শিরোনাম
◈ গোপালগঞ্জে কারফিউ শিথিল, সকাল ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বাইরে থাকার অনুমতি ◈ সেপ্টেম্বরে নেপা‌লের বিরু‌দ্ধে দুটি প্রীতি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ, হামজা ও সামিতকে দ‌লে পাওয়ার সম্ভাবনা কম ◈ জুলাই যোদ্ধা নারীরা নতুন যুদ্ধের মুখোমুখি ◈ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি: কী পাচ্ছে বাংলাদেশ, কী হারাতে পারে? ◈ রাতেই সোহরাওয়ার্দীতে জড়ো হচ্ছেন জামায়াতের নেতাকর্মীরা (ভিডিও) ◈ চাপাতি হাতে ব্যাগ ছিনিয়ে পুলিশের সামনেই হেঁটে গেলো ছিনতাইকারী, ভিডিও ভাইরাল ◈ রাশিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত ভারতের বৃহত্তম তেল শোধনাগার নায়ারা রিফাইনারির ওপর ইইউর নিষেধাজ্ঞা ◈ রাতের আকাশে ভেসে উঠলো ‘নাটক কম করো পিও’ (ভিডিও) ◈ জটিল ভয়ানক যে রোগে আক্রান্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প! ◈ কুড়িগ্রামে চাঁদা দাবি করা জামায়াতের সেই নেতা সাময়িক বহিষ্কার

প্রকাশিত : ১৭ জুলাই, ২০২৫, ০৫:৪২ বিকাল
আপডেট : ১৯ জুলাই, ২০২৫, ০৩:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আন্দোলনের ধাক্কায় রাজস্ব আদায়ে বড় ধস, জুনে ৯ হাজার ৯৫৫ কোটি টাকা কম আদায়

বিগত (২০২৪-২৫) অর্থবছরের শেষ মাস জুনে ৪৩ হাজার ৯২ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। যা সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৫ হাজার ৯৪৭ কোটি টাকা কম। এ মাসে এনবিআরের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ছিল ৬৯ হাজার ৩৯ কোটি টাকা। লক্ষ্যমাত্রার ৩৭ দশমিক ৫৮ শতাংশ অর্জন করা যায়নি। এছাড়া আগের অর্থবছরের জুনের তুলনায় রাজস্ব আদায় কমেছে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। এনবিআরের সর্বশেষ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

জুন মাসে আন্দোলনের কারণে রাজস্ব আদায়ে কিছুটা বাধাগ্রস্ত হওয়ার কথা জানিয়েছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান। তবে তথ্য বলছে, কিছুট নয়, আন্দোলনের কারণে বড় ধরনের রাজস্ব আদায়ে ব্যর্থ হয়েছে এনবিআর। আন্দোলনের কারণে কী পরিমাণ রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে তা নিরূপণ করতে এরই মধ্যে আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করেছে সরকার।

অর্থবছরের শেষ মাস জুনে রাজস্ব আদায়ের চাপ বাড়ে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুনে ৫৩ হাজার ৪৬ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় হয়েছিল। এ হিসাবে আগের অর্থবছরের তুলনায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরের শেষ মাস জুনে ৯ হাজার ৯৫৫ কোটি টাকা কম আদায় হয়েছে। এ মাসে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি ১৮ দশমিক ৭৭ শতাংশ। বিগত অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, আদায় হয়েছে ৩ লাখ ৭০ হাজার ৮৭৪ কোটি টাকার রাজস্ব। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার ৯২ হাজার ৬২৫ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় হয়নি বা ১৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ আদায় করা যায়নি।

রাজস্ব ব্যবস্থার সংস্কার ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানের অপসারণ দাবিতে কর্মসূচি পালন করেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। মে মাসের ধারাবাহিকতায় জুন মাসের শেষ সপ্তাহে কর্মসূচি পালিত হয় এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে। ২৮ ও ২৯ জুন কমপ্লিট শাটডাউন পালন করা হয়। পরে ২৯ জুন ব্যবসায়ীদের মধ্যস্থতায় কর্মসূচি প্রত্যাহার করে পরিষদ।

জুন মাসের পরিসংখ্যান বলছে, আমদানি, ভ্যাট ও আয়কর- তিন খাতেই নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি ছিল বিগত অর্থবছরের শেষ মাসে। জুন মাসে ১১ হাজার ২৬০ কোটি টাকার আমদানি শুল্ক অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল, আদায় হয়েছে ৭ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকা। নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি ১৯ দশমিক ৮৬ শতাংশ। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুনে এ খাত থেকে আদায় হয়েছে ৯ হাজার ১৮৮ কোটি টাকা।

একইভাবে ২৬ হাজার ৮৮ কোটি টাকার আমদানি ভ্যাট অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল, আদায় হয়েছে ১৪ হাজার ২১৪ কোটি টাকা। নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি ৩০ দশমিক ১৬ শতাংশ। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুন মাসে এ খাত থেকে আদায় হয়েছে ২০ হাজার ৩৫৪ কোটি টাকা।

এছাড়া ৩১ হাজার ৬৮৯ কোটি টাকার আয়কর অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল, আদায় হয়েছে ২১ হাজার ৫১৩ কোটি টাকা। নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ৪৭ শতাংশ। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুনে এ খাত থেকে আদায় হয় ২৩ হাজার ৫০৪ কোটি টাকা।

গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে এনবিআরের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। পরে সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এর বিপরীতে আদায় হয়েছে ৩ লাখ ৭০ হাজার ৮৭৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ৯২ হাজার ৬২৬ কোটি টাকা বা ১৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ কম আদায় হয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছর রাজস্ব আয় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে পিছিয়ে থাকলেও ২০২৩-২৪ অর্থবছরের তুলনায় বেড়েছে ২ দশমিক ২৩ শতাংশ।

এনবিআরের সর্বশেষ প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে আয়কর ও ভ্রমণ কর আদায়ের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক লাখ ৭১ হাজার ৪৯৫ কোটি টাকা। তবে আদায় হয়েছে এক লাখ ২৯ হাজার ৯০ কোটি টাকা। এক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪২ হাজার ৪০৫ কোটি টাকা কম আদায় হয়েছে। প্রবৃদ্ধি ২ দশমিক ৮৭ শতাংশ, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এক লাখ ২৫ হাজার ৪৮৫ টাকার আয়কর আদায় হয়েছিল।

আয়করের মতো একই লক্ষ্যমাত্রা ছিল স্থানীয় পর্যায়ে ভ্যাট আদায়ের ক্ষেত্রে। তবে আদায় হয়েছে এক লাখ ৪১ হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ভ্যাট আদায় কম হয়েছে ২৯ হাজার ৯০৯ কোটি টাকা। আয়কর ও ভ্যাটের মধ্যে রাজস্ব আদায়ে কিছুটা এগিয়ে আছে ভ্যাট। এ খাতে প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক শূন্য এক শতাংশ। তার আগের বছরে ভ্যাট থেকে এসেছে এক লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৩ কোটি টাকা।

এছাড়া কাস্টমস খাতে অর্থাৎ শুল্ক আদায় হয়েছে এক লাখ ১৯৮ কোটি টাকা। এ খাতে লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক লাখ ২০ হাজার ৫১০ কোটি টাকা। সে হিসাবে আদায় কম হয়েছে ২০ হাজার ৩১২ কোটি টাকা। এ খাতে প্রবৃদ্ধি শূন্য দশমিক ৩৩ শতাংশ। আগের অর্থবছরে শুল্ক থেকে এসেছে এক লাখ ২০ হাজার ৫১০ কোটি টাকা। উৎস: জাগোনিউজ২৪

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়