অর্থনৈতিক অস্থিরতা, মুদ্রাস্ফীতি এবং ভূ-রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার যুগেও সোনা তার বিশ্বস্ততা ধরে রেখেছে। এটি কেবল একটি মূল্যবান ধাতু নয়, বরং এটি একটি দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও সামরিক শক্তিরও প্রতীক। প্রতিটি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের রিজার্ভের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ সোনা হিসেবে সংরক্ষণ করে রাখে। কিন্তু এই মূল্যবান সম্পদ সবচেয়ে বেশি সঞ্চিত আছে কোন দেশের ভান্ডারে?
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছেই বিশ্বের সবচেয়ে বড় সরকারি সোনাভাণ্ডার রয়েছে। আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর দেওয়া তথ্য অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে থাকা সোনার মোট পরিমাণ দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে থাকা দেশগুলোর মিলিত পরিমাণের চেয়েও বেশি। খবর মিন্টের।
আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল-এর তথ্য অনুযায়ী, সরকারি সোনা রিজার্ভের দিক থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের মধ্যে শীর্ষস্থানে রয়েছে। তাদের মোট সোনা মজুদের পরিমাণ প্রায় ৮ হাজার ১৩৩ দশমিক ৪৬ টন। এরপরেই রয়েছে জার্মানি, যাদের সোনা রিজার্ভের পরিমাণ প্রায় ৩ হাজার ৩৫৫ দশমিক ১৪ টন। তৃতীয় এবং চতুর্থ স্থানে রয়েছে যথাক্রমে ইতালি ২ হাজার ৪৩৬ দশমিক ৯৯ টন এবং ফ্রান্স ২ হাজার ৪৩৬ দশমিক ৩৮ টন। এই তালিকার পঞ্চম স্থানে আছে প্রধান উদীয়মান অর্থনীতির দেশ রাশিয়া যাদের মজুতে আছে ২ হাজার ৩৩২ দশমিক ৭০ টন।
এসব সোনার বেশিরভাগই ব্রেটন উডস যুগের (১৯৪০-১৯৭০)। ওই সময় যুদ্ধপরবর্তী সময়ে মুদ্রা ব্যবস্থার মেরুদণ্ড ছিল সোনা।
এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে আছে চীন। রিজার্ভ হিসেবে দেশটি এখন সোনাকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। ২০১৯ সাল থেকে ২০২৪ পর্যন্ত তারা তাদের রিজার্ভে যুক্ত করেছে ৩৩১ টন সোনা। এতে বেইজিংয়ের সোনার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ২৭৯ দশমিক ৬ টন। যা তাদেরকে তালিকার ষষ্ঠ স্থানে নিয়ে এসেছে।
এদিকে বিশ্বের পঞ্চম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ ভারতের কাছে ৮৭৬ দশমিক ২ টন, জাপানের কাছে ৮৪৬ টন, তুরস্কের কাছে ৫৯৫ দশমিক ৪ টন সোনা আছে। অন্যদিকে মধ্যপ্রাচ্যের মধ্যে সৌদি আরবের কাছে ৩২৩ দশমিক ১ টন সোনা গচ্ছিত আছে।
অন্যদিকে ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে ১৪ দশমিক ৮ টন (১৪ হাজার ৮০০ কিলোগ্রাম) সোনার রিজার্ভ রয়েছে।