রাকিবুল রিফাত, সাভার: সাভারের আশুলিয়া থেকে নিজ প্রতিষ্ঠান থেকে ব্যবসায়ীকে তুলে নিয়ে মুক্তিপণ ও অপহরণের মামলায় এবার এক পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর আগে এই মামলায় নারীসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিলো।
সোমবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে গ্রেপ্তার পুলিশ সদস্য ইমরান হোসেনকে আশুলিয়া থানা থেকে ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে ঢাকা আদালতে পাঠানো হয়। এর আগে তাকে মির্জাপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ইমরান হোসেন (৩৩) ধামরাইয়ের বেলীশ্বর গ্রামের মো. আমজাদ হোসেনের ছেলে। তিনি টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানার পুলিশ কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত।
এদিকে রোববার (২৭ নভেম্বর) গ্রেপ্তার ৬ জনের মধ্যে নারী আসামী খাদিজা (৩৮) বাদে ৫ আসামির দু’দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। তাদেরকেও ২৬ নভেম্বর অভিযান চালিয়ে তাদের টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তাদের জিম্মা থেকে উদ্ধার করা হয় ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীকে।
রিমান্ডে থাকা আসামিরা হলো- যশোর জেলার মনিরামপুর থানার কেরতপুর গ্রামের মৃত আব্দুল সাত্তার গাজীর ছেলে কেরামুন হোসেন সম্রার্ট (৩৪), টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর থানার ধাউরা নয়াপাড়ার মৃত হাজী খবীর উদ্দীনের ছেলে আঃ আউয়াল (৫০) চালক, একই থানার আন্দুরার মৃত আঃ রশিদের ছেলে মোঃ বাবুল মিয়া (৫০), পেকুরা গ্রামের নজমত আলীর ছেলে মোঃ রফিকুল ইসলাম (৫১) ও একই জেলার বাসাইল থানার দাপনাজোর গ্রামের আব্দুস সামাদের ছেলে মোঃ রাসেল মিয়া (৩৮)।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী মেহেদি হাসান মানিকগঞ্জের ঘিওর থানার পশ্চিম কলিয়া গ্রামের পান্নু মিয়ার ছেলে। বর্তমানে আশুলিয়ার বাইপাইলে স্ত্রী সন্তান নিয়ে বসবাস করেন। তিনি ফার্ণিচার ব্যবসা করেন।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী মেহেদি হাসান বলেন, গত ২২ নভেম্বর সন্ধ্যা আমি আমার ফার্ণিচার প্রতিষ্ঠানে বসে ছিলাম। এরমধ্যে ৫ থেকে ৬ জন লোক ক্রেতা সেজে মালামাল দেখছিলো। এরপর হঠাৎ করে তারা আইনের লোক বলে আমাকে টেনে হিচড়ে হাইয়েচ মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। আমাকে তুলে নিয়ে চোখ বেঁধে মারধর করে ব্যাংক চেকে স্বাক্ষর করায়। আমার স্ত্রীকে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। এছাড়া আমার কাছে টাকা পাবে এই মর্মে স্টাম্পেও স্বাক্ষর নেয়। গ্রেপ্তার নারী খাদিজা আমার পূর্ব পরিচিত ও দুর সম্পর্কের আত্নীয়। তারা তুলে নিয়ে গেলে পরে ওই নারীকে দেখতে পাই।
এঘটনায় ২৫ নভেম্বর ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীর মা রুবি বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাত ৬ থেকে ৭জনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় তাদের ৬ জনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে রবিবার দুপুর আদালতে পাঠানো হলে নারী বাদে ৫ জনের ২ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও আশুলিয়া থানার এস আই আল মামুন কবির বলেন, এই মামলায় জড়িত থাকার তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে ও উধ্বর্তন অফিসারের সথে পরামর্শ করে কনস্টেবল ইমরান হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া এই মামলায় আরো ৬ জন গ্রেপ্তার আছে। তারমধ্যে ৫ জন রিমান্ডে আছেন।
টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার বলেন, কনস্টেবল ইমরানের ফৌজদারী অপরাধের বিচার তো আদালত করবে। এছাড়া আমরা তদন্ত স্বাপেক্ষে ডিপার্টেমেন্টাল ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
প্রতিনিধি/এইচএ