মো. অমিত খাঁন, শ্রীনগর (মুন্সীগঞ্জ): শ্রীনগরে আগাম ধুন্দল চাষে লাভবান হচ্ছেন সবজি চাষীরা। স্থানীয় খোলা বাজারে ধুন্দলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৫-৮০ টাকা। বাগান থেকে পাইকারদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকা দরে। কৃষকের প্রতি কেজি ধুন্দল উৎপাদণে সব খরচ বাদে ব্যয় হচ্ছে সর্বোচ্চ ১০ টাকা।
জানা যায়, উপজেলার কুকুটিয়ার বিবন্দী, জুরাসার, পাঁচলদিয়া, আটপাড়া, কল্লিগাঁও, বীরতারা, কারিগর পাড়া, সিংপাড়া, ব্রাহ্মণখোলা, পানিয়া, শ্রীনগর হরপাড়া, ষোলঘরসহ বিভিন্ন স্থানে আগাম ধুন্দলের পাশাপাশি ঝিঙ্গা, শশাসহ নানা ধরণের মৌসুমী সবজির চাষাবাদ করা হচ্ছে।
তবে দেশে চলমান তাপদাহে স্থানীয় সবজি চাষীরা বিপাকে পড়েছেন। এতে সবজি বাগানগুলোতে অধিক পানিসেচ ব্যবস্থা ও বাড়তি যত্ন নিতে হচ্ছে তাদের। লক্ষ্য করা গেছে, সবজির বাগানে বাঁশের খুঁটি ও সুতার নেট দিয়ে ধুন্দলের মাচা তৈরী করা হয়েছে। এসব মাচায় অসংখ্য ধুন্দল ঝুলছে। সবুজ মাচা জুড়ে ধুন্দলের হলুদ বর্ণের ফুলে ভরে গেছে।
চিকিৎসাবিদরা বলছেন, ধুন্দল মানব দেহে অতিরিক্ত কোলেসট্রল এবং মেদ কমাতে সহায়তা করে। এতে আছে আছে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন এবং ভিটামিন-বি, এই সবজি ডায়াবেটিক নিরাময়ে সহায়তা করে। নানা পুষ্টিগুণে ভরপুর সবজি দেশের সর্বত্র পাওয়া যায়। সবাইকে বেশি করে ধুন্দল খাওয়ার পরামর্শ দেন।
জানা যায়, উপজেলায় প্রায় সাড়ে ৬শ হেক্টর জমিতে ধুন্দলসহ অন্যান্য মৌসুমী সবজির চাষাবাদ করা হয়েছে। স্থানীয়দের প্রতীত জমিতে পুষ্টি বাগান করার জন্য উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। উচ্চ ফলনশীল শাক-সবজি চাষের জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
শ্রীনগর বাজারের সবজি বিক্রেতা আবুল হোসেন বলেন, এখন ৭৫-৮০ টাকা দরে ধুন্দলের কেজি বিক্রি করছি। চলমান খরায় ধুন্দলের আমদানি কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। আসন্ন ঈদ-উল-ফিতরের পর ধুন্দলের মূল্য কমার সম্ভাবনা আছে।
মো. সাইফুল ইসলাম নামে এক উদ্যোক্তা বলেন, জুরাসা গ্রামে ৭০ শতাংশ জমিতে আগাম ধুন্দলের সাথী ফসল হিসেবে শশা চাষ করেছেন। ধুন্দলের মাচার নিচে সারিবদ্ধভাবে প্রায় ৭ হাজার শশার চারা রোপন করি। এই পন্থায় ধুন্দলের পাশাপাশি শশা চাষেও সফল হয়েছি। পাইকারের কাছে প্রতি কেজি ধুন্দল ও শশা ৬০ টাকা দরে বিক্রি করছেন জানান তিনি।
আরাফাত আমান শিমুল বলেন, প্রায় ১০০ শতাংশ জমিতে আগাম ধুন্দলের বাগান করেছেন। দুদিন পরপর বাগান থেকে ৭০-৮০ কেজি ধুন্দল নামছে। এসব ধুন্দল শ্রীনগর বাজার, বাড়ৈগাঁও বাজার, লৌহজংয়ের নওপাড়া বাজার ও মালিরঅঙ্ক বাজারের সবজি ব্যবসায়ীরা কিনে নিচ্ছেন। চলমান খরা কাটিয়ে উঠা গেলে বাগানে ধুন্দলের উৎপাদণ অনেকাংশে বাড়বে।
কৃষক মো. কাজল বলেন, হরপাড়ায় বেশকিছু জমিতে মৌসুমী সবজির আবাদ করেছেন।
উৎপাদিত ধুন্দল, ঝিঙ্গা, কচু, লাউ, লাল শাক, পূঁই শাক, ডাটা বিক্রি করছেন। বছর জুড়ে সবজি চাষ থেকে প্রায় ৪ লাখ টাকা আয় হচ্ছে জানান তিনি। সম্পাদনা: ইস্রাফিল ফকির
প্রতিনিধি/আইএফ/জেএ