শিরোনাম

প্রকাশিত : ০৬ মে, ২০২৫, ০৮:০৪ রাত
আপডেট : ০৭ মে, ২০২৫, ০৩:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

নোয়াখালীতে হামলা চালিয়ে ভূমি দখলের চেষ্টা, আহত ৪

মো: সোহেল, নোয়াখালী প্রতিনিধি : নোয়াখালীর সুবর্ণচরে বিএনপি নেতার ইন্ধনে অসহায় এক পরিবারের ভূমি জোরপূর্বক দখলে নিতে অগ্নিসংযোগ ও সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে ৩ নারীসহ ৪জনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ ওঠেছে স্থানীয় ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সভাপতি হুমায়ূন মাঝি ও তাঁর সঙ্গীয় সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে।

উপজেলার চরজব্বর ইউনিয়নের উত্তর বাগ্যা গ্রামে এই অগ্নিসংযোগ ও সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় আহতরা হলেন, উপজেলার উত্তর চর বাগ্যা গ্রামের মো. সেলিমের স্ত্রী বিউটি বেগম (৪৫), তাঁর ছেলে মো. স্বপন (২৫), ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য পারুল বেগম (৪৮) ও মারজাহান (১৮)। আহতদের মধ্যে বিউটি বেগম ও মো. স্বপন নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

ভুক্তভোগী নারী বিউটি বেগম বলেন, আমি একজন স্বামী পরিত্যাক্তা নারী। দীর্ঘ ৩০ বছর যাবৎ দুই ছেলে সন্তানকে নিয়ে আমার মালেকীয় ও দখলীয় ভূমিতে বসবাস করে আসছি। গত ২-৩ বছর ধরে স্থানীয় ভূমিদস্যু ও ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সভাপতি হুমায়ূন মাঝি ও তার ভাই নুর উদ্দিন মাঝি আমার দখলীয় চাষের জমি জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা করে আসছে। এনিয়ে বিএনপি নেতা চরজব্বর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল্যাহ মিয়াসহ স্থানীয়দের কাছে বহুবার বিচার চেয়েছি, কিন্তু বিচার পায়নি।

তিনি বলেন, সর্বশেষ গত শনিবার রাতে আবদুল্যাহ মিয়া চেয়ারম্যানের ইন্ধনেই হুমায়ূন মাঝি ও নুর উদ্দিন মাঝির নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে আমার বসত বাড়িতে গিয়ে রান্না ঘরে অগ্নিসংযোগ করে আমাকে জমির দখল ছেড়ে দিতে হুমকি দিয়ে যায়। পরের দিন রোববার অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আমি কোর্টে একটি মামলা দায়ের করলে সোমবার সকালে সন্ত্রাসীরা আরো ক্ষুদ্ধ হয়ে আমার চাষের জমিতে ট্রাক্টর নামিয়ে দখল করতে যায়। এসময় বাঁধা দেয়ায় সন্ত্রাসীরা আমাদের ওপর হামলা চালিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আমিসহ আমার পরিবারের ৪ সদস্যকে আহত করে।

ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করে বলেন, ঘটনার পর স্থানীয়দের সহযোগিতায় গুরত্বর আহত বিউটি বেগম ও তার ছেলে স্বপনকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করলে বিএনপি নেতা আবদুল্যাহ চেয়ারম্যান প্রভাব খাটিয়ে তাদেরকে প্রাপ্য চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করেন এবং ২৪ ঘন্টা না যেতেই এখনো গুরত্বর অসুস্থ মা-ছেলেকে ছাড়পত্র দিয়ে বিনা চিকিৎসায় বাড়ি চলে যেতে বাধ্য করছেন। এই নারকীয় সন্ত্রাসী হামলার বিচার দাবি করেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।

স্থানীয়রা বলছেন, জায়গা জমি নিয়ে বিরোধ থাকলেও হামলার যে নারকীয় ঘটনা ঘটনানো হয়েছে, তা অমানবিক। এই অগ্নিসংযোগ ও সন্ত্রাসী হামলার বিচার হওয়া উচিৎ বলে মনে করছেন তারা।

চরজব্বর ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. শাহজাহান বলেন, বিউটি বেগমের মতো নিরীহ পরিবারে ভূমি জবরদখলকারী হুমায়ূন, ইউসূফ নুর উদ্দিনদের কোন দল নাই, এরা হাইব্রিড। এরা আওয়ামী লীগের সময় আওয়ামী লীগ-জাতীয় পার্টি। এখন আবার বিএনপি সেজেছে। এরা এখন বিএনপির নাম ভাঙিয়ে এসব দখলবাজি, চাঁদাবাজি করছে। অগ্নিসংযোগ ও হামলার ঘটনায় এদের বিচার হওয়া উচিৎ।
এবিষয়ে অভিযুক্ত হুমায়ূন মাঝি মুঠোফোনে জানান, তিনি ৩ বছর আগে জনৈক নুর ইসলামের বন্দোবস্তকৃত ৪০ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। তাঁর ক্রয়কৃত জমি তিনি চাষ করতে গেলে বিউটি বেগম ও তার পরিবারের লোকজন বাঁধা দিয়ে তাদের ওপর হামলা করলে তাল ভাই আবদুল করিম আহত হন। এই নিয়ে তাদের পক্ষ থেকেও বাঁধা প্রদানকারীদের প্রতিরোধ করা হয়।

তবে ইন্ধন দুরের কথা এই বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল্যাহ মিয়া। তিনি বলেন, রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতে তাঁর নাম জড়ানোর চেষ্টা করছে কিছু সুবিধাবাদী লোক।

এ বিষয়ে চরজব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিন মিয়া বলেন, এই ঘটনায় সোমবার রাতে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য মারজাহান বেগম বাদি হয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করলে মামলা রেকর্ড করা হয়। অভিযুক্ত আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
নোয়াখালী।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়