শিরোনাম
◈ ব্যাংক একীভূত হবেই, আতঙ্কের কিছু নেই: গভর্নর ◈ পৃথিবীর কোথাও বাংলাদেশের মতো ব্যাংক লুট হয়নি: অর্থ উপদেষ্টা ◈ জামিনে বের হয়ে ফের গ্রেফতার শার্শা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোতা ◈ ‌কির‌গিজস্তা‌নের ক্লাব মুরাসের কাছে হেরে চ্যালেঞ্জ লিগ থেকে ঢাকা আবাহনীর বিদায় ◈ জাপান ও দ‌ক্ষিণ কেরিয়ার বিরু‌দ্ধে ‌বিশ্বকা‌পের প্রস্তু‌তি ম‌্যাচ খেলবে ব্রাজিল ◈ জনরায় পেলে মিলেমিশে দেশ পরিচালনার অঙ্গীকার তারেক রহমানের ◈ কোথায় গেল ভোলাগঞ্জের সাদা পাথর? ◈ শেখ হাসিনাকে যেভাবে ফেরানোর পরিকল্পনা চলছিল, স্বীকারোক্তিতে জানালেন মেজর সাদিকের স্ত্রী সুমাইয়া ◈ বাংলাদেশ সম্ভাব্য সব উপায়ে ব্যবসাবান্ধব হতে চেষ্টা করছে : প্রধান উপদেষ্টা  ◈ লাফার্জ হোলসিমের মাটি সংগ্রহে ফসলি জমি ও জলাশয় ধ্বংস: পরিবেশ ও কৃষি বিপর্যয়ের আশঙ্কা

প্রকাশিত : ০৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ১০:৩১ দুপুর
আপডেট : ০৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ১০:৩১ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মেঘমালা সাজেকসহ খাগড়াছড়ির ৫টি দর্শনীয় স্থান

মোবারক হোসেন, খাগড়াছড়ি: [২] পাহাড়, ঝরনা, আঁকাবাঁকা পথ, সবুজের সমারোহ, লেক সমৃদ্ধ করেছে পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়িকে। শীত মানেই খাগড়াছড়িতে উপচে পড়া ভিড়। ভোরের কুয়াশায় পাহাড়ের রূপ যেন আরও বৃদ্ধি পায়। সাজেকসহ যত দূর দৃষ্টি যায়, ছোট-বড় সবুজ পাহাড়। ওপর থেকে দৃষ্টি মেললে যেন সবুজ সমুদ্রের ঢেউ। একটি থেকে আরেকটি পাহাড়ের মাঝে সাদা তুলোর মতো আটকে আছে মেঘ। দেশের মধ্যে পর্যটনের অপরূপ জায়গা এই সাজেক। রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার একটি ইউনিয়ন এটি। সাজেকের অবস্থান খাগড়াছড়ি জেলা থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে আর ভারতের রাজ্য মিজোরামের সীমান্ত থেকে দূরত্ব মাত্র ১৫ কিলোমিটার। 

[৩] পাহাড়ি সাজেকে আছে ‘রুইলুই’ এবং ‘কংলাক’ নামের দুটি বসতি বা ’পাড়া’। এখানে লুসাই, পাংখোয়া ও ত্রিপুরা জাতিগোষ্ঠীর বসবাস। রাঙামাটির অনেকটা অংশই দেখে যায় সাজেক থেকে। তাই সাজেককে বলা হয় ‘রাঙামাটির ছাদ’। সাজেক রাঙামাটি জেলায় অবস্থিত হলেও এখানে যাতায়াত খাগড়াছড়ি থেকে সহজ। খাগড়াছড়ি শহর থেকে সাজেকের দূরত্ব ৭০ কিলোমিটার। সাজেকের রুইলুইপাড়া সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১ হাজার ৭২০ ফুট। আর ১৮০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত কংলাক পাহাড়। সাজেক সারা বছরই বর্ণিল সাজে সেজে থাকে। তবে বর্ষা, শরৎ ও হেমন্তে সাজেকের চারপাশে মেঘের খেলা দেখা যায় বেশি। তাই এই সময়টাই সাজেক ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত।

[৪] সাজেকে সর্বত্র মেঘ, পাহাড় আর সবুজের দারুণ মিতালি চোখে পড়ে। সাজেকের পাহাড়ে মেঘ-রোদের খেলা চলে প্রায়ই। চারপাশে মনোরম পাহাড়ের সারি, সাদা তুলোর মতো মেঘের সারি আপনাকে মুগ্ধ করবেই। কখনো খুবই গরম, একটু পরই হঠাৎ বৃষ্টি এবং তার কিছু পরেই হয়তো চারদিকে ঢেকে যায় মেঘের চাদরে। সাজেকে তিনটি হেলিপ্যাড আছে। সেখান থেকে সূর্যোদয় আর সূর্যাস্তের অপূর্ব দৃশ্য দেখা যায়। তবে বৃষ্টি থাকলে দেখতে হবে মেঘমালা। পর্যটন রিসোর্ট গড়ে তোলার পর এখন দেশের পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণে পরিণত হয়েছে রুইলুইপাড়া। সাজেক উপত্যকার এসব অদেখা গ্রাম ছবির মতো সুন্দর। সাজেক মূলত ‘রুইলুই’ এবং ‘কংলাক’ নামের দুটি বসতি বা ’পাড়া’। এখানে লুসাই,পাংখোয়া ও ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর বসবাস।

আলুটিলা গুহা

[৫] আলুটিলা গুহা খাগড়াছড়ির অন্যতম জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান। এটি আলুটিলা পর্যটনকেন্দ্রে অবস্থিত এক প্রাকৃতিক গুহা। এটিকে দেবতার গুহাও বলা হয়ে থাকে। যারা রোমাঞ্চ পছন্দ করেন তাদের দারুণ লাগবে এই গুহা। আলো প্রবেশ করতে পারে না বিধায় গুহাটি খুবই অন্ধকার ও শীতল। এজন্য ভেতরে প্রবেশ করতে টর্চলাইট বা মশাল জ্বালিয়ে নিতে হয়। কর্দমাক্ত ও পিচ্ছিল এ গুহায় মশাল জ্বালিয়ে প্রবেশ করলে দারুণ এক অনুভূতি হবে। গুহার এপাশ থেকে ওপাশ যেতে সময় লাগে প্রায় ১৫ মিনিট। দৈর্ঘ্য ৩৫০ ফুট। ৪০ টাকা প্রবেশ ফি দিয়ে প্রবেশ করতে হয়। খাগড়াছড়ি সদর থেকে মাত্র ৭ কিলোমিটার দূরে মাটিরাঙ্গা উপজেলায় এটি অবস্থিত।

রিসাং ঝরনা

[৬] আলুটিলা গুহার খুব কাছেই রিসাং ঝরনার অবস্থান। মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে। এ ঝরনার কাছেই আবার আরেকটি ঝরনা আছে, যার দূরত্ব ২০০ গজও হবে না। প্রায় ৩০ মিটার উঁচু পাহাড় থেকে আছড়ে পড়া পানি দেখলেই পানিতে নামতে ইচ্ছা করবে। শরীর জুড়িয়ে নিতে ইচ্ছা হবে ঝরনার প্রবাহমান ধারায়।খাগড়াছড়ি সদর থেকে ঝরনার দূরত্ব ১১ কিলোমিটার। আসা যাবে বাস বা প্রাইভেটকার অথবা স্থানীয় যানবহনে। মোটরসাইকেলে আলুটিলা থেকে ভাড়া নেবে জনপ্রতি ৫০ টাকা আর ফেরার সময় নেবে জনপ্রতি ১০০ টাকা।

হাতিমাথা

[৭] হাতিমাথা মূলত একটি দুর্গম পাহাড়। এর চূড়া থেকে আশেপাশের অন্যান্য পাহাড়, পাহাড়ের পাদদেশে সবুজ গাছপালা, মেঘ পাহাড়ের লুকোচুরি খেলাসহ পাহাড়িদের নির্মিত ঘর-জীবনবৈচিত্র দেখা যায়। চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড এ পাহাড়ে ৩০৮ ফুট লম্বা লোহার সিঁড়ি তৈরি করেছে। এই দুর্গম সিঁড়িপথ দিয়ে ১৫ গ্রামের বাসিন্দারা চলাচল করে। অনেকের কাছে এটি স্বর্গের সিঁড়ি নামে পরিচিত। এখানে যেতে চাইলে সবচেয়ে ভালো হয় একজন গাইড নিলে। কারণ প্রথম কেউ যেতে চাইলে পথ বিভ্রাট হতে পারে। খাগড়াছড়ি সদর থেকে পানছড়ি যাওয়ার পথে জামতলী যাত্রী ছাউনি নামতে হবে। এরপর জামতলী থেকে চেঙ্গী নদী পার হয়ে প্রায় দেড় ঘন্টা ট্রেকিং করে এই পাহাড়ে যেতে হবে।

বৌদ্ধ মন্দির

[৮] খাগড়াছড়ির পানছড়িতে অবস্থিত এ মন্দিরটি বাংলাদেশের অন্যতম বড় বৌদ্ধ মন্দির। শান্তিপুর গভীর অরণ্যে প্রায় ৬৫ একর জায়গায় জুড়ে এ মন্দিরটি বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র তীর্থস্থান। ৫০ ফুট উচ্চতার বিশাল এক নান্দনিক বৌদ্ধের প্রতিকৃতি আছে, এখানে যা তৈরি করতে প্রায় চার বছর সময় লেগেছে। ধর্মীয় আচার পালনের জন্য সকাল ১১টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত পর্যটক প্রবেশ নিষেধ। খাগড়াছড়ি সদর থেকে এ বৌদ্ধ মন্দিরের দূরত্ব প্রায় ২৫ কিলোমিটার। সদর থেকে জিপ বা মাহেন্দ্র ভাড়া নিয়ে এখানে আসা যায়।

নিউজিল্যান্ড পাড়া

[৯] খাগড়াছড়ি সদর থেকে মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরে নিউজিল্যান্ড পাড়া অবস্থিত। পানখাইয়া পাড়া এবং পোরাছড়ার কিছু অংশ নিউজিল্যান্ডের মতো হওয়ায় স্থানীয়দের কাছে এটি নিউজিল্যান্ড পাড়া হিসেবে পরিচিত। এমনকি পানখাইয়া পাড়া থেকে পোরাছড়া গ্রামে যাওয়ার রাস্তাটির নামকরণ স্থানীয়রা করেছেন নিউজিল্যান্ড সড়ক নামে। সমতল ভূমিতে সবুজ শস্যখেত, সাদা মেঘের ভেলা ও পাহাড় মিলে দারুণ এক প্রাকৃতিক ল্যান্ডস্কেপ এ স্থানটি। নয়নাভিরাম এ প্রকৃতিতে চোখ রাখলে চোখ জুড়িয়ে যাবে। জেলা শহর ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যটন শহর খাগড়াছড়িতে ঘুরতে এসে এই নিউজিল্যান্ড পাড়াটিও সুযোগ পেলে দেখে যাওয়ার চেষ্টা করেন।

প্রতিনিধি/এনএইচ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়