ফরহাদ আমিন, টেকনাফ (কক্সবাজার): কক্সবাজারের টেকনাফে পাহাড়ে কাঠ সংগ্রহকালে মুক্তিপণের দাবিতে অপহৃত ৭ জনকে উদ্ধার করেছে বলে দাবি করেছে পুলিশ।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে বাহারছড়া ইউনিয়নের জাহাজপুরার গহীন পাহাড় থেকে তাদের উদ্ধারের তথ্য জানান টেকনাফ মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মো. নাছির উদ্দিন।
বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২ টায় বাহারছড়া ইউনিয়নের জাহাজপুরা পাহাড়ি এলাকা থেকে ৯ জনকে অপহরণ করা হয়েছিল। এরপর মোহাম্মদ আমির (১১) ও রিফাত উল্লাহ (১২) নামের ২ জনকে ছেড়ে দিলেও জিন্মি রাখা হয়েছিল ৭ জন। উদ্ধার হওয়া ৭ জন হলেন- জাহাজপুরা গ্রামের বাসিন্দা গিয়াস উদ্দিন (১৭), ফজল করিম (৩৮), জাবেরুল ইসলাম (৩৫), আরিফ উল্লাহ (২২), মোহাম্মদ রশিদ (২৮), মোহাম্মদ জাফর (৩৮), মোহাম্মদ জয়নুল (৪৫)।
অপহরণের পর পর বাহারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের (ইউপি) সদস্য মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম ও স্বজনরা বলেন, বৃহস্পতিবার সকালের দিকে স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দারা দলবেঁধে পাহাড়ের ভেতরে কাঠ সংগ্রহ করতে গেলে মুখোশধারী ও অস্ত্রধারী ১৫-২০ জন তাদেরকে ঘিরে ফেলে অস্ত্রের মুখে জিন্মি করেন।
টেকনাফ মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মো. নাছির উদ্দিন বলেন, ঘটনার পর পরই পুলিশ প্রযুক্তি ব্যবহারের পাশাপাশি পুলিশের কয়েকটি দল অভিযান শুরু করেন। স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশের সঙ্গে পাহাড়ে বিভিন্ন স্থানে অভিযানে সহযোগিতা করেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় গহীন পাহাড়ে তাদের রেখে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। এরপর তাদের উদ্ধার করে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে।
ওসি আরো বলেন, উদ্ধার হওয়াদের জিজ্ঞাসাবাদের পর বিষয়টি পরিষ্কার হওয়া যাবে। এরূপ অপহরণের ঘটনা নিয়ে নানা সন্দেহ রয়েছে। এটা বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার সারা দিন অপহৃতদের স্বজনদের সাথে আলাপ করার চেষ্টা করলেও তাদের কাউকে পাওয়া যায়নি।
বাহারছড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. মশিউর রহমান বলেন, কাঠ সংগ্রহের কথা বলে হলেও ৭ জনের মধ্যে একজন কলেজ ছাত্র। স্বাভাবিকভাবে ওই ছাত্র কাঠ সংগ্রহে যাওয়ার কথা না। তাছাড়া পাহাড়ে এর আগে একই ধরণের ঘটনা ঘটলেও এরা পাহাড়ে গিয়েছিলেন বিষয়টি পরিষ্কার না। ফলে পুরো ঘটনা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
উল্লেখ্য, এ ৯ জন ছাড়া এর আগে গত ৬ মাসে টেকনাফের পাহাড় কেন্দ্রিক ৪১ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ১৭ জন রোহিঙ্গা হলেও ২৪ জন স্থানীয় বাসিন্দা। যেখানে ২২ জন মুক্তিপনের টাকা দিয়ে ফেরত আসার তথ্য জানিয়েছিল। সর্বশেষ গত ৩ মার্চ ২ শিশু অপহরণের ৮ ঘন্টা পর ৭০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ফেরত আসে। এ ছাড়া ২১ জানুয়ারি হোয়াইক্যং-শামলাপুর সড়ক পাহাড়ি ঢালার ভেতর থেকে মোহাম্মদ হোসেন নামে এক ইজিবাইক চালকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সম্পাদনা: অনিক কর্মকার
প্রতিনিধি/একে