শিরোনাম
◈ চট্টগ্রামে জুতার কারখানায় আগুন, নিয়ন্ত্রণে ১২ ইউনিট ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী

প্রকাশিত : ০৩ অক্টোবর, ২০২২, ১১:২০ দুপুর
আপডেট : ০৩ অক্টোবর, ২০২২, ১১:২০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বক আর পানকৌরিদের কলকাকলিতে মুখর ভুমি অফিস চত্ত্বর

মনিরুজ্জামান, বোরহানউদ্দিন (ভোলা) : শত শত বক আর পানকৌড়িদের কলকাকলিতে মুখর এখন ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার ভুমি অফিস চত্তর সহ আশ পাশের এলাকা। পাখিদের স্থায়ী এ অবাধ বিচরন স্থানীয়দের মধ্যে বেশ আলোড়ন সৃস্টি করেছে। সাড়া বছরই পাখিগুলো এখানে অবস্থান করছে। দিনে দিনে বিস্তৃত করছে তাদের বসতি। স্থানীয়রা ছাড়াও পাখিদের এ সৌন্দর্য দেখতে আসে বিভিন্ন স্থানের পাখি প্রেমিরা।

জনবহুল বোরহানউদ্দিন পৌরসভার কোলজুড়ে পাঁচ নং ওয়ার্ডে ভুমি অফিস চত্ত্বর। পিছনে বহমান ‘কালিগঞ্জ” খাল। সামনে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভবন। উভয়ের মধ্যে রাস্তা। যা অতিক্রম করে সামনে এগুলো কিংবা সহকারি কমিশনারের কার্যালয়ে ঢোকার মুখেই বুনো গন্ধ এসে নাকে লাগে। পাখি ও বিষ্ঠার তীব্র গন্ধ।

পাখির কলকাকলি বুঝিয়ে দেয়, এ এলাকায় শুধু মানুষই বাস করে না। এটি পাখিদেরও আবাসস্থল। মানুষ ও পাখির সহাবস্থানে তৈরি হওয়া প্রাকৃতিক পরিবেশের এক বাসভূমি। সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, গাছগুলোর মগডালে শত শত পাখি ঘর বেধেছে ।

ইতোমধ্যেই পাখিরা দখল করে নিয়েছে পোষ্ট অফিসের গাছসহ পাশাপাশি আরো কিছু এলাকা। নির্ভয়ে পাখিগুলো প্রায় দশ বছর ধরে স্থায়ী ভাবে বসবাস করে আসছে বলে জানালেন সিনিয়র সাংবাদিক শিমুল চৌধুরী ও সাবেক কাউন্সিলর সাইদুর রহমান লিটন।

পাখীদের এ অবাধ বিচরন মুগ্ধ করেছে এলাকার বাসিন্দাদের । ওই এলাকায় বসবাসকারি কয়েকটি পরিবারের সদস্যরা জানান, পাখিদের কলকাকলিতে স্থানীয়দের ঘুম ভাঙ্গে। ব্যস্ততম সড়কের উপড়ের বিশাল আয়তনের গাছ জুড়ে পাখিদের বসবাস।

চলাচলকারীদের গায়ে পাখিদের মল পড়লেও তারা বিন্ধু মাত্র অপ্রস্তুত হন না। তারা আনন্দের সাথেই তা মেনে নেন। দুর দুরান্ত থেকে আসছে উৎপুল্ল মানুষ পাখিদের কলকাকলি উপভোগ করছে। ভীড় করছে পাখি প্রেমিরাও। কেউ ছবি তুলে নিচ্ছে আপন মনে।

পাখিরাও যেন মানুষের প্রতিবেশি হয়ে বছরের পর বছর তাদের নিরাপদ আবাস গড়ে তুলেছে। এ যেন এক অন্যরকম উপলব্দি। মন যেন জুড়িয়ে যায়। এমন জনবহুল এলাকায় পাখিদের নিরাপদ আবাস স্থল অবাক করার মতো।

সহকারি কমিশনারের কার্যালয়ের পাশের চা দোকানী মাহাবুব হোসেন, অলিউল্যাহ বলেন, ১০ থেকে ১৫ বছর যাবত পাখিগুলো এখানে বাসা বেধে থাকছে। পাখি খুবই নিরাপদে থাকে। নিজেরা কোনো পাখি মারেন না, কাউকে মারতেও দেন না।

পাখিগুলো দিনরাত কিচিরমিচির করে। এই শব্দ তাঁদের ভালো লাগে। শিক্ষার্থী মাহির আশহাব লাবিব, আকাশ, রফিকুল ইসলাম, নিশাত, মহুয়া, তামান্না বলেন, মুক্ত আকাশে ডানা মেলে উড়ে চলা ও পাখিদের কলকাকলীতে মুখর থাকে এই এলাকা। প্রতিষ্ঠান থেকে আসা যাওয়ার সময় আমরা উপরের দিকে তাকাই।

আমাদের অনেক ভালো লাগে। সার্ভেয়ার ফিরোজ আলম, অফিস সহকারি সোহাগ বলেন দীর্ঘদিন আমাদের অফিসের চারদিকের গাছগুলোতে পাখিদের আবাসস্থল গড়ে উঠছে। কিচিরমিছির শব্দ ভালো লাগে।

গোধূলির রংমাখা সময়ে যখন পাখিগুলো ডানা মেলে আপন নীড়ে ফিরে। তখন গাছে গাছে যেন সাদা বকফুল ফুটেছে মনে হয়। আব্দুল জব্বার কলেজের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের সহকারি অধ্যাপক নীল কমল পাল, গণিতের মাহমুদুল আল ফারারি, বলেন, গাছের ডালে বসে সবুজ পাতার ফাঁকে বকপাখির কোনোটা ধবধবে সাদা কাশফুলের মতো পেখম মেলে শূন্যে ডানা খুলছে।

কোনো বকের মাথা থেকে ঘাড় ও গলার নিচের দিকটা কিছু হালকা খয়েরি বা ইটরঙের মতো দেখতে। মাঝেমধ্যে বিচ্ছিন্নভাবে উড়ে আসছে পানকৌড়ি।এ যেন জীব বৈচিত্রের অনন্য দৃষ্টান্ত। বোরহানউদ্দিন শিল্পকলা একাডেমির,সম্পাদক রাজিব রতন দে, বলেন, পাখিদের কিচিরমিচির ডাকে মুখোরিত হচ্ছে পুরো এলাকা।

মানুষ মন ভরে উপভোগ করছেন পাখির উড়া-উড়ি, কালকাকলি আর কিচিরমিচির ডাক। অনেকে পাখিদের অবাদ বিচরণ আর ডানা মেলে উড়ে বেড়ানো কিংবা দলবেঁধে পানিতে ভেসে চলার ছবি ক্যামেরাবন্দি করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

ক্যামেরায় ক্লিক পড়তেই ঝাঁক বেঁধে কিচিরমিচির শব্দে উড়তে শুরু করে আকাশে। পাখিদের বিচরণ ক্ষেত্র সুরক্ষা করার দাবী জানান তিনি। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা কেএম আসাদুজ্জামান বলেন, ‘পাখিরা সাধারণত যেখানে নিরাপদ মনে করে, সেখানেই দীর্ঘদিন অবস্থান করে। ওই এলাকাটি পাখিরা নিরাপদ মনে করে বলেই দীর্ঘদিন যাবত অবস্থান করছে।

’নেচার কনজারভেশন কমিটির(এনসিসি) ভোলা জেলা সমম্বয়কারী জসিম জনি বলেন, দেশের পাখি সমৃদ্ধ এলাকার মধ্যে দ্বীপ জেলা ভোলা অন্যতম।তাই এখানে পাখিদের বিচরণ ক্ষেত্র সুরক্ষা করতে হবে।বোরহাউদ্দিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাইফুর রহমান, জানান, ভোলা একটা গ্রিন প্যালেস।

পরিবেশ অনেক সুন্দর। ইকো সিস্টেম অনেক ব্যালেন্স । যার কারনে পাখিগুলো এখানে এসে থাকছে। বোরহানউদ্দিনের মানুষও অত্যান্ত পরিবেশ সচেতন।

ফলে সাড়া বছরই পাখিগুলো এখানে নির্বিগ্নে বসবাস করছে। অনেক সময় দেখা গেছে পাখির ডিম পড়ে গেছে কিংবা বাচ্চা পড়ে গেছে তা আমরা আবার পাখিদের বাসায় তুলে দিয়েছি ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়