শাহাজাদা এমরান, কুমিল্লা: কুমিল্লার তিতাস উপজেলায় সাত বছরের শিশু সায়মন হত্যার ঘটনায় আদালত দুই আসামির বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করেছে। বুধবার কুমিল্লা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (চতুর্থ আদালত) এর বিচারক সাব্বরি মাহমুদ চৌধুরী এ রায় দেন।
রায়ে আসামি বিল্লাল পাঠানকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় এবং শিশুটির চাচী শেফালী বেগমকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া আসামিদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। একইসঙ্গে লাশ গুমের অপরাধে উভয়কে আরও ৫ বছরের কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। রায় ঘোষণার সময় আসামি দুজন আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. ইকবাল হোসেন জানান, ২০২৩ সালের ১৬ আগস্ট বিকেলে শিশু সায়মন তার মায়ের সাথে বাতাকান্দি বাজারে কোমল পানীয় কিনতে যায়। ফেরার পথে সে নিখোঁজ হয়। ১৮ আগস্ট বিষয়টি তিতাস থানায় জানানো হয়। এর পরদিন সকালে বজলুর রহমানের বালুর মাঠের ঝোপ থেকে শিশুর অর্ধগলিত ও পোড়া মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পরবর্তীতে নিহত শিশুর মা খোরশেদা আক্তার চাচী শেফালী বেগমসহ অজ্ঞাত আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ তদন্তের পর জেলা গোয়েন্দা পুলিশ বিল্লাল পাঠান ও শেফালী বেগমকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়। মামলার শুনানির সময় ১৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।
রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত জানান, আসামি শেফালী বেগম ও বিল্লাল পাঠানের অবৈধ সম্পর্ক দেখে ফেলায় শিশুটিকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয় এবং পরে লাশ গুম করা হয়।
আইনজীবী ইকবাল হোসেন বলেন, “শিশু সায়মনের নির্মম হত্যাকাণ্ড সমাজে গভীর শোক ও ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। আদালত দৃষ্টান্তমূলক রায় দিয়েছেন।”
নিহত শিশুর মা খোরশেদা আক্তার জানান, “আমি আদালতের রায়ে সন্তুষ্ট। আশা করি রাষ্ট্র দ্রুত সাজা কার্যকর করবে। আমার ছেলে আর ফিরবে না, কিন্তু অন্তত অপরাধীরা শাস্তি পাবে।”