দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলায় মহাসড়কের পাশের দোকানে কাঁঠালপাতা বিক্রি করছেন দুর্গাপুর উচ্চবিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক আবদুল হামিদ (৫৮)। ব্যস্ত মহাসড়কের পাশে কাঁঠাল পাতার স্তূপ। পাতা কিনতে দোকানের সামনে ক্রেতাদের ভিড়। ‘‘হামাক এক বোঝা পাতা দেও, মাস্টার।’’ ক্রেতার চাহিদা শুনতেই স্তূপ থেকে টেনে পাতা বের করে দিলেন আবদুল হামিদ। পাতা বুঝে পেয়ে বিক্রেতাকে সালাম দিয়ে চলে গেলেন ওই ক্রেতা।
প্রায় দুই যুগ ধরে বিরামপুর উপজেলার দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে কলাবাগান এলাকায় কাঁঠালপাতা বিক্রি করছেন এই শিক্ষক। আবদুল হামিদ জানান, দিন শেষে এ থেকে যা আয় হয়, তা দিয়ে চলে তার সংসার। দীর্ঘদিন ধরে কোনো বেতন পান না তিনি।
আবদুল হামিদের বাড়ি দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার শ্রীপুর গ্রামে। তিনি ২০০২ সালের ১ জুন উপজেলার দুর্গাপুর উচ্চবিদ্যালয়ে কৃষি বিষয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। যোগদানের পর সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ৯ বার এমপিওর (মান্থলি পে-অর্ডার) জন্য আবেদন করেছেন।
তবে প্রতিবারই তার আবেদন বাতিল হয়েছে। দীর্ঘ দুই যুগের বেশি সময় ধরে তিনি ওই বিদ্যালয়ে বেতন ছাড়াই পাঠদান করে যাচ্ছেন। সংসার চালাতে বিকল্প পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন কাঁঠালপাতার ব্যবসা। এ থেকে তার প্রতিদিন ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা আয় হয়।
দুর্গাপুর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ওই বিদ্যালয়ে চাকরি করছেন আবদুল হামিদ। সরকারি কোষাগার থেকে বেতন না পেলেও বিদ্যালয়, শ্রেণিকক্ষ আর কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মায়ায় বাঁধা পড়েছেন। এ জন্য এখনো বিদ্যালয়ে নিয়মিত পাঠদান করেন বলে জানান তিনি।
সূত্র: দৈনিক আমাদের সময়