শিরোনাম

প্রকাশিত : ০২ মে, ২০২৪, ০৭:৪৬ বিকাল
আপডেট : ০২ মে, ২০২৪, ০৭:৪৬ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

স্মার্ট সুদহারে বিপাকে ব্যবসায়ীরা, কর্মসংস্থান বাধাগ্রস্ত

মনজুর এ আজিজ: [২] সুদহার ৬ ও ৯ ভেঙে স্মার্ট সুদহার নীতি ঘোষণা করলেও মূল্যস্ফীতির চাপ ঊর্ধ্বমুখী থাকায় বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। নতুন স্মার্ট নীতির কারণে প্রতি মাসে বাড়ছে ব্যাংক ঋণের সুদহার। অথচ সে হারে বাড়ছে না ব্যবসায়ীদের আয় ও আনুষঙ্গিক সুযোগসুবিধা। ফলে নতুন কোনো বিনিয়োগে আগ্রহী হচ্ছেন না শিল্পোদ্যোক্তারা। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে কর্মসংস্থান, যা দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি আরও গভীর সংকটের দিকে ঠেলে দিচ্ছে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদরা।  

[৩] জানা গেছে, বৈশ্বিক সংকট নিরসনের জন্য সুদহার নির্ধারণে বর্তমানে একটি নতুন পদ্ধতি অনুসরণ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর নাম ‘সিক্স মান্থস মুভিং অ্যাভারেজ রেট অব ট্রেজারি বিল’ বা স্মার্ট পদ্ধতি, যা গত বছরের অক্টোবরে চালু করা হয়েছে। এ পদ্ধতি চালুর চার মাসেই ব্যবসাবাণিজ্যের ব্যয় আগের চার মাসের তুলনায় অনেক বেড়ে গেছে। এতে ব্যবসাবাণিজ্য খাতে চলছে নতুন অনিশ্চয়তা।

[৪] বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিলে ব্যাংকিং খাতে ঋণের হার ১৩ দশমিক ৫৫ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। মার্চে এটি ছিল ১৩ দশমিক ১১, ফেব্রুয়ারিতে ১২ দশমিক ৪৩, জানুয়ারিতে ১১ দশমিক ৮৯ এবং গত বছরের ডিসেম্বরে ১১ দশমিক ৪৭ ও নভেম্বরে ১০ দশমিক ৯৩ শতাংশ। নতুন এ নীতির ফলেই সুদের হার ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে বলে মনে করেন ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্টরা। 

[৫] নাম প্রকাশ না করার শর্তে ব্যবসায়ীদের অনেকেই বলছেন, আমরা যারা ব্যবসা শুরু করার সময় ঋণ নিয়েছিলাম ৮ থেকে ৯ শতাংশ সুদে, এখন সেই ঋণের সুদ দিতে হচ্ছে ১৪ থেকে ১৫ শতাংশ হারে। তাছাড়া বর্তমানে আমানতের হার ৬ থেকে ৭ এবং ঋণের সুদহার ১২ থেকে ১৩ শতাংশ পর্যন্ত। এখানে পার্থক্য দাঁড়াচ্ছে ৬ শতাংশ, যা দেশের ব্যাংকিং খাতে এক অসমতার সৃষ্টি করছে। এতে আমরা ব্যাপকভাবে লোকসানের মধ্যে পড়ছি। 

[৬] অর্থনীতিবিদরা বলছেন, শুধু সুদহার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। এটা তো পশ্চিমা দেশগুলোর মতো নয় যে, পরিবারের সবাই কাজ করেন। এখানে পাঁচজনের একটা পরিবারে কাজ করেন একজন বা দুজন। ফলে আয় কম কিন্তু ব্যয় বেশি। এজন্য বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। শিল্পায়নের জন্য সহায়ক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ব্যাংক ঋণের সুদহার বৃদ্ধি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের সাময়িক কৌশল হতে পারে। তবে এর সঙ্গে গ্যাস-বিদ্যুতের সংকট নিরসন করতে হবে পাশাপাশি খরচও কমাতে হবে। অন্যথায় ব্যবসাবাণিজ্যের ব্যয় কমানো যাবে না। মূল্যস্ফীতিও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না।  

[৭] গৃহীত নতুন এ স্মার্ট নীতির ফলে এরই মধ্যে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ৭৮ শতাংশে নেমে এসেছে, যা এ অর্থবছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে ছিল ৬ দশমিক ০১ শতাংশ। আবার মূল্যস্ফীতির চাপও এখনো ২ অঙ্কের ঘরের কাছাকাছিই রয়েছে। মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে গত বছরের জুলাইয়ে একটি মুদ্রানীতির মাধ্যমে নতুন সুদহার বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই বছরের অক্টোবরে এটি কার্যকর  হলেও সমস্যা সমাধান হওয়া তো দূরের কথা, সংকট আরও বেড়ে গেছে। সম্পাদনা: কামরুজ্জামান

এসবি২

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়