সনতচক্রবর্ত্তী: ফরিদপুরে স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী সভায় হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন।
বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
হামলায় পন্ড হয়ে যায় স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী সভা। যুবলীগের নেতৃত্বে এ হামলা চালানো হয় বলে সাংবাদিক সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, শহরের অম্বিকা মেমোরিয়াল হলে বুধবার জেলা ও শহর স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী সভার আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে সেখানে উপস্থিত হন স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি এস এম জিলানী।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সভা শুরুর আগেই সেখানে প্রথমে লাঠিশোঠা নিয়ে একদল যুবক হামলার চেষ্টা করে। এসময় তাদের প্রতিহত করতে এগিয়ে গেলে হামলাকারীরা চলে যায়। এরপর অতিথিদের মঞ্চে বসিয়ে সভা শুরুর মুহূর্তে ধারালো অস্ত্রশস্ত্র ও লাঠিশোঠা নিয়ে আবারও সেখানে হামলা করা হয়।
এসময় এসএম জিলানী সহ স্বেচ্ছাসেবক দলের বিভাগীয় নেতা হাফিজুর রহমান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক জুলফিকার হোসেন জুয়েল, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন, মহানগর যুবদলের সভাপতি বেনজির আহমেদ তাবরিজ সহ স্বেচ্ছাসেবক দল, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
সভাস্থলে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ জানান, অম্বিকা হলের প্রধান দরজা বন্ধ করে হামলাকারীদের প্রতিহত করার চেষ্টা করেন তারা। তবে জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক জিয়াউল হাসান মিঠু সেখানে উপস্থিত হয়ে বাধা সরিয়ে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতৃবৃন্দকে সভাস্থল থেকে চলে যেতে বলেন। এরপরই কেউ অতর্কিত হামলা করে। এতে ফরিদপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ন আহ্বায়ক শুকদেব রায়, জেলা ছাত্রদলের সহ সভাপতি ভিপি রেজা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহারিয়ার হোসেন জুয়েল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন হোসন, সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক পারভেজ, নাট্য সম্পাদক রাহিমুল ইসলাম রাহিম সহ অসংখ্য নেতাকর্মী আহত হন। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। হামলাকারীরা সভাস্থলের চেয়ার এলোপাথাড়ি করে ভাঙচুর করে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিকে, এ ঘটনার পর জেলা বিএনপির যুগ্ন আহ্বায়ক ফজলুল হক টুলুর ঝিলটুলীস্থ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করে এ হামলার জন্য যুবলীগকে দায়ী করে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। তারা বলেন, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক জিয়াউল হাসান মিঠুর নেতৃত্বে শতাধিক লোকজন লাঠিসোটা নিয়ে এ হামলা করে।
এ বিষয়ে জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক জিয়াউল হাসান মিঠু বলেন, দলীয় কোনো কর্মসূচি থাকলে যুবলীগের নেতাকর্মীরা অম্বিকা হলের সামনে জড়ো হয়। পরে মিছিল করে অনুষ্ঠানস্থলে যায়। প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যুবলীগকর্মীরা সেখানে সমবেত হয়। তবে আমরা জানতাম না সেখানে স্বেচ্ছাসেবকদলের সভা চলছে। দুইপক্ষের মধ্যে সামান্য কথা-কাটাকাটি হয়েছে। তবে কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি।
তিনি আরও বলেন, এক কথায় যুবলীগ কোনো হামলার সঙ্গে জড়িত নয়। তারা হয়তো দৌড়াদৌড়ি করতে গিয়ে পড়ে গিয়ে আহত হয়েছেন।
এ ব্যপারে ফরিদপুর কােতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ জলিল বলেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী সভা চলছিল অম্বিকা মেমােরিয়াল হলের ভিতরে। শুনেছি ওই সভা চলাকালীন সময়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে। ফলে সমাবেশটি পন্ড হয়ে যায়। তিনি বলেন, হামলার আগে ও হামলার সময় ওই হলরুমের আশ পাশে কােন পুলিশ সদস্য মােতায়েন ছিল না। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক বলেও জানান তিনি।