কুমিল্লা প্রতিনিধি: জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী বলেন, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের জন্য একদল খুবই কঠোর অবস্থানে আছে। অথচ এ পিআর হলো আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করার পদ্ধতি। নির্বাচনকে বানচালের চক্রান্ত না করে দেশকে এগিয়ে নিতে সকলে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) দুপুর ৩টায় কুমিল্লার পদুয়া বাজারস্থ হোটেল নুরজাহানের হলরুমে আয়োজিত জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ কুমিল্লা জেলা ও মহানগরের সদস্য সম্মেলন ও কাউন্সিলে তিনি এসব কথা বলেন।
সরকারের এখতিয়ার নিয়ে প্রশ্ন
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী বলেন, “মাত্র তিন মাসের সীমিত মেয়াদে দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকার কীভাবে তিন বছরের জন্য জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের অফিস স্থাপনের অনুমতি দেয়? এই সরকারের সে এখতিয়ার নেই। তাদের নিরপেক্ষতা এখন প্রশ্নবিদ্ধ।”
বাংলাদেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের আঞ্চলিক অফিস স্থাপনকে দেশের জন্য এক গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই অফিস দেশের ধর্মীয় মূল্যবোধ, সামাজিক রীতিনীতি ও সংবিধানবিরোধী কর্মকাণ্ডের পথ সুগম করবে এবং এলজিবিটিকিউ এক্টিভিজম ও ধর্মবিরোধী অপচেষ্টার বৈধতা দিতে ভূমিকা রাখবে।
তিনি আরও বলেন, “আমরা স্পষ্টভাবে প্রত্যক্ষ করছি—অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিপ্লবীদের পক্ষে না দাঁড়িয়ে বরং একটি নির্দিষ্ট এজেন্ডা বাস্তবায়নের দিকেই এগোচ্ছে। এটি শহীদদের রক্তের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা। আমাদের শহীদরা মানবাধিকার অফিস প্রতিষ্ঠার জন্য রাজপথে রক্ত দেননি।”
সমকামী কর্মকাণ্ডের বিরোধিতা
নেতৃবৃন্দ জানান, সম্প্রতি লেখক ড. মোহাম্মদ সারোয়ার হোসেন ও আসিফ মাহতাব উৎস-এর বিরুদ্ধে সমকামী এক্টিভিস্ট সাফওয়ান চৌধুরী রেবিল-এর প্রকাশ্য হত্যার হুমকি অত্যন্ত উদ্বেগজনক ও নিন্দনীয়। এ ঘটনায় তার দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়।
মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী বলেন, “যারা মৌলবাদকে ইসলামের সাথে তুলনা করেন, তাদের মধ্যে দূরদৃষ্টির অভাব রয়েছে। ধর্ম কখনোই জঙ্গিবাদকে সমর্থন করে না। বরং ধর্ম শান্তি, ন্যায় ও মানবিকতার শিক্ষা দেয়। যারা ধর্মকে জঙ্গিবাদের সাথে তুলনা করে, তাদের ধর্মীয় জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা রয়েছে।”
জেলা সভাপতি মুফতি আমজাদ হোসাইন-এর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন
কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস তালুকদার, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়া, যুগ্ম মহাসচিব মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা লোকমান মাযহারী, প্রচার সম্পাদক মুফতি ইমরানুল বারী সিরাজী, সমাজসেবা সম্পাদক মাওলানা শামসুল আরেফীন খান সাদী, শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক মুফতি জাবের কাসেমী, মাওলানা শাহজালাল ভূঁইয়া, মুফতি শামসুল ইসলাম জিলানী, ছাত্র জমিয়তের কেন্দ্রীয় সভাপতি রিদওয়ান মাযহারী প্রমুখ।
অংশগ্রহণকারী অন্যান্য সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এই কাউন্সিলে আরও বক্তব্য রাখেন—
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস কুমিল্লা পূর্বের সভাপতি মাওলানা অলিউল্লাহ, খেলাফত মজলিস কুমিল্লা মহানগরের সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা জহিরুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কুমিল্লা-০৯ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী মুফতি শামসুদ্দোহা আশরাফী, এনসিপির যুগ্ম সমন্বয়ক ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ হাসান, চান্দিনা থানা জমিয়তের সভাপতি ও কুমিল্লা-৭ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী মুফতি ওয়ালীউল্লাহ, কুমিল্লা সদর জমিয়তের সংসদ সদস্য প্রার্থী মাওলানা মুতাহের, মুরাদনগর থানার সহ-সভাপতি ও সংসদ সদস্য প্রার্থী মাওলানা আবু হানীফ।
সম্মেলনে জেলা ও মহানগর জমিয়ত, যুব জমিয়ত এবং ছাত্র জমিয়তের বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।