চরভদ্রাসন ও সদরপুর (ফরিদপুর) প্রতিনিধি: ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার গোপালপুর ও মৈনট ঘাট দিয়ে প্রতিদিন ঢাকাগামী হাজার হাজার যাত্রী বৈরী আবহাওয়া, শ্রাবণের উত্তাল পদ্মা নদী ও নিরাপত্তাহীন পরিবেশে চরম ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছেন। যাত্রীদের অধিকাংশই খোলা স্পিডবোট ও আনফিট লঞ্চে করে পার হচ্ছেন—যার বেশিরভাগেই নেই পর্যাপ্ত লাইফ জ্যাকেট কিংবা বয়া।
বর্ষাকালের প্রবল ঢেউয়ের মধ্যে লাইফ জ্যাকেট ছাড়া স্পিডবোটে যাত্রী পরিবহন, ও প্রয়োজনীয় সুরক্ষা উপকরণবিহীন লঞ্চে যাত্রী পারাপার এই নৌরুটে ভয়াবহ দুর্ঘটনার ঝুঁকি তৈরি করছে। অধিকাংশ স্পিডবোটে ১৮ জনের বেশি যাত্রী তোলা হচ্ছে এবং লঞ্চগুলো কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে চলছে। অথচ এসব নৌযানে পর্যাপ্ত বয়া কিংবা জরুরি সুরক্ষা ব্যবস্থা নেই।
স্থানীয়রা জানান, গোপালপুর ও মৈনট ঘাট দিয়ে দ্রুত সময়ে রাজধানী ঢাকায় যাতায়াত করায় আশপাশের তিন উপজেলা ও জেলা শহরের বহু মানুষ এই নৌরুট ব্যবহার করে। কিন্তু এই নৌপথে ব্যবহৃত বেশিরভাগ লঞ্চই আনফিট এবং স্পিডবোটগুলো খোলামেলা হওয়ায় একটু ঝড়-বাদলেই তা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে।
রবিবার গোপালপুর ঘাট দিয়ে ঢাকাগামী যাত্রী শামিম শেখ (৩৮) বলেন, “স্পিডবোটে ওঠার পর আমরা অনেক অনুরোধ করেও লাইফ জ্যাকেট পাইনি। চালক আমাদের কথায় কোনো কর্ণপাত করেননি।” আরেক যাত্রী মো. এহেসান কবির (৪০) বলেন, “মাঝ পদ্মার উত্তাল তরঙ্গে মনে হয়েছিল আমরা যেন মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছি। স্পিডবোটে থাকা সবাই ভিজে গিয়েছিল, শিশু ও মহিলারা আতঙ্কে কাঁদছিলেন।”
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনিরা খাতুন বলেন, “কয়েকদিন আগে একটি স্পিডবোট দুর্ঘটনায় পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে আমি গোপালপুর ঘাটে গিয়ে যাত্রীদের লাইফ জ্যাকেট পরে পারাপারের নির্দেশ দিয়েছিলাম। এরপরও যদি নির্দেশনা মানা না হয়ে থাকে, তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, চলতি বর্ষা মৌসুমে যাত্রী নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রতিটি স্পিডবোটে পর্যাপ্ত লাইফ জ্যাকেট এবং ফিটনেস সম্পন্ন লঞ্চে পর্যাপ্ত বয়া রাখা অত্যন্ত জরুরি। প্রশাসনের কঠোর তদারকি ছাড়া এই দুর্যোগপূর্ণ পদ্মা পাড়ি দেওয়া রীতিমতো মৃত্যুঝুঁকি।