শিরোনাম
◈ বিএনপির প্রার্থী তালিকা নিয়ে বিরোধ সামলাতে 'নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠানের যাচাই' ◈ ধানমন্ডির ল্যাবএইড হাসপাতালের সামনে বাসে আগুন (ভিডিও) ◈ কাকে ইঙ্গিত করে পোস্ট দিলেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ◈ সরকারি মেডিকেলে ভর্তিতে আসন কমল ◈ রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ◈ তারেক রহমানের নেতৃত্বেই জুলাই শহীদদের স্বপ্নের দেশ গড়া সম্ভব : মীর স্নিগ্ধ ◈ স্কুলে ভর্তি এবারও লটারিতে, আবেদনের তারিখ ঘোষণা ◈ মোবাইল ব্যবহার নিয়ে পুলিশ সদস্যদের জরুরি নির্দেশনা ◈ ৪ স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ: রাজধানীর সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা জোরদার ◈ বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে ভারতের নতুন সামরিক ঘাঁটি: শিলিগুড়ি করিডোর ঘিরে ‘নীরব শক্তি প্রদর্শন’ বলছে টিআরটি ওয়ার্ল্ড

প্রকাশিত : ১০ নভেম্বর, ২০২৫, ০৬:৩৮ বিকাল
আপডেট : ১০ নভেম্বর, ২০২৫, ০৮:১৫ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

১৭০০ ফুট উচ্চতায় সাজেক ভ্যালির মসজিদে মুগ্ধ পর্যটকরা

দেশি-বিদেশি ভ্রমণপিপাসু পর্যটকদের তীর্থভূমি হিসেবে পরিচিত ‘সাজেক ভ্যালি’। এটি রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের অবস্থিত। সাজেকের নাম শোনেনি-এমন ভ্রমণপিপাসু পর্যটক পাওয়া দুষ্কর। সবুজ পাহাড়চূড়ায় মেঘের লুকোচুরি পর্যটকদের মনে একরাশ প্রশান্তি আনে। তাই প্রতি বছর হাজারো পর্যটকের সমাগম ঘটে মেঘের রাজ্য খ্যাত সাজেক ভ্যালিতে।

সাজেকে আগত অসংখ্য ধর্মপ্রাণ মুসলিম বেড়াতে এসে নামাজ আদায় করতে না পেরে চরম বিড়ম্বনায় পড়ে। তাই পর্যটকদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল সাজেকে একটি মসজিদ নির্মাণ করা। ধর্মপ্রাণ মুসলিম পর্যটকদের কথা মাথা রেখে সাজেকে মসজিদ নির্মাণে যৌথভাবে উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ।

বর্তমানে মসজিদটির সৌন্দর্য দেখে প্রতিনিয়ত বিমোহিত হচ্ছে সাজেকে আগত হাজারো বিভিন্ন ধর্মের পর্যটক। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা নামাজের সময় নামাজ আদায় করলেও অন্য ধর্মের পর্যটকগণ এখানে ভিড় করে মসজিদটির সৌন্দর্য অবলোকন করার জন্য। নিজেদের মুঠোফোনে ছবি, সেলফি তুলে স্মৃতি ধারণ করে রাখছেন। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময় মুয়াজ্জিনের আজানের ধ্বনি পুরো পাহাড়চূড়ায় প্রশান্তির ছোঁয়ায় আচ্ছন্ন করে রাখে। মসজিদটি এখানে সম্প্রীতির মেলবন্ধন হিসেবে স্থান করে নিয়েছে।

সাজেকে আগত পর্যটক আব্দুল কাদের বলেন, ‘আমরা রংপুর থেকে বেড়াতে এসেছি। পাহাড়চূড়ায় এত সুন্দর মসজিদ দেখে মনে প্রশান্তির ছোঁয়া লেগেছে। মসজিদের স্থাপত্যশৈলী দেখে আমি মুগ্ধ। প্রথমে সাজেকে পৌঁছে এ মসজিদে এসে জোহরের নামাজ আদায় করেছি। কয়েক দিন সাজেকে থাকব, নামাজ পড়তে সমস্যা হবে না।’

ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক আনিস মাহমুদ বলেন, আগে সাজেকে এলে হোটেলে নামাজ আদায় করতে হতো। বেশ কয়েক বছর আগে এখানে জুমা মসজিদ নির্মিত হওয়ার পর এখন জুমার নামাজ আদায় করতে পারছি। একজন মুসলিম হিসেবে আমার খুব ভালো লাগছে। মসজিদের সৌন্দর্যে আমি মুগ্ধ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি সাজেকের রুইলুইপাড়ায় হ্যালিপ্যাডের পাশে মসজিদটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন, সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক চট্টগ্রাম ডিভিশনের তৎকালীন জিওসি মেজর জেনারেল এস এম মতিউর রহমান। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের যৌথ উদ্যোগে এই মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছিল। মসজিদটি নামকরণ করা হয়েছিল—‘দারুস সালাম জামে মসজিদ’।

সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১ হাজার ৭০০ ফুট উঁচুতে পাহাড়চূড়ার এক একর জায়গার ওপর এ মসজিদটির অবস্থান। মসজিদটির নির্মাণব্যয় হয়েছিল ৩ কোটি ৮৫ লাখ ৬৫ হাজার ৭৮৮ টাকা। ৫ হাজার ২৬৫ বর্গফুট আয়তনের মসজিদটিতে রয়েছে চারটি গম্বুজ এবং একটি সুউচ্চ মিনার। মসজিদটির পূর্ব-পশ্চিমের দৈর্ঘ্য ৬৫ ফুট এবং উত্তর-দক্ষিণের প্রস্থ ৮১ ফুট। মসজিদটি চার তলা ফাউন্ডেশন দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছিল। নান্দনিক ও অপরূপ স্থাপত্যশৈলীর এই মসজিদটি তৈরি করতে প্রায় দুই বছর সময় লেগেছিল। সেনাবাহিনীর বাঘাইহাট জোনের অধীনে বর্তমানে মসজিদটি সার্বিক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

দারুস সালাম জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্য মোহাম্মদ জহির বলেন, এই মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে আজান দেওয়া হয় এবং পাঁচ ওয়াক্ত সালাত জামাতে আদায় করা হয়। এছাড়াও এটি জুমা মসজিদ। প্রতি শুক্রবার অসংখ্য ধর্মপ্রাণ মুসলিম জুমার নামাজে অংশ নিয়ে থাকে। পাশাপাশি মাহে রমজানে এখানে খতমে তারাবির নামাজও আদায় করা হয়। তিনি আরও বলেন, ২০২২ সালে প্রথম রমজানে এশা ও খতমে তারাবির নামাজ আদায়ের মধ্য দিয়ে মসজিদটিতে সালাত আদায়ের শুভ সূচনা করা হয়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দা ও ধর্মপ্রাণ পর্যটকরা এ মসজিদে সালাদ আদায় করে থাকে।

দারুস সালাম জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. জাফর আলম বলেন, ‘সেনাবাহিনীর বাঘাইহাট জোন মূলত এই মসজিদের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। তারা অর্থযোগানসহ নানারকম সহযোগিতা করে থাকে। পাশাপাশি স্থানীয় হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ী এবং আগত পর্যটকদের দান-অনুদানের টাকায় মসজিদের সার্বিক খরচ মেটানো হয়।’

তিনি আরও বলেন, উঁচু পাহাড়ের কারণে মসজিদে পানিসংকট রয়েছে। যে কারণে ওজুসহ অন্যান্য কাজে ব্যবহৃত সব পানি কিনে আনতে হয়। প্রতিদিন গড়ে ৫ হাজার লিটার পানি খরচ হয়। তবে সবার সহযোগিতার কারণে খরচ মেটাতে কোনো সমস্যা হয় না।

সূত্র: ইত্তেফাক 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়