হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর: উপজেলার কোনো দম্পতির পরিবারে নবজাতকের আগমনের খবর পেলেই উপহার ও মিষ্টি নিয়ে হাজির হন ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মঈনুল হক।
নবজাতককে কোলে নিয়ে উপজেলার নাগরিক হিসেবে বরণ করে নেন তিনি। আর নবজাতকের মা-বাবাকে মিষ্টি খাইয়ে উপহারের প্যাকেট হাতে দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। একই সঙ্গে পৌঁছে দেন নবজাতকের জন্মসনদ।
উপজেলায় যোগদানের পর তিনি শুক্রবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) থেকে ব্যতিক্রমী এ কর্মসূচি শুরু করেছেন মঈনুল হক। এরই অংশ হিসেবে প্রথমদিনে এক দম্পতির ঘরে কন্যা সন্তান জন্মের তথ্য পেয়ে নবজাতকের জন্য উপহার সামগ্রী, মিষ্টি ও তাৎক্ষণিকভাবে জন্ম নিবন্ধন করতে সংশ্লিষ্টদের সাথে নিয়ে ওই দম্পতির বাড়িতে হাজির হন।
ইউএনওর এই ব্যতিক্রমী কর্মসূচির উদ্দেশ্য হলো সরকারের বেঁধে দেওয়া নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সঠিক বয়সে সব নবজাতকের জন্ম নিবন্ধন সম্পন্ন করতে সকলকে উদ্বুদ্ধ করা।
জানা গেছে, কোনো শিশুর জন্মের ৪৫ দিনের মধ্যে বিনা ফিতে স্থানীয় পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে জন্ম নিবন্ধনে সরকারি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু এ উপজেলার বাসিন্দাদের মধ্যে শিশুর জন্ম নিবন্ধনে আগ্রহ তুলনামূলক কম। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির প্রয়োজনে মা-বাবারা সন্তানের জন্ম নিবন্ধন করিয়ে সনদ নেওয়ার জন্য ছুটাছুটি করেন বিভিন্ন ইউপি কার্যালয়ে। ততদিনে শিশুর বয়স পাঁচ-ছয় বছর হয়ে যায়। তখন নানা কারণে উক্ত এলাকার চেয়ারম্যানদের অনুমান নির্ভর তারিখে হলেও নিবন্ধন করে সনদ দিতে হয়। আর যেসব শিশুরা স্কুল-মাদ্রাসায় ভর্তি হতো না, তারা থেকে যেত জন্ম নিবন্ধনের বাইরে। এমন পরিস্থিতিতে ইউএনও মো. মঈনুল হক উপজেলা ব্যাপী এ ব্যতিক্রমী কর্মসূচি শুরু করেন। তার এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মঈনুল হক বলেন, নগরকান্দা উপজেলার মানুষ জন্মনিবন্ধনে তুলনামূলক অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে। তাইতো, তাদের জন্মনিবন্ধের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করতে আমাদের এই ব্যতিক্রম উদ্যোগ। প্রথমদিনেই বেশ সাড়া পেয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, প্রথমদিনে আমরা পাঁচ শিশুর জন্মনিবন্ধন সম্পন্ন করেছি। কোনো প্রকার ঝামেলা ছাড়াই জন্মনিবন্ধন করতে পেরে মানুষজন বেশ খুশি। এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি। সম্পাদনা: অনিক কর্মকার
প্রতিনিধি/একে/এসএ
আপনার মতামত লিখুন :