শিরোনাম
◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা শুরু, মানতে হবে কিছু নির্দেশনা ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ বিশ্ববাজারে সোনার সর্বোচ্চ দামের নতুন রেকর্ড ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ চেক প্রতারণার মামলায় ইভ্যালির রাসেল-শামিমার বিচার শুরু ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ প্রফেসর ইউনূসকে প্রদত্ত "ট্রি অব পিস" প্রধানমন্ত্রীকে প্রদত্ত একই ভাস্করের একই ভাস্কর্য: ইউনূস সেন্টার ◈ নির্বাচনী বন্ড কেবল ভারত নয়, বিশ্বের সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি: অর্থমন্ত্রীর স্বামী ◈ কুড়িগ্রামে অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থান পরিদর্শন করে দেশে ফিরলেন ভুটানের রাজা

প্রকাশিত : ০১ ডিসেম্বর, ২০২২, ০৩:২৩ রাত
আপডেট : ০১ ডিসেম্বর, ২০২২, ০৩:২৩ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

রাজশাহীতে কমে যাচ্ছে চারণ ভূমি, গো-খাদ্য সংকটে গৃহস্থ ও খামারিরা

ইফতেখার আলম: রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে কমে যাচ্ছে চারণ ভূমি, এতে গো-খাদ্য সংকটে পড়েছেন গৃহস্থ ও খামারিরা। রাজশাহী গোদাগাড়ী উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র। 

জমি পতিত না থাকায় গো-চারণ ভূমি তীব্র অভাব দেখা দিয়েছে। ফলে সংকট দেখা দিয়েছে গো-খাদ্যের। বিভিন্ন অঞ্চল থেকে উচ্চ মূল্যে খড়,(আউড়) কিনে গো-খাদ্যের চাহিদা পূরণ করতে হচ্ছে খামারি ও গৃহস্থদের। এতে করে কৃষক ও গো-খামারিরা হিমশিম খাচ্ছেন।

গবাদিপশু পালনে নানা প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে তাদের। অনেকে গো-খাদ্য সংকটের কারণে গরু ছাগল বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন।

উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে দেখা যায়, মানুষেরা জীবন-জীবিকার তাগিদে গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া পালন করেন। এসব গবাদিপশু খাদ্যের প্রধান উৎস চারণ ভুমির প্রাকৃতিক খাবার। জমিতে বাণিজ্যিকভাবে বিভিন্ন ফসল আবাদ বেড়ে যাওয়ায় কমে আসছে গো-চারণ ভূমি, কমে যাচ্ছে প্রাকৃতিক খাদ্যের উৎস। 

উপজেলার বোগদামারী গ্রামের লালু মিয়ার নিজের সম্পদ বলতে তার রয়েছে মাত্র ৫টি গরু। প্রতিবছর গরু বিক্রি করে সংসারের পুরো ব্যয় বহন করে থাকেন তিনি। এভাবে প্রায় দুই যুগ ধরে গবাদিপশু লালন-পালনের উপর নির্ভর করেই চলছে তার সংসারের প্রয়োজনীয় চাহিদাসহ সন্তানদের পড়ালেখার খরচ। তবে, চারণ ভুমির অভাবে প্রাকৃতিকভাবে গজিয়ে ওঠা বিভিন্ন ধরণের গো-খাদ্য হ্রাঁস পাওয়ায় চরম দুঃশ্চিন্তায় পড়েছেন তিনি।

পতিত জমির অভাবে কেনা গো-খাদ্যের উপর নির্ভর করে গো-খাদ্যের চাহিদা মেটানো কঠিন হয়ে পড়েছে লাল মোহাম্মদের মতো এনামুল, করিমসহ অনেকের। এতে করে উপজেলার গবাদিপশু লালন-পালনের উপর নির্ভরশীল পরিবার গুলো চরম বেকায়দায় পড়েছেন।

এমন পরিস্থিতিতে বাজার থেকে গবাদিপশুর খাদ্য কিনে গরু মোটাতাজাকরণ ও দুধ উৎপাদন করছেন তারা। তবে সবচেয়ে বেকায়দায় পড়েছেন গো-খামারিরা।

খামারি রেজাউল ইসলাম জানান, কয়েকদিন পর পরই গো-খাদ্যের মূল্য বেড়ে যাচ্ছে। এ কারণে গবাদিপশু লালন-পালনে গুণতে হচ্ছে বাড়তি টাকা। দানাদার খাবারের মূল্য উর্ধমূখী এবং দুধের বাজার মূল্য কম হওয়ায় খামার টিকিয়ে রাখা কষ্টকর হয়ে পড়েছে।

আরিফ নামের  আরও এক গৃহস্থ জানায়, বরেন্দ্র অঞ্চলে পতিত জমি না থাকায় পদ্মা নদীর বুকে জেগে উঠা চরে প্রাকৃতিকভাবে গজিয়ে ওঠা বিভিন্ন ধরণের গো-খাদ্যের উপর নির্ভর করে গরু-মহিষ, ছাগল ও ভেড়া লালন পালন করতাম। গত কয়েক বছর থেকে পদ্মা নদীর বুকে জেগে উঠা চরে আবাদ হওয়ায় প্রাকৃতিকভাবে গজিয়ে ওঠা বিভিন্ন ধরণের গো-খাদ্যের অভাব দেখা দিয়েছে। নিজেরাই গরু লালন-পালন করি। আমাদের সারা বছর গরুর দুধ, গোবর বিক্রি করে কোনরকম সংসার চলে। কিন্তু খাদ্য সংকটের কারণে গরু, ছাগল নিয়ে বিপাকে আছি। খড় দাম আগের চাইতে অনেক বেড়ে যাওয়ায় গরু ছাগল প্রতিপালন আমাদের জন্য কষ্টকর হয়ে পড়েছে।

একটি স্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে চরাঞ্চলে প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো গাছপালা কমে যাচ্ছে। আর এর প্রভাব পড়ছে প্রানীকুলে। বিশেষ করে গবাদিপশু লালন-পালনের উপর নির্ভরশীল পরিবারগুলোর জীবন-জীবিকায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ সুব্রত কুমার সরকার জানান, মানুষজনের অন্যতম সম্পদ গবাদিপশু। প্রকৃতির উপর নির্ভর করে গাছপালা ও ঘাস খেয়ে এখানকার গরু, মহিষ, ভেড়া, ছাগল বেড়ে ওঠে।

চারণ ভুমি কমতে থাকায় বিকল্প হিসেবে উন্নত পদ্ধতিতে ঘাস চাষের প্রশিক্ষণ ও সহায়তা দেয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, দানাদার খাবারের মূল্য উর্ধমূখী হওয়ায় গো-খাদ্যর সংকট মোকাবেলায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে বিনা মুল্যে উন্নতজাতের ঘাসের কাটিং দেওয়া হচ্ছে। যে সকল গৃহস্থ ও খামারিদের জমি আছে তারা ঘাষ চাষ করে দানাদার খাবার কমিয়ে গবাদিপশুকে ঘাষ খাওয়ালে আর্থিকভাবেও লাভবান হবেন।

প্রতিনিধি/এসএ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়