সম্পর্কে প্রশ্ন তুলেছে সাধারণ মানুষ।